ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাই ও আনোয়ারায় ৫০০৫ একর ভূমির দলিল হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ১৯ আগস্ট ২০১৫

মীরসরাই ও আনোয়ারায়  ৫০০৫ একর ভূমির দলিল হস্তান্তর

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের মীরসরাই ও আনোয়ারায় দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শুরু হতে যাচ্ছে শীঘ্রই। ইতোমধ্যেই প্রতীকী মূল্যে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন অথরিটিকে (বেজা) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০০৫ একর জমি। এর মাধ্যমে অবসান হয়েছে বিদেশীদের বিনিয়োগে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতার। জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি পরিবারে একজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করা হয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার পরিকল্পনা। ইতোমধ্যেই অনেক দূর এগিয়েছে বেজা। বিভিন্ন দেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশীদের প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশে সতেরোটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ার পরিকল্পনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে চট্টগ্রামের মীরসরাই ও আনোয়ারার দুটি অঞ্চলকে। কারণ এখানেই রয়েছে বন্দর সুবিধা। বিদেশীদের আকর্ষণও এদিকেই। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা আর নেই। মীরসরাইয়ে ৪ হাজার ৮১৫ একর এবং আনোয়ারায় ২৯০ একর খাস জমির দলিল প্রতীকী মূল্যে বেজার কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন এ কাজ সম্পাদন করেছে। সর্বশেষ গত সোমবার আনোয়ারার জমির দলিল হস্তান্তর হয়েছে। মীরসরাইয়ের ইছাখালী চরাঞ্চলের জমি হস্তান্তরের কাজটি আরও আগেই শেষ হয়েছে। এখন অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের কাজ শুরু সময়ের ব্যাপার। তিনি জানান, চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের আগ্রহ রয়েছে বিনিয়োগের। তবে অর্থনৈতিক জোনে জায়গা কোন নির্দিষ্ট একটি দেশকে না দিয়ে বিভিন্ন দেশকে দেয়া হবে। এতে বাস্তবায়নের কাজটিও দ্রুততর হবে। চট্টগ্রামের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মোঃ রুহুল আমিন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের যে দায়িত্বটুকু ছিল তা সম্পন্ন হয়েছে। এখন বাকি কাজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের। সরকারী খাস জমি হওয়ায় এর জন্য উচ্চমূল্যে জমি ক্রয় কিংবা অধিগ্রহণ করতে হয়নি। প্রতীকী মূল্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মীরসরাই ও আনোয়ারায় ৫০০৫ একর ভূমি। এর মধ্যে আনোয়ারায় চারটি মৌজায় ২৯০ একর ভূমিতে গড়ে উঠবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর চার মৌজার প্রতিটির জন্য ১ লাখ ১ হাজার ১ টাকা হারে ব্যয় হচ্ছে ৪ লাখ ৪ হাজার ৪ টাকা। আর মীরসরাই অঞ্চলের ভূমির জন্য ব্যয় মাত্র ১ লাখ ১ হাজার ১ টাকা। মীরসরাই উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইছাখালির চরাঞ্চলে প্রায় ১২ হাজার একর খাস জমি রয়েছে। বন্দর সুবিধার কারণে মীরসরাইয়ের এ এলাকায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জরিপের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয় ৮ হাজার ৫৫২ একর জমি। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৪ হাজার ৮শ’ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে এখানে পর্যাপ্ত খাস জমি থাকায় পরবর্তী সময়ে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল আরও সম্প্রসারিত করার সুযোগ রয়েছে।
×