ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গীরা ইরাকের উত্তরাঞ্চলে এ সপ্তাহের প্রথম দিকে কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্ভবত মাস্টার্ড গ্যাস ব্যবহার করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে। এই প্রথমবারের মতো আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে নিষিদ্ধ ঘোষিত এ রাসায়নিক গ্যাস রয়েছে এ জঙ্গী গ্রুপের হাতে। পেন্টাগন বলেছে, ওয়াশিংটন বিষয়টির তদন্ত করছে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও ফক্স নিউজ অনলাইনের।
এক উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা এই জার্নালকে বলেন, আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে যে, আইএস যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে তা মাস্টার্ড গ্যাস। পত্রিকাটি বলেছে, সিরিয়ায় আইএসের কাছে সম্ভবত মাস্টার্ড গ্যাস রয়েছে। সিরীয় সরকার ২০১৩ সালে স্বীকার করেছে যে, দামেস্ক বিপুল পরিমাণ ব্লিস্টার গ্যাসের অধিকারী। ওই সময় দেশটি তার রাসায়নিক মারণাস্ত্র পরিত্যাগে সম্মত হয়েছিল। পত্রিকাটি এক উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, সিরিয়ায় আইএসের কাছে সম্ভবত মাস্টার্ড গ্যাস রয়েছে। গ্যাস হামলা কোথায় বা কখন করা হয়েছে বা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেনি পত্রিকাটি। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ বলেছে, পত্রিকার রিপোর্ট সম্পর্কে তারা সচেতন রয়েছেন এবং তারা আরও তথ্য অনুসন্ধান করছেন। মুখপাত্র এ্যালিসটেয়ার র্যাস্কি এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা বিষয়টি এবং রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের সকল অভিযোগ খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। আমরা রিপোর্টগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি এবং আমরা আরও গুরুত্ব দিচ্ছি যে, অস্ত্র হিসেবে রাসায়নিক বা জীবাণু উপাদানের কোন ধরনের ব্যবহার আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আদর্শের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ।
পেন্টাগণের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে আইএস রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মকর্তারা বলেন, কুর্দি পেশমের্গা বাহিনীর বিরুদ্ধে বুধবার যে হামলা চালানো হয়েছে তা মাস্টার্ড গ্যাস সম্পৃক্ত। সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা রিপোর্ট দেখেছেন এ রকম এক কর্মকর্তা ফক্স নিউজকে বলেছেন, ওই হামলায় আহতদের ত্বকে ফোসকা পড়ে গেছে। তা দেখে মনে হয় এটা মাস্টার্ড গ্যাস হামলা।
জার্মানির সামরিক বাহিনী ওই এলাকায় কুর্দি সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার বলেছে, এলাকায় প্রায় ৬০ কুর্দি যোদ্ধা ওই হামলায় শ্বাস প্রশ্বাসজনিত কষ্টে ভুগছে। তাদের এ দুর্ভোগ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ দেয়। কিন্তু জার্মানি বা কুর্দিরা স্পষ্ট করে কিছু বলেনি যে, কী ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ায় দখলকৃত এলাকা থেকে চরমপন্থী আইএসকে উচ্ছেদে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযান এক নাটকীয় মোড় নেবে এ রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার প্রমাণিত হলে। যুক্তরাষ্ট্র ও জোটের অন্যান্য রাষ্ট্র আইএসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা জোরদার করলেও তারা স্থলে লড়াইয়ের জন্য কুর্দি, ইরাকি সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর মতো স্থানীয় বাহিনীর ওপর নির্ভর করছে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এর আগে বলেছে, আইএস ইরাকে অনেক হামলায় ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করেছে। ক্লোরিন অবশ্য নিষিদ্ধ ঘোর্ষিত কোন উপাদান নয়।