ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় সৈয়দ আশরাফ

বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলবে এমন শক্তি নেই

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৯ আগস্ট ২০১৫

বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলবে এমন শক্তি নেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি গোষ্ঠী বা দলের নন, তিনি সর্বজনীন। খুনীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু দিনে দিনে বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলবে এমন শক্তি পৃথিবীতে নেই। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বাংলা একাডেমি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন এবং বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলা একাডেমি আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানে সৈয়দ আশরাফ বলেন, শোক দিবসের আগে সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী সবার প্রতি আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম, এবারে শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য। আমরা যতটা না আশা করেছিলাম তার চেয়েও এবারে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখেছি মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন। তিনি এখন আর কোন দলে বা গোষ্ঠীতে নেই। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে রেকর্ড সংখ্যক দর্শক উপস্থিত ছিলেন। শুধু ঢাকায় নয়, সারাদেশে মানুষ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন করে জানতে শুরু করেছে। সভাপতির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন ইতিহাসের স্রষ্টা। এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কর্মপরিচয় উঠে এসেছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি এ এইচ আসলাম সানি প্রমুখ। পরে ড. মুহাম্মদ এনামুল হক ভবনে নভেরা ভাস্কর্য ঘুরে দেখেন সৈয়দ আশরাফ। বিকেলে শ্রমিক লীগের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কে বলে বঙ্গবন্ধু নেই? এখনও তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। তিনি এখনও জীবিত। আমাদের হৃদয় থেকে তিনি মরেননি। বাংলাদেশের মতো যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের ঘটনা বিশ্বে বিরল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে পাকিস্তানী বাহিনীকে পরাজিত করে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হয়েছে। দেশ পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর হাত শক্তিশালী করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাব যেভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, একইভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শেখ হাসিনার দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নেয়া আর আমাদের সকলের দায়িত্ব তাঁকে সহযোগিতা করা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাঁর জীবদ্দশায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা দেখতে পারব বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শ্রমিক লীগের ফজলুল হক মন্টু, সিরাজুল ইসলামসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদনের কারখানা- ওবায়দুল কাদের ॥ ছাত্র রাজনীতিতে সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক নেতাসহ সকল ছাত্র নেতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার রাজধানীর বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজে শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচন সভার আয়োজন করে বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগ। আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। দেশের উন্নয়নমূলক কাজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতির সঙ্গে পারা যায়নি এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার গতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সবাই কাজ করলে দেশের অগ্রগতি আরও দ্রুত সম্ভব হতো। কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আমি হিমালয় দেখিনি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি। শেখ মুজিব ছিলেন হিমালয়ের মতো বিশাল। বিভিন্ন অনুষ্ঠান বা দিবস উপলক্ষে বিলবোর্ড লাগানো নেতাদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সময়ের নতুন উপদ্রবের নাম হলো বিলবোর্ড। বিলবোর্ডে বঙ্গবন্ধুর কোন রকম একটা ছবি দিয়ে নিজের ছবি দেয় কয়েকগুণ বড়। অনেক নেতাকে আমরা চিনিও না। অনেক নতুন মুখ আছে। বিলবোর্ড দেখলে মনে হয়, বাংলাদেশ এখন নেতা উৎপাদনের কারখানা। আসলে তারা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসে না। বঙ্গবন্ধুর উসিলায় আত্মপ্রচার করে। ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের অপকর্ম বঙ্গবন্ধুকে বড় করবে না। তোমাদের অপকর্ম বঙ্গবন্ধুকে খাটো করবে। আর এ বিলবোর্ডের মূল লক্ষ্য হলো আত্মপ্রচার। বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করার কৌশল। এসব বন্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগের সমালোচনা করে মন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্রলীগের মূলমন্ত্র কারও কণ্ঠে উচ্চারিত হয় না। ছাত্ররা বক্তব্য শুরু করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি দিয়ে। তারপর তারা জাতীয় রাজনীতির কথা বলে। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি, ছাত্রদের সমস্যা নিয়ে কিছু বলে না। তিনি বলেন, আমি বার বার ছাত্রলীগকে এই কথাগুলো বলেছি। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাদের কান পর্যন্ত কথাগুলো গেলেও চেতনায় যায় না। কেন ডাকসু নির্বাচন বন্ধ? এত বছরে ৪৮ জন ভিপি-জিএস হতো। ডাকসুসহ সারা বাংলাদেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে এমনটা হতো না। ছাত্র রাজনীতিতে যে অসুস্থ ধারা তা পরিবর্তন হয়ে সুস্থতা ফিরে আসত। সুবাতাস বইত। বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার শিউলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মাহবুবা রহমান, উপাধ্যক্ষ এম মাকসুদা আক্তার, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ। বিএনপির আউট সোর্সিং সন্ত্রাসী রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে- প্রতিমন্ত্রী চুমকি ॥ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারতে বিএনপি আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসী নিয়োগ করেছিল। দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে বিএনপির আউট সোর্সিং সন্ত্রাসী রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে বিএনপির অযৌক্তিক আন্দোলনে কর্মীদের সম্পৃক্ততা ছিল না। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হমকি-ধামকিতে কর্মীরা মাঠে নামেনি। আর এখন ব্যর্থ হয়ে খালেদা জিয়া জাতীয় শোক দিবসে ভুল জন্মদিনের কেক কেটে জাতির বুকে ছুরি চালিয়েছেন। এ কারণে বিএনপির ধ্বংস অনিবার্য। শামসুন নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশিতা ইকবাল নদীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি এমপি, হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, আবিদ আল হাসান, কাজী মোতাহার হোসেন প্রিন্স, রওশন আরা নিতুল প্রমুখ।
×