ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকল্পের আওতায় ৯ জেলা

ইলিশ নিয়ে প্রথমবারের মতো গবেষণা শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ আগস্ট ২০১৫

ইলিশ নিয়ে প্রথমবারের মতো গবেষণা শুরু

শংকর লাল দাশ, গলাচিপা ॥ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পটুয়াখালীসহ দেশের নয়টি উপকূলীয় জেলায় মৎস্য অধিদফতর ‘ইকো ফিশ-বিডি’ নামে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। মৎস্য অধিদফতরের পাশাপাশি আরেক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশ ও শীর্ষস্থানীয় তিনটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো ইলিশের প্রজনন ও বংশবিস্তার নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করা হবে। এছাড়া, প্রকল্পের আওতায় জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সফল বাস্তবায়ন হলে উপকূলীয় নদ-নদীসহ পদ্মা-মেঘনা অববাহিকায় ইলিশ সম্পদ সংরক্ষিত হবে। ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে। জলজ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হবে। জাটকানির্ভর ক্ষুদ্র জেলেরা বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের আয় বাড়ানোর সুযোগ পাবে। প্রকল্পের আওতাধীন উপকূলীয় নয়টি জেলা হচ্ছে-লক্ষ্মীপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী। মৎস্য অধিদফতরের তদারকিতে এ বছরের ১ মার্চ থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘ইউএসএআইডি’ আর্থিক সহায়তায় পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। ওয়ার্ল্ডফিশ প্রকল্পে কারিগরি সহয়তাসহ মাঠপর্যায়েও কাজ করছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় তিনটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার কোডেক পাঁচটি জেলায়, কোস্টট্রাস্ট একটি জেলায় এবং সিএনআরএস তিনটি জেলায় সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। ইলিশের প্রজনন, বংশবিস্তার, আবাসস্থল, বিচরণক্ষেত্র ও খাদ্যগ্রহণসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞানীরা। ওয়ার্ল্ডফিশ সূত্রে জানা গেছে, ইকোফিশ বিডি প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেক জেলায় একজন মৎস্য বিজ্ঞানী ও তিন সহযোগী বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে একটি টিম প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করবে। এ টিম ইলিশ ছাড়াও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার রোধে করণীয় নির্ধারণ করবে। উপকূলে চিংড়ি রেণু ও অন্যান্য মাছ ধরার জন্য যেসব ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহৃত হয়, তাতে ইলিশের পাশাপাশি অন্য মাছ, শুশুক, বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তা রোধেও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিজ্ঞানীদের এই টিমে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. প্রফেসার আবদুল ওহাব। সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, দেশে এটাই প্রথমবারের মতো ইলিশ নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ইলিশ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা যাবে।
×