স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই বছর আগে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ১০ টেস্ট খেলে ৩৮ উইকেট নেয়া সোহাগ গাজী আর ২০ ওয়ানডেতে ২২ উইকেট নেয়া এ স্পিনার সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন একই বছর আগস্টে। এরপর থেকেই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়াতে পারেননি। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যখন শনিবার শুরু হতে যাওয়া ‘এলিট প্লেয়ারস কন্ডিশনিং ক্যাম্পে’ ২৭ ক্রিকেটারকে ডেকেছে, সেখানে সোহাগও আছেন। এ ক্যাম্পে ডাক পেয়ে দারুণ খুশিও হয়েছেন তিনি। সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করার জেদও আছে সোহাগের মধ্যে। তাই বলেছেন, ‘প্রমাণ করব শেষ হয়ে যাইনি।’
আগে কোন পনি (প্লেয়ারস অব ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট) বা অন্য কোন ক্যাম্পে ছিলেন না। প্রশ্নটি উঠতেই সোহাগ জানালেন, ‘আগের কোন ক্যাম্পে ছিলাম না। ফলে খুব খারাপ লাগছিল। এখন গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্যাম্পে ডাক পেয়ে ভাল লাগছে। কিছুদিন আগে কথা উঠেছিল যে, আমার ফিটনেস যথাযথ নেই। এটা তাই আমার জন্য খুব কাজে দেবে বলে মনে করছি। এখানে থেকে নিজের ফিটনেস লেভেল আরও উন্নত করতে চাই।’
দলের বাইরে থেকে ঠিক কী কাজ করেছেন, যা আপনাকে নতুন ক্যাম্পে বিবেচিত করল? এ স্পিনার জানালেন, ‘আমি একজন বোলার। বোলিংয়েই আমার সমস্যা ছিল। জাতীয় দলের বাইরে থাকা অবস্থায় বোলিংটাই করতাম। নিজেকে ঝালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতাম। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাটিংও করেছি।’
এতদিন দল খুব ভাল ক্রিকেট খেলেছে, কিন্তু আপনি ছিলেন না। এখন আবার দলে নিজের জায়গা করে নেয়ার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী? সোহাগ বললেন, ‘ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন এতটাই ভাল খেলছে যে, দলে খুব বেশি পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা কম। আমি চেষ্টা করব, বাইরে থেকে নিজেকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার। আমি যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি, একটু হলেও বুঝি। আমি সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করব। এই ক্যাম্প আমাকে অনেক সহায়তা করবে। বাংলাদেশ এখন এতটাই ভাল ক্রিকেট খেলছে যে, দলে জায়গা পাওয়ার প্রতিযোগিতাটা অনেক কঠিন। দল এখন আর কোন নির্দিষ্ট একজনের ওপর ভরসা করে না। সবাই দারুণ পারফর্ম করছে। এখন যত হার্ডওয়ার্ক করতে পারব, দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে।’
দলের বাইরে থাকা, বোলিংয়ে নিষিদ্ধ হওয়া এবং আবার সুযোগের জন্য লড়াই করা; এই পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জটা কিভাবে সামলেছেন? সোহাগ গাজী জানিয়েছেন, ‘আসলে যখন থেকে ক্রিকেট খেলাটা শুরু করেছি, তখন থেকেই চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে। জাতীয় দলে যখন পারফর্ম করেছি। এরপর বাদ পড়ে ১০-১১ মাস পর টি২০ ক্রিকেটে ফেরাটা কঠিন। বিষয়টা খুবই কঠিন। বোলিংয়ে নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে খুব কষ্ট হয়েছে, হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। বোলিংয়ে কিছুটা পরিবর্তন আমাকে নার্ভাস করে দিয়েছিল। তারপরও পুরনো ছন্দটা খুঁজে পাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। অনেকটা সফলও হয়েছি।‘
ফিটনেসের সমস্যাটা আপনি কি অনুভব করেছেন? সোহাগ একটু ঘুরিয়ে বললেন, ‘নির্বাচকরা যেহেতু বলেছেন যে, আপনার ফিটনেস সমস্যা, সেহেতু সমস্যা নিশ্চয়ই আছে। আমি এই ক্যাম্পে সুযোগ পাওয়াটা কাজে লাগাব। প্রমাণ করব যে, আমি এখনও ফিট আছি। শেষ হয়ে যাইনি।’
আপাতত লক্ষ্যটা কী? সোহাগ লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে বললেন, ‘প্রাথমিক লক্ষ্য নিজেকে ফিট করা। তারপর ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলাটা আমার জন্য খুব প্রয়োজন। জাতীয় দল বা ‘এ’ দলে সুযোগ পাওয়া আমার হাতে নয়। এটা নির্বাচকরা দেখবেন। আমি যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলতে পারি, তাহলে তারা যদি মনে করেন, আমি জাতীয় দল বা ‘এ’ দলের জন্য প্রস্তুত; তারপর দেখা যাবে।’