ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ওভাল টেস্ট

ক্লার্কের অবসরের সঙ্গী রজার্সও

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২০ আগস্ট ২০১৫

ক্লার্কের অবসরের সঙ্গী রজার্সও

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক সিরিজে তিন অস্ট্রেলিয়ানের অবসর ঘটতে যাচ্ছে! ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ শুরুর আগেই ক্যারিয়ারের ইতি টানেন অলরাউন্ডার রায়্যান হ্যারিস। এক ম্যাচ বাকি থাকতে এ্যাশেজ খোয়ানোর পর সমালোচনার মুখে একই পথে হাঁটেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। ক্লার্কের মতো রজার্সও ওভালে এ্যাশেজের শেষ টেস্ট খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন। ‘ওভালের শেষ টেস্টই হতে যাচ্ছে আমার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অসাধারণ কয়েকটি বছর কাটালাম। বেশ কতগুলো বিশেষ মুহূর্তের অংশীদার হতে পেরেছিলাম, যা পুরোপুরি উপভোগ করেছি। তবে সবকিছুরই শেষ আছে। বয়স হয়েছে, তরুণদের সুযোগ করে দিতে সরে যাওয়ার এটাই সময়’Ñ বলেন ৩১ আগস্ট ৩৯ বছরে পা রাখতে যাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। রজার্স যেন ক্রিকেটের ভাগ্যবিড়ম্বিত এক নাম। বর্তমান বয়স ৩৭ বছর ৩৫২ দিন (মঙ্গলবার)। ২০০৮ সালে অভিষেকের পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে অপেক্ষা করতে হয়েছে পাঁচ-পাঁচটি বছর! ২০১৩ সালে এসে ৩৫ বছর বয়সে পুনরায় দলে ডাক পেয়েছেন! তুমুল প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও দলে অচ্ছুত হওয়ায় অনেকটা দুঃখে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান রজার্স। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৪ হাজারের ওপরে রান করেন। ইংলিশ কাউন্টিতে দুরন্ত সাফল্যই পুনরায় জাতীয় দলের দরজা খুল দেয়। অনেকটা ইংলিশ কন্ডিশনের কথা চিন্তা করে ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০১৩ এ্যাশেজে প্রত্যাবর্তন ঘটে রজার্সের। সেই থেকে গত দুই বছরে ওপেনিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়ে চলেছেন। বয়স হয়েছে, তার ওপর কানে বলের আঘাত লাগায় মনের জোরও হয়ত কমে গেছে। তাই ফর্মের তুঙ্গে থাকলেও অবসরের সিদ্ধান্ত। চলতি এ্যাশেজে এ পর্যন্ত লর্ডসের একমাত্র ম্যাচটিতে জয়ের দেখা পায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচে ১৭৩ ও অপরাজিত ৪৯ রানের দুটি ইনিংস খেলে সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন রজার্স। দ্বিতীয় ইনিংসেই প্রতিপক্ষ পেসার জেমস এ্যান্ডারসনের বল লাগে তার হেলমেটে। মেডিক্যাল টেস্টে দেখা যায়, তার কানের ভেতরে আঘাত লেগেছে। সব মিলিয়ে বিদায়ের সিদ্ধান্ত। মাত্র ২৫ টেস্টে শেষ হচ্ছে ক্যারিয়ার। ৪৩ গড়ে মোট রান ১৯৭২। সেঞ্চুরি ৫ ও হাফ সেঞ্চুরি ১৪টি। ক্লার্কের গল্পটা ভিন্ন। সাড়ে চার মাস আগে বিশ্বকাপ জয়ে নায়কের অসনে বসেন তিনি। কে ভেবেছিল এত দ্রুত বদলে যাবে দৃশ্যপট। এজবাস্টনে তৃতীয় টেস্টে হারের পর কঠোর সমালোচনার মুখেও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, সরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু ট্রেন্ট ব্রিজের চতুর্থ টেস্ট হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ খোয়ায় অসিরা। অচমকা অবসরের ঘোষণা দেন ক্লার্ক। ‘এভাবে চলে যেতে চাইনি, এ্যাশেজে, এমনকি জাতীয় দলের হয়ে ব্যক্তিগতভাবে গত ১২টি মাস ছিল খুবই হতাশার। ড্রেসিং রুমে কাউকে আর কষ্ট দিতে চাই না। দুই দিন অনেক ভেবেছি, মনে হয়েছে বিদায় বলার এটাই সময়’Ñ বলেন অসি অধিনায়ক। ক্লার্কের নেতৃত্বে ৪৬ টেস্টের ২৩টিতে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া, হার ১৬টিতে। আর ৭৪ ওয়ানডের ৫০টিতে জয়, হার ২১। ১৩টি টেস্ট সিরিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে জিতিয়েছেন ৮টিতে। চতুর্থ অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক হিসেবে উপহার দিয়েছেন বিশ্বকাপও। ২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার পর টেস্টে ১১৪ ম্যাচে প্রায় ৫০ গড়ে করেছেন ৮,৬২৮ রান। সেঞ্চুরি ২৮টি। ২৪৫ ওয়ানডেতে সংগ্রহ ৭,৯৮১। সেঞ্চুরি ৮টি।
×