ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দফায় দফায় বৈঠক করে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দল ফিরে গেছে ;###;মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

ঝুলে যাচ্ছে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ ॥ এ মাসেই প্রতিনিধি দল যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২১ আগস্ট ২০১৫

ঝুলে যাচ্ছে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ ॥ এ মাসেই প্রতিনিধি দল যাচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিষয়টি অমীমাংসিত রেখেই দেশে ফিরে গেছে প্রতিনিধিদল। ৭ দিনের সফরে আসা মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিএমইটি ও বায়রার সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কর্মী নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে তারা দেশে গিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা বলবেনÑ এমন তথ্য দিয়ে গত ১৭ আগস্ট দেশে ফিরে যান। কর্মী নিয়োগের বিষয়ে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ মাসেই বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি জানিয়েছেন, মালয়েশিয়া প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় কর্মী নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক কোন কর্মী জনশক্তি রফতানিকারকদের কাছে টাকা না দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মী নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত ১০ আগস্ট মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ওহাব বিন মোহাম্মদ ইয়াসিনের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। মালয়েশিয়ার এই প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পদমর্যাদার আন্ডার সেক্রেটারি শাহিল ইসলাম, জামিরি বিন মাত জায়িন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জুলকিফিল ইয়াকুব। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার শহীদুল ইসলামও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ঢাকায় এসেছিলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যে সব কর্মী মালয়েশিয়া নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্য থেকেই মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ হবে। নতুন করে যারা নিবন্ধন করবেন, তারাও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় আরও একটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। তা হলো কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কম মূল্য নির্ধারণ করা হবে। যদিও বৈঠকে কর্মী পাঠানোর খরচ নির্ধারণ হয়নি। সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ কর্মীর চাহিদা আছে। চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকেই দেশটি কর্মী নিয়োগ দেবে বেশি। এ জন্য সরকারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো উন্নততর করা হচ্ছে। দক্ষ কর্মী তৈরি করতে পারলে কর্মী নিয়োগে সুবিধা হবে। কৃষি, কারখানা, গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন খাতে কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। এই কর্মীদের সর্বনিম্ন বেতন হবে ৯শ’ রিংগিত। বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকার কিছু বেশি। ‘ওভার টাইমও’ পাবেন তারা। তবে মন্ত্রী একটা আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নেয়ার বিষয়ে সেখানকার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন গোষ্ঠী তৎপর হয়ে উঠেছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশীসহ মালয়েশিয়ার লোক মিলে বেশকিছু চক্র গড়ে তুলেছে। ওই চক্রগুলো আবার বাংলাদেশে তাদের এজেন্ট নিয়োগ করেছে। বেশ কিছু জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিনিধি মালয়েশিয়ায় স্থায়ীভাবে রেখেছেন। তারা অনেকটা বাজারটির নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগের ঘোষণার পর পরই এই দালাল চক্র স্বক্রিয় হয়ে উঠেছে। কোন দালাল চক্রকে বাজার নষ্ট করতে দেয়া হবে না। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হলেও কর্মী নিয়োগের বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কোন ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় কর্মকর্তারা হতাশ হয়েছেন। এখন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া গিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
×