সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ব্যতিক্রমী সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরাবরই দর্শকদের ভিন্নধর্মী আনন্দ দিয়ে থাকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সেটা যদি হয় জাতীয় কোন অনুষ্ঠান তাহলে তো কথাই নেই। আয়োজনের সর্বোচ্চ চেষ্টায় থাকে ভিন্নধর্মী পরিবেশনা। তেমনি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে। ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক অনুষ্ঠান আয়োজনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় দুই শতাধিক শিশুদের নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধুর গল্প শোন’ শীর্ষক ছোটদের গল্প বলার আসর অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৫টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ১নং গ্যালারীতে অনুষ্ঠিত হয় বরেণ্য দশ শিল্পীর বঙ্গবন্ধুর ১০টি প্রতিকৃতি প্রদর্শনী, বিশিষ্ট শিল্পীদের ১০৩টি শিল্পকর্মের প্রদর্শনী, একাডেমির সংগৃহিত বঙ্গবন্ধু শীর্ষক ৫০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। একাডেমির ৪নং গ্যালারীতে চিত্রকলা ও আলোকচিত্রের ৬০টি আলোকচিত্র নিয়ে ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মোট ২২৩টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন সমরজিৎ রায় চৌধুরী, রেজাউল করিম, নাসিম আহমেদ নাদভী, নাইমা হক, নাসরিন বেগম, আতিয়া ইসলাম এ্যানি, সৈয়দ হাসান মাহমুদ, অলকেশ ঘোষ, আব্দুল মান্নান, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, দেওয়ান মিজান, নাসিমা খানম কুইনি, গুলশান হোসেন, কামালুদ্দিন, রাসেল কান্তি দাস, শাহজাহান আহমেদ বিকাশ, মো. আলপ্তগীন, কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস প্রমুখ। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক শাওকাত ফারুক প্রমুখ। প্রদর্শনীটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় ‘শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। আলোচনা শেষে সমবেত সঙ্গীত, একক সঙ্গীত, জারী গান, আবৃত্তি, নৃত্য ও ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘শোন একটি মুজিবরের’ এবং ‘দুখিনী বাংলা জননী বাংলা’ দুটি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির রেপার্টরি সঙ্গীত দল। একক সঙ্গীত ‘স্বাধীনতা স্বাধীনতা স্বাধীনতার একটি নাম’ পরিবেশন করে শিল্পী সজীব, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর বাংলার দুধের সর তারে বিনে বাঁচেনা প্রাণ এই বাংলার জারী গান’ পরিবেশন করে শিল্পী সাইদুর রহমান বয়াতী, ‘সেই রাতের কল্পকাহিনী’ আবৃত্তি পরিবেশন করে শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ‘মুজিব মানে আর কিছুনা’ গানের সঙ্গে ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে ধৃতি নর্তনালয়, ‘পাষান খুনিরে’ একক গান আবু বকর সিদ্দিক, একক গান ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর পরিবেশনায়, আবৃত্তি শিমুল মোস্তফা, ‘দ্বীপ নিভে গেছে মম গানের সাথে’ দীপা খন্দকারের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, ‘মুজিব বাইয়া যাওরে’ গান করেন আব্দুল জব্বার, ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত’ গান করে মলয় কুমার গাঙ্গুলী, পরিচয় আবৃত্তি করে মিজানুর রহমান সজল, ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ’ গানের সঙ্গে ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য করে ধৃতি নর্ত্তনালয়, একক গান করেন এস আই টুটুল, ‘বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ গানটি করেন রীনা আমিন, ‘বাঙ্গালি কি ভুলতে পারে বঙ্গবন্ধুর নাম’ এবং ‘রুখে দাঁড়াও রুখে দাঁড়াও’ দুটি সমবেত সঙ্গীত করে বহ্নিশিখা, ‘বঙ্গবন্ধু জাতির জনক’ গানের সঙ্গে দীপা খন্দকারের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য করে দিব্য এবং একক গান করে টুংটাং।
শীর্ষ সংবাদ: