ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মিজানুর রহমান মীরু

দূর হোক আদিম বর্বরতা

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৩ আগস্ট ২০১৫

দূর হোক  আদিম বর্বরতা

শিশুহত্যার নৃশংস-বর্বর ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটেই যাচ্ছে! থামানোর উপায় নেই, থামাবার কেউ নেই! এ কেমন দেশ আমাদের? কেমন মানুষ আমরা? রাজন হত্যার ক্লিপটি ফেসবুকে কয়েক দিন ঘুরে ফিরে এসেছে, দেখার সাহস হয়নি আমার। কী দেখব? একটা মানব সন্তানকে কতিপয় ‘পিশাচ’ মিলে ছিঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে... আমার মন হয়ত এতটা বড় নয়। ‘হরর ফিল্ম’ আমি কখনই দেখি না, বেশি দুঃখের বা ‘স্যাড স্টোরির’ ফিল্মও আমার পক্ষে বেশিদূর দেখা সম্ভব হয় না। রাজনের হাত বাঁধা কান্নার ছবিটিই আমার জন্য যথেষ্ট, এর বেশি গ্রহণ করার সাহস বা ক্ষমতা ছিল না বলে বেশি ঘাটাইনি। শুধু অন্যের স্ট্যাটাসে কমেন্ট দিয়ে মানুষ হিসেবে ‘মানবতার দাবি’ মিটিয়েছি! তারপর রাকিব, রবিউল, ঢাকা মেডিকেল এলাকায় স্যুটকেসবন্দী বালকের লাশ এবং সাড়ে তিন বছরের সুমাইয়াকে ‘জ্বিন’ তাড়ানোর অজুহাতে খুন করে তারই আপন বাবা মা!! আর কাজের ছেলে বা মেয়ে নির্যাতন তো পত্রিকায় হরহামেশাই আসে। এসব নৃশংস ঘটনা আমাদের আশপাশে বসবাসকারী ‘মানুষ’দের দ্বারাই সংঘঠিত হয়েছে বা হচ্ছে, এদের সঙ্গে আমরা বসবাস করি! আমাদের লজ্জা করে না ঐসব মানুষ নামধারী জীবের সঙ্গে সমাজবদ্ধ হয়ে থাকতে! জাতি হিসেবে আমাদের গর্বিত উচ্চারণ ‘আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি’ বীর বাঙালী আমরা! কিসের গর্ব আমাদের? যেখানে আমারই কোন প্রতিবেশী একটি নিরীহ অবুঝ শিশুকে এমন পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করে, হত্যা করে, যা কিনা মানুষের আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়!... আমরা কিভাবে এ দুঃসহ কষ্ট থেকে মুক্ত হতে পারি? এ প্রশ্ন হয়ত ‘মানুষ’ পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের। কে দেবে উত্তর? যারা দিতে পারেন, তারাই তো এ অবক্ষয়ের জন্য দায়ী! একমাত্র সামাজিক প্রতিরোধ হয়তোবা এ মুহূর্তে কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে। যদিও আমাদের আশার পিদিম ক্রমশ নিভে যাচ্ছে, তবু অদম্য সাহসী মানুষের কাছেই আমার শেষ আশা এবং ভরসা। অপরাজেয় মানুষেরাই তো মানব সভ্যতাকে ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ পথ ডিঙিয়ে এতদূর টেনে নিয়ে এসেছে। তাই নাগরিক ঐক্য জরুরী, সচেতনতা দরকার। এক্ষেত্রে সামাজিক সংগঠন, ছাত্র-শিক্ষক ও বিবেকবানদের অতিসত্বর এগিয়ে আসা উচিত। লন্ডন থেকে
×