নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১৬ আগস্ট ॥ জেলার নদী, খাল-বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে যত্রতত্র পাটজাগ দেয়ায় পানি পচে তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে যেমন পানি পচে পরিবেশ হচ্ছে মারাত্মক দুর্গন্ধ তেমনি বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছেরও নিধন ঘটছে। নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ পচা দুর্গন্ধময় পানি ব্যবহার করে পানিবাহিত নানারোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
কৃষকদের অসচেতনতার কারণে এমনটি ঘটলেও পাট পচানোর রিবন রেটিং পদ্ধতি ব্যবহারের ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগের তেমন প্রচারণা নেই। বিশেষ করে ইউনিয়ন পর্যাযে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে তেমন ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। ফলে শত বছরের সেই সনাতন পদ্ধতিতেই পাটজাগ দিয়ে আসছেন কৃষক। আর প্রতিটি পাট মৌসুমে পরিবেশ পড়ছে মারাত্মক বিপর্যয়ে। অথচ কোন মাথাব্যথা নেই কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিন সদর উপজেলার আউলিয়াপুর, ভুল্লী, গড়েয়া, খোচাবাড়ী, রুহিয়া, রায়পুর, আকচা, বিভিন্ন এলাকা ঘুরে টাঙ্গন ও শুক নদীর তীরে যত্রতত্রভাবে ব্যাপকভাবে দেয়া পাটজাগ দেখা গেছে। উন্মুক্ত জলাশয়ের অভাবে বছরের পর বছর ধরে পাট পচানোর উদ্দেশে নদী ও পুকুরে পাটজাগ দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমিতে। আর পাট চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জমি থেকে পাট গাছ কাটার পর তা সরাসরি পানিতে জাগ দেয়ার পরিবর্তে মেশিনের মাধ্যমে কাঁচা পাটগাছ থেকে আঁশ ছড়িয়ে তা গাঁট বেঁধে মাটিতে গর্ত করে সেগুলো রেখে কিছুটা পানি ও ইউরিয়া প্রয়োগ করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এভাবে প্রক্রিয়ায় কিছুদিন পর পাটের আঁশ পচে যাওয়ার তা ধুয়ে শুকাতে হয়। তবে কৃষকরা বলছেন তারা এ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি বিভাগের নিয়োগকৃত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ রিবন রেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের কিছুই জানাননি।