ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গুলিটি তলপেটে ঢুকে বের হয়ে গেছে

মাদক বিক্রেতা দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ॥ ৪ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৭ আগস্ট ২০১৫

মাদক বিক্রেতা দু’গ্রুপের সংঘর্ষ ॥ ৪ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ১৬ আগস্ট ॥ দুই মাদক বিক্রেতা-সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পেটে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হৃদয় নামের ৪ বছরের এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। নগরীর শুভপুর এলাকায় রবিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত শিশু হৃদয়কে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিকেলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেন হাসপাতালে ওই শিশুকে দেখতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য তার নানার হাতে নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং শিশুর যাবতীয় চিকিৎসা খরচ পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া হবে বলে জানান। গুলিবিদ্ধ শিশু হৃদয় নগরীর শুভপুর এলাকার আরিফ মিয়ার পুত্র। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা পূর্ব চানপুরের ভাবনা পুকুরপাড় এলাকার মিজান মিয়ার ছেলে নাজিম ও তার একজন সহযোগীকে গত ডিসেম্বরে বিদেশী অস্ত্রসহ পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের এই গ্রেফতারের নেপথ্যে একই এলাকার মাদক বিক্রেতা প্রতিপক্ষ গ্রুপের সন্ত্রাসী আনোয়ারের যোগসাজশ রয়েছে বলে নাজিম সন্দেহ করে আসছিল। এরই মধ্যে অস্ত্র মামলায় পুলিশ আদালতে নাজিমের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে। গত ৫ দিন আগে নাজিম জেলহাজত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে। ওই গ্রেফতারের জের ধরে নাজিম ও তার সহযোগীরা রবিবার সকালে আনোয়ারের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ১০-১২ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় শিশু হৃদয় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। শিশুর নানা মফিজ উদ্দিন ও মা মাহফুজা বেগম জানান, হৃদয় তাদের নিজ ঘরের সামনে দাঁড়িয়েছিল। এসময় সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত গুলি হৃদয়ের তলপেটের এক পাশ দিয়ে প্রবেশ করে অপর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় এবং তার বাঁ হাতেও গুলিবিদ্ধ হয়। তারা জানান, এসব সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। বর্তমানে ওই শিশুটি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষে দুই গ্রুপের আরও তিনজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এদিকে বিকেলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোঃ শাহ আবিদ হোসেনসহ পুলিশের কর্মকর্তারা গুলিবিদ্ধ শিশু হৃদয়কে দেখতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি ওই শিশুর চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং তার চিকিৎসার জন্য তার নানার হাতে নগদ ৫ হাজার টাকা দেন। পুলিশ সুপার বলেন, সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম অভিযান অব্যাহত রেখেছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. খোরশেদ আলম জানান, এ ঘটনায় আহত শিশুর পিতা বাদী হয়ে সন্ত্রাসী নাজিমকে আসামি করে অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। স্থানীয় এলাকার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নাজিম ও আনোয়ার উভয়েই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা। তারাসহ আরও ৩-৪ জন মাদকসম্রাটের নেতৃত্বে এ এলাকায় মাদক বিক্রিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- চলে আসছে। তাদের অত্যাচারে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। এদের মধ্যে সন্ত্রাসী নাজিম সরকারদলীয় এক নেতার ছত্রছায়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে আসছিল।
×