ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেরেনার জয়রথ থামালেন বেনকিচ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৭ আগস্ট ২০১৫

সেরেনার জয়রথ থামালেন বেনকিচ

স্পোর্টস রির্পোটার ॥ বয়সের ফ্রেমে নিজেকে বেঁধে না রেখে দুর্দান্ত গতিতে ছুটছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। চলতি মৌসুমের প্রথম তিন গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের সবই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি। গত মাসে উইম্বল্ডন শিরোপা নিজের করে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ‘সেরেনা সøাম’ জয়ের মাইলফলক গড়েন তিনি। স্টেফি গ্রাফের পর তার সামনে এখন ‘ক্যালেন্ডার সøাম’ জয়ের হাতছানি। মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের আগে তাই প্রস্তুতিটা সেরে নেয়ার জন্য টরেন্টোর রজার্স কাপে খেলছিলেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। কিন্তু সেমিফাইনালে বেলিন্ডা বেনকিচের কাছে পরাজয় মানেন তিনি। শনিবার শেষ চারের লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের বেনকিচ ৩-৬, ৭-৫ এবং ৬-৪ গেমে সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে রীতিমতো চমকেই দেন টেনিস বিশ্বকে। মাত্র ১৮ বছর বয়স বেনকিসের। টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তারকা সেরেনার বিপক্ষে জিততে তার সময় লাগে ২ ঘণ্টা ২৮ মিনিট। ১১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়ের সঙ্গে এটাই শীর্ষ বাছাই সেরেনার প্রথম পরাজয়। এর অগের হারটি ছিল ২০০৪ সালে। উইম্বল্ডনের ফাইনালে। সেবার রাশিয়ান টেনিসের প্রতিভাবান তারকা খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। শারাপোভার পর বেনকিচই আমেরিকান তারকাকে পরাজিত করে নতুন বিস্ময়ের সৃষ্টি করল। সময়ের সেরা তারকা সেরেনা উইলিয়ামসকে হারানোর অনুভূতিটা কেমন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ভাষা হারিয়ে ফেলেন এই সুইস তারকা। তার মন্তব্য হলো, ‘এই মুহূর্তে অনুভূতি প্রকাশের বর্ণনা করতে পারব না। শুধু এটুকুই বলব যে কোর্টে তখনকার পরিস্থিতিতে আমি অবিভূত হয়ে পড়েছিলাম। আমি এতটাই আনন্দিত হয়ে ছিলাম যে আগে কখনই এ রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি। এর অনুভূতিটা অবিশ্বাস্য। যা প্রকাশের কোন ভাষা জানা নেই আমার।’ বেনকিচ এই সময়ে কোর্টে বেশ ভাল খেলছেন। শেষ ২৪ ম্যাচে ২০টিতেই জয় পাওয়া পরিসংখ্যানটাই তার বড় প্রমাণ। সেইসঙ্গে দুইজন র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশে থাকা খেলোয়াড়কেও হারের স্বাদ দিয়েছেন তিনি। তারা হলেনÑ পাঁচ নাম্বারে থাকা ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। আর ছয়ে থাকা সার্বিয়ার আনা ইভানোভিচ। বেলিন্ডা বেনকিচের কাছে হার মানে চলতি মৌসুমে মাত্র দ্বিতীয় পরাজয় সেরেনা উইলিয়ামসের। এর আগে চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভার বিপক্ষে হারটিই ছিল চলতি বছরে সেরেনার একমাত্র পরাজয়। রজার্স কাপে টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই হিসেবে খেলতে নেমেছিলেন আমেরিকান টেনিসের এই কৃষ্ণকলি। আর দ্বিতীয় বাছাই ছিলেন রোমানিয়ার সিমোনা হ্যালেপ। সেমিফাইনালে সেরেনা হারলেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন দ্বিতীয় বাছাই রোমানিয়ার হ্যালেপ। শনিবার তিনি ইতালির সারা ইরানিকে পরাজিত করে রজার্স কাপের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন। ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন নাম্বারে থাকা এই রোমানিয়ান ৬-৪ এবং ৬-৪ গেমে হারান প্রতিভাবান খেলোয়াড় সারা ইরানিকে। এর ফলে রজার্স কাপের ফাইনালে সিমোনা হ্যালেপের প্রতিপক্ষ এখন বেলিন্ডা বেনকিচ। সেমিফাইনাল জিতে উচ্ছ্বসিত হ্যালেপও। তবে সারা ইরানির বিপক্ষে ম্যাচটা জিততে যে বেশ বেগ পেতে হয়েছে সেটা স্বীকার করেছেন তিনি। এ বিষয়ে হ্যালেপ বলেন, ‘আমি পুরোপুরিভাবেই শেষ। এটা ছিল খুবই কঠিন একটা ম্যাচ। সে অসাধারণ খেলেছে। প্রতি বল খেলার জন্য কোর্টের প্রায় সর্বত্রই দৌড়িয়েছে সে। তবে আমি তৃতীয় সেটে না যাওয়ার জন্য প্রায় সবকিছুই করেছি।’ সেরেনাকে হারানো বেনকিসের ফাইনালটা কেমন হবে? ভক্তদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। তবে রবিবার শিরোপা জয়ের জন্য কোর্টে নামার আগেই বেনকিচ বলে দিয়েছেন, ‘টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের তিনে অবস্থান করছেন হ্যালেপ। অবশ্যই সে বিস্ময়কর একজন খেলোয়াড়। তবে আমি ফাইনালে উঠেছি। তাছাড়া বাকি সবই আমার জন্য বোনাস। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হবে মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেন। যার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সেরেনা। রজার্স কাপের সেমিতে বেনকিসের কাছে হারার প্রভাবটা যে ফ্ল্যাশিং মিডোজেও পড়বে সেটা অনুমিতই। কেননা রজার্স কাপের আগে স্ট্যানফোর্ড ওপেনেও খেলেন নিতি। কনুইর চোটের কারণে গত সপ্তাহে স্ট্যানফোর্ড ওপেনেও খেলতে পারেননি সেরেনা উইলিয়ামস। তাই অনেকেরই ধারণা ইউএস ওপেনে এই প্রভাব কিছুটা হলেও পড়বে তার পারফর্মেন্সে।
×