ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৭ আগস্ট ২০১৫

স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ  শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্বপ্নের উড়াল সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হলো। রবিবার সকালে বিমানবন্দরের কাওলা এলাকায় এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে গত মেয়াদের মাঝামাঝি সময় উড়াল সড়কের কাজ দেয়া হয় একটি বিদেশী কোম্পানিকে। নানা জটিলতায় কয়েক বছর আটকে ছিল উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজ। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। সংযোগ সড়কসহ ৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা, যা শেষ হবে ২০১৮ সালে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ২০ মিনিট। তবে টোল ছাড়া নতুন এই উড়াল সড়ক ব্যবহার করা যাবে না। প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মহাখালী হয়ে তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-কুতুবখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মূল উড়াল সড়ক নির্মিত হবে। রাজধানীর কুড়িল, মহাখালী, মানিক মিয়া এভিনিউ, পলাশী ও মগবাজারে বাইলাইন নামবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উত্তরবঙ্গের প্রায় ২১ জেলার যাত্রী থেকে শুরু করে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সড়কপথে আসা যাত্রীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কুতুবখালী পৌঁছাতে পারবেন। এর মধ্যে যারা বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে শুরু পূর্বাঞ্চলের যাত্রী তাদের ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী উড়াল সড়কের উদ্বোধন করবেন। ওই সময়ে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। কয়েক ধাপে এর নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে প্রকল্পটি মনিটরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের জন্য ২০০ একর জমি প্রয়োজন। যার মধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন ২১ একর। প্রথম ধাপের ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৫ কোটি টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। প্রকল্পটির নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পের প্রথম ধাপের (৭ দশমিক ৫০) ইউটিলিটি লাইট ও স্থাপনা সময় অপসারণের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কাজ চলমান রয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। তবে ৩১টি র‌্যাম্প ও সংযোগ সড়কসহ এর মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই প্রকল্প তিন ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় পর্যায়ে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং শেষ পর্যায়ে মগবাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। উদ্বোধনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট প্রেমচাই কারমাসুতা প্রমুখ।
×