ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সিসিটিভিতে ধরা পড়া ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২০ আগস্ট ২০১৫

সিসিটিভিতে ধরা পড়া ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে

থাই কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার বলেছেন, তারা আগের রাতে ব্যাঙ্ককের একটি হিন্দু মন্দিরে বোমা হামলার পূর্বে ভিডিওতে ধরা পড়া এক ব্যক্তিকে খুঁজছে। ওই হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত শতাধিক আহত হয়, যাদের অনেকেই পর্যটক। সিসিটিভির নিরাপত্তা ফুটেজে দেখা যায়, ইরাওয়ান মন্দিরের সামনে ওই ব্যক্তি তার ব্যাকপ্যাক (পিঠে ঝুলানো ব্যাগ) খুলে একটি বেঞ্চের নিচে রাখছে। সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ওই ফুটেজ ও অন্যান্য ছবিতে দেখা যায় যে, লোকটি একটি উজ্জ্বল হলুদ রঙের শার্ট পরিহিত ছিল। থাই জাতীয় পুলিশের একজন মুখপাত্র লে. জেনারেল প্রায়ুত থার্বনসিরি বলেন, ‘এটি মোটামুটি পরিষ্কার যে, ওই ব্যক্তিই ঘটনা ঘটিয়েছে।’ পুলিশ ওই এলাকার ১২টিরও বেশি নিরাপত্তা ক্যামেরার ছবি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ব্যক্তিটিকে একজন সম্ভাব্য সন্দেহভাজন বলে বর্ণনা করেছে। থাইল্যান্ডের সামরিক জান্তার প্রধান প্রায়ুত চাও-ওচা বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনা দেশের অভ্যন্তরের বা বাইরের কোন গোষ্ঠীর কাজ হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের কিছু ব্যক্তিবিশেষ বা জনগোষ্ঠী দেশের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করে। ‘এ ধরনের তৎপরতায় নিযুক্ত ব্যক্তিরা সম্ভবত রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন এবং দেশের অর্থনীতি ও পর্যটন খাতকে ধ্বংস করতে চায়।’ জেনারেল প্রায়ুত বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি মোটরসাইকেল ট্যাক্সি করে চলে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। তিনি আরও বলেন, তদন্তকারীরা মনে করছেন বোমার মাল-মসলা থাইল্যান্ডেই কিনে বোমা তৈরি করা হয়েছিল। জেনারেল প্রায়ুত বলেন, ‘বোমা হামলাকারী একজন পেশাদার ব্যক্তি।’ বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে পাঁচজন থাই, দু’জন মালয়েশীয়, দুজন চীনের মূল ভূখ-ের, দু’জন হংকংয়ের চীনা নাগরিক, একজন ব্রিটিশ এবং একজন সিঙ্গাপুরের। পুলিশ বলছে, নিহতদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা দুরূহ, কারণ প্রচ- বিস্ফোরণে নিহতদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। সোমবারের হামলার পর নগরীতে আতঙ্কের রেশ না কাটতেই মঙ্গলবার সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাঙ্কক সেতুর নিচে আরেকটি বিস্ফোরণের ছবি প্রচারিত হয়। এতে হতাহতের কোন খবর না পাওয়া গেলেও কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা মন্দিরের বিস্ফোরণের সঙ্গে এর সম্ভাব্য যোগসূত্র অনুসন্ধান করে দেখছে। হামলার সন্দেহভাজনের জন্য তল্লাশি অভিযান দেশের দূষিত রাজনৈতিক বিভাজনের জন্য আংশিক কলুষিত হয়ে পড়েছে। দশকব্যাপী রাজনৈতিক গোলযোগে থাইল্যান্ডের সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কোন্দলে দলাদলিতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় হামলার নেপথ্যে যে তত্ত্ব বা তথ্যই কর্মকর্তারা হাজির করবেন সেটিকে সংশয়ের দৃষ্টিতে দেখা হবে। সোমবার সন্ধ্যায় বোমা হামলা ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর গতবছর ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার সিনিয়র কর্মকর্তারা দক্ষিণ থাইল্যান্ডের অব্যাহত মুসলিম বিদ্রোহের সঙ্গে এর কোন যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। থাই সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল উদমদেজ সিতাবুতর বলেন, বোমার ধরন এবং বিস্ফোরণ ঘটানোর পদ্ধতির সঙ্গে ওই সংঘাতের কোন সংযোগ থাকার সম্ভাবনা নেই। কর্মকর্তারা জোরালোভাবে ইঙ্গিত করেছেন যে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং থাইল্যান্ডের বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকসিন সিনাওয়াত্রাপন্থী লোকজন সম্ভবত এই হামলার নেপথ্যে আছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের রাজনীতি আরও বেশি করে অচল হয়ে পড়ায় হামলায় দায়ী মহলের ব্যাপারে দ্রুত জোর দিয়ে বক্তব্য রাখার মধ্যে অপরাধীদের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করার এক ধরনের ধাঁচ লক্ষ্যণীয়। আইনী বিশ্লেষকরা বলছেন, থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থার বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক লড়াইয়ের বলিতে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ কমিশনের এশিয়া প্যাসিফিক অপারেশন্সের পরিচালক স্যাম জারিফি বলেন, থাইল্যান্ডের প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণভাবে দলীয়করণ করে ফেলায় বিরাট আস্থাহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। Ñইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×