ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে সাড়ম্বরে ইন্টারনেট সপ্তাহ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২২ আগস্ট ২০১৫

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে সাড়ম্বরে ইন্টারনেট সপ্তাহ

ফিরোজ মান্না ॥ গ্রামাঞ্চলের মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বড় কয়েকটি শহর ও উপজেলায় ‘ইন্টারনেট উইক’ বা ইন্টারনেট সপ্তাহ নামে একটি সচেতনতামূলক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। আগামী ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কর্মসূচী চলবে। এতে ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে তিনটি বড় ইন্টারনেট এক্সপোসহ দেশের ৪৮৭ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে ইন্টারনেট উইক। দেশের আর্থ সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের দক্ষতা কাজে লাগানো হবে। একই সঙ্গে দেশের ১৬ কোটি মানুষ এবং বিশ্বজুড়ে থাকা সব বাংলাদেশীকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগও রয়েছে। বিদেশে যারা চাকরি নিয়ে গেছেন, তারা যেন কম খরচে কথা বা যোগাযোগ করতে পারেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ জানিয়েছে, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এবং গ্রামীণফোনকে এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখা হয়েছে। এমন একটি কর্মসূচী বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে আরও ধারণা পাবেন। এটা মাথায় রেখে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগামীতে ইন্টারনেট ব্যবহার হবে মানুষের ষষ্ঠ মৌলিক অধিকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি প্রয়োজন ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি। সরকার গোটা দেশকেই ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় আনতে চায়। ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি এবং শতভাগ মানুষকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশ্বে একসঙ্গে প্রায় ৪৮৭ জায়গায় ইন্টারনেট মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। এতে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে অনন্য ভূমিকা রাখবে। আগামী ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বনানী মাঠ, ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর নানকিন বাজার ও ১১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সিটি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইন্টারনেট উইক আয়োজন করা হবে। ইন্টারনেটের প্রচার, প্রসার ও ইন্টারনেটের সুফলগুলো সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ৪৮৭ উপজেলায় একটি করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে এ উৎসব হবে। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রায় ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার এবং গণমাধ্যমে সাতটি পলিসি বৈঠকের আয়োজন করা হবে। তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রতিনিয়ত উন্নত প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে আমাদেরও নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার ও ব্যবহারে অভ্যস্ত হতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে সরকার সার্বিক উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষা খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ছাত্রছাত্রীদের তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তুলবে। তথ্যপ্রযুক্তি এখন জনগণের ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা পৌঁছে গেছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে। এর ফলে নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বস্তি এসেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য দরকার মানব সম্পদ উন্নয়ন। আমাদের আছে অফুরন্ত তারুণ্যের শক্তি। আমরা এক লাখ তরুণকে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ হিসেবে গড়ে তুলতে ট্রেনিং কর্মসূচী প্রহণ করা হয়েছে। দেশের ১১৮ সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিটি বিভাগে বিশেষায়িত কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতিতে সবার অংশগ্রহণ খুবই জরুরী। সবাই মিলে কাজ করলেই তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পাশাপাশি এ খাতে কর্মসংস্থান ও নতুন নতুন উদ্ভাবন সম্ভব হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার ও তথ্যপ্রযুক্তিকে ছড়িয়ে দিতে শুধু আইসিটি বিভাগ একা সবকিছু সম্পাদন করতে পারবে না। প্রতি বছর ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঠিক ব্যবহার বাড়াতে হবে। উন্নত ও আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য দ্রুততম সময়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার সবার মাঝে পৌঁছে দিতে ইন্টারনেট সপ্তাহের আয়োজন করা হচ্ছে। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি সারাবিশ্বে শিক্ষাদানের সনাতন পদ্ধতিতে অনেক বড় পরিবর্তন এনেছে। এর ছোঁয়া বাংলাদেশেও লেগেছে। তবে তা খুবই বিচ্ছিন্নভাবে চলছে। দেশে ই-শিক্ষার জন্য একটি প্লাটফর্ম গড়ে তোলা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিকাশে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আইসিটি খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় আইসিটি পার্ক স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে আইসিটি মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছেন সিলেটে ইলেক্ট্রনিক সিটি, মহাখালীতে আইটি ভিলেজ, রাজশাহী আইটি ভিলেজ, জনতা টাওয়ার সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক, যশোর সফটওয়ার পার্ক, নাটোর ফ্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট ও বিভাগীয় পর্যায়ে আইটি ভিলেজ লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হবে।
×