ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

আপীলে এবার পালা মীর কাশেমের, মামলা কার্যতালিকায়

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৬ আগস্ট ২০১৫

আপীলে এবার পালা মীর কাশেমের, মামলা কার্যতালিকায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর কাশেম আলীর আপীল মামলা সুপ্রীমকোর্টের কার্যতালিকায় এসেছে। আপীল বিভাগের রবিবারের নিয়মিত কার্যতালিকার দুই নম্বরে মীর কাশেমের মামলাটি আদেশের জন্য রাখা হয়েছে। রবিবারের কার্যতালিকায় বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রয়েছেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিচার বিভাগের কাজের জন্য ঢাকার বাইরে রয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি ঢাকায় ফিরবেন। সুপ্রীমকোর্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। এর আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপীল বিভাগের বেঞ্চ মীর কাশেম আলীর আপীলের মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ২৮ মে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ মামলার সার সংক্ষেপ দাখিলের জন্য রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন। আজ সোমবার মামলাটির শুনানির জন্য দিন তারিখ ঠিক করা হতে পারে। গত ২৮ মে মীর কাশেম আলীর আপীলের সার সংক্ষেপ দাখিলের জন্য আইনজীবীরা চার সপ্তাহ সময় আবেদন করে। পরে আদালত আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষকে আপীলের সার সংক্ষেপ দাখিলের জন্য আরও চার সপ্তাহের সময় দেন। সার সংক্ষেপ দাখিলে উভয়পক্ষকে এর আগেও একদফা সময় দিয়েছিল আপীল বিভাগ। ২০১৪ সালের ২ নবেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মীর কাশেমকে মৃত্যুদ-ের রায় প্রদান করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাশেম আলী খালাস চেয়ে ২০১৪ সালের ৩০ নবেম্বর সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে আপীল দায়ের করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, মীর কাশেম আলীকে বাঙালী খান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মীর কাশেম ছিলেন হত্যাকা-ের প্রতিটি ক্যাম্পের একটি অপরিহার্য অংশ। নির্যাতন ও নির্মমতার মাত্রা এতটাই ছিল যে, তাঁকে ‘বাংলার খান সাহেব’ হিসেবেও অনেকে উল্লেখ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়, ওই নির্যাতন ক্যাম্পে যাঁরা নির্যাতিত হয়েছেন এবং যাঁরা হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন, সবকিছুর পেছনেই মীর কাশেম মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। পর্যবেক্ষণে আরও উঠে আসে ‘জামায়াতে ইসলাম ও তার প্রধান গোলাম আযমের নির্দেশ অনুযায়ী ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা মীর কাশেম আলী চট্টগ্রামে আলবদর বাহিনী গঠন করে নির্যাতন ক্যাম্প স্থাপন করে সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের মানুষদের ধরে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিয়েছে যা মানবতার ইতিহাসে অত্যন্ত জঘন্যতম অপরাধ। একই সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল আরও বলেছে যে, এই বিচারের ফলে দায়মুক্তির আরেকটি ধাপ অগ্রসর হওয়া গেল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা জসিম ও জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে হত্যার দায়ে আদালত তাকে মৃত্যুদ-ের আদেশ দেন। এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে রায় প্রদান করা হয়। এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে মীর কাশেম আলীকে ৭ বছর করে এবং ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদ-ের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ থেকে মীর কাশেমকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
×