স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া ও মাগুরায় ছাত্রলীগের নেতা মেহেদী হাসান বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। ক্রসফায়ারে তাদের মৃত্যু হয়নি। এদিকে হাজারীবাগে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈনুল ইসলামকে বদলি করে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে পুলিশ পরিদর্শক আলিমুজ্জামানকে। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পাঁচতারকা সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। যদিও হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে আরজু বন্দুকযুদ্ধে নয়, র্যাবের হত্যাকা-ের শিকার হয়েছে দাবি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও র্যাবের তরফ থেকেও হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের এমন দাবি ভিত্তিহীন বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কোন অপরাধীকে ছাড়া দেয়া হবে না। রাজধানীর হাজারীবাগ ও মাগুরায় ছাত্রলীগের নেতা নিহতের ঘটনা ‘ক্রসফায়ার’ ছিল না। এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তারা নিহত হয়েছেন। অপরাধী ছাত্রলীগ, যুবলীগ যেই হোক না কেন, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অপরাধী অপরাধীই। আমরা সব অপরাধীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরু করেছি। অপরাধীর কোন ছাড় নেই।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর হাজারীবাগের গণকটুলীর বাসা থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপ চুরির অভিযোগে বাবুল মিয়ার ছোট ছেলে রাজাকে ডেকে নিয়ে মারধর করে হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া ও তার সহযোগীরা। মারধরের পর তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়। দ্রুত রাজাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে তার মৃত্যু হয়। রাজার বোন রেশমা আক্তার শাবানা গত ১৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টায় হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি আরজুকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের বিরুদ্ধে হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামি মনির (৩৫), সাগর (২২) ও সুজনকে (২৫) গ্রেফতার করে।
রাজার বোন রেশমা বেগমের দাবি, তার ভাইকে আটকের পর বেধড়ক পেটান আরজু। তিনি নিজে মাফ চেয়ে ছেড়ে দিতে বললেও রাজাকে ছেড়ে দেয়নি।
র্যাব জানায়, গত ১৭ আগস্ট রাতে আরজুকে আটকের পর তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযানে গেলে আরজুর সহযোগীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র্যাবও গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধে আরজু মিয়া (২৮) মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, আরজুকে র্যাব ধরে নিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরজু নিহত হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হামিদ সাজু, থানার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াফেজ আহমেদ সামি ও আরজুর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, হাজারীবাগ এলাকা বিএনপির ঘাঁটি। গত নির্বাচনের পর এলাকায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় একটি পক্ষ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে উদীয়মান ছাত্রনেতা আরজুকে র্যাব দিয়ে হত্যা করিয়েছে।