ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিক্ত বিতর্কে হিলারি-জেব বুশ

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৭ আগস্ট ২০১৫

তিক্ত বিতর্কে হিলারি-জেব বুশ

ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থানের জন্য কে দায়ী, এ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটন তার অন্যতম রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী জেব বুশের পাল্টা সমালোচনা করেছেন। মঙ্গলবার জেব বুশ অভিযোগ করেন যে, ওবামা প্রশাসন ২০১১ সালে ইরাক থেকে ১০ হাজার মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করায় ইসলামিক স্টেটের উত্থানের পথ সুগম হয়েছিল। জঙ্গী দলটি সিরিয়া ও ইরাকে ব্যাপকভাবে হিংসাত্মক তৎপরতা চালাচ্ছে। খবর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস ও ইয়াহু নিউজের। ওবামা প্রশাসনের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি বুশের ভাই সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের ওপর সেই দোষ চাপিয়ে দেন। জর্জ ডাব্লিউ বুশই ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সাহায্যে ইরাক আক্রমণ করেন এবং তিনিই মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য সাবেক ইরাকী প্রধানমন্ত্রী নূরী আল মালিকীর সঙ্গে এক চুক্তিও সই করেন। ২০০৩ সালের যুদ্ধের পর ইরাকে কয়েক বছর ধরে গোলযোগ চলতে থাকে। হিলারি বলেন, আমার কাছে এটি কিছুটা কৌতূহলজনক মনে হচ্ছে যে, জেব বুশ ইরাকে তার ভাইয়ের কার্যকলাপকে সমর্থন করতে আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। তিনি শনিবার আইওয়া অঙ্গরাজ্যের এক মেলায় প্রচার উপলক্ষে বিরতিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, যদি জেব বুশ তাই করতে চান, তাহলে তার সমগ্র ঘটনাই তুলে ধরা উচিত। আর এতে মালিকী সরকারের সঙ্গে জর্জ ডাব্লিউ বুশের সই করা চুক্তিটি অন্তর্ভুক্ত। এ চুক্তিতে ২০১১ সালের শেষ ভাগকেই ইরাক থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের সময় হিসেবে স্থির করা হয়েছিল। বুশ ২০১১ সালের মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কাজটিকে এক ‘গুরুতর ভুল’ বলে অভিহিত করেন। ফলে ইরাকে অস্থিরতা দেখা দেয় এবং আইএস জঙ্গীদের উত্থানের পথ খুলে যায়। ওবামা ও হিলারি সম্পর্কে বুশ বলেন, তারা ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করতে এতই আগ্রহী ছিলেন যে, তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। হিলারি ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ওবামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। জেব বুশ বলেন, ওবামা ও হিলারি ২০১১ সালে আমেরিকান সৈন্যরা ইরাক ছাড়ার সময় প্রায় ১০ হাজার সৈন্য সেখানে রেখে আসার সুযোগ বিনষ্ট করেছিলেন। কিন্তু হিলারি বলেন, ইরাকী বাহিনীর জন্য আমেরিকার সমর্থন অব্যাহত রাখতে দেয়ার জন্য মালিকী সরকারকে রাজি করাতে ওবামা প্রশাসন চেষ্টা করেছিল। মালিকী আমেরিকানদের উপস্থিতি অব্যাহত রাখতে দিতে চাননি বলে হিলারি মন্তব্য করেন। মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পর জঙ্গীরা ইসলামিক স্টেট (আইএস) গঠন করেন। তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকের বড় বড় শহর দখল করতে হিংসাশ্রয়ী লড়াই চালিয়ে যায়। হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে আইএসের অগ্রগতি রুখতে কী করবেন, ওই মেলাতে সাংবাদিকদের কাছে তিনি তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি এক ইরাকী নেতৃত্বাধীন মিশনই হবে। আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে বলে আমি মনে করি। আমরা আইএসকে তাদের দখল করা ভূখ- থেকে বিতাড়িত করার জন্য সমগ্র অঞ্চলকে ঐক্যবদ্ধ করতে, তাদের দাসে পরিণত করা মানুষকে, প্রধানত নারীদের উদ্ধার করতে আরও চেষ্টা চালাব। এক রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে বুশ ক্যালিফোর্নিয়াতে এক জনসমাবেশে এমন এক ইঙ্গিতও দেন যে, ইরাকে আবার আরও সৈন্য পাঠানোর প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, ঠিক এখন ইরাকে আমাদের ৩,৫০০ সৈন্য ও মেরিন রয়েছে, আরও দরকার হতে পারে। তার মন্তব্য ওয়াশিংটনে পুরনো তিক্ত বিতর্ককে উস্কে দিয়েছে এবং তা তার ভাইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে। ইরাক যুদ্ধ কেবল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেই বিতর্কের এক বিষয়ে পরিণত হয়নি, এ সংঘাতের কারণেই সম্ভবত হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের লড়াইয়ে যুদ্ধবিরোধী প্রার্থী বারাক ওবামার কাছে হেরে যান। আইএস ২০১৪ সালের জুনে ইরাকের কোন কোন অংশ দখল করে। দলটি প্রতিবেশী সিরিয়ার উল্লেখযোগ্য ভূখ-ও করায়ত্ত করে।
×