ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় খালেদার ২ আবেদন খারিজ

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৪ আগস্ট ২০১৫

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় খালেদার ২ আবেদন খারিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বড়পুকুরিয়া খনি দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের নথি এবং দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে খালেদা জিয়ার করা দুটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার কার্যক্রম ৩০ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করে তাকে ওই সময়ের মধ্যে নিয়মিত ‘লিভ টু আপীল’ করতে বলেছে আপীল বিভাগ। চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও আট সপ্তাহের জামিন আবেদন করেছেন সুপ্রীমকোর্র্টে। মতিঝিল থানার দুই নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এই আদেশগুলো প্রদান করেছেন। বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের নথি এবং দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে খালেদা জিয়ার করা দুটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। আদেশের পর খালেদার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী বলেন, ‘আবেদন দুটি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। রুল শুনানির জন্য আগামী ৩০ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় দুদক এ মামলা করার পর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এতে বলা হয়, চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অব চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন। ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর খালেদার বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেয়া হয়। হাইকোর্টের ওই আদেশ আপীলেও বহাল থাকায় আটকে যায় খনি দুর্নীতি মামলা। সাত বছর পর চলতি বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাইকোর্টের দেয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। মওদুদের মামলা স্থগিত ॥ অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার কার্যক্রম ৩০ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করে তাকে ওই সময়ের মধ্যে নিয়মিত ‘লিভ টু আপীল করতে বলেছে আপীল বিভাগ। মওদুদের একটি আবেদন শুনে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতে নিজের আবেদনের পক্ষে নিজেই শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। আদেশের পর খুরশীদ আলম খান বলেন, ৩০ আগস্ট বিষয়টি আবার আপীল বিভাগে উঠবে। অবৈধভাবে বাড়ি দখল ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে দুদক এ মামলা দায়ের করে। গত বছর ২৬ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ওই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ আদালতের বিচারক শুনানি শেষে অভিযোগপত্র আমলে নেন। মির্জা ফখরুলের জামিনের আবেদন ॥ চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও আট সপ্তাহের জামিন আবেদন করেছেন সুপ্রীমকোর্টে। রবিবার দুপুরে সুপ্রীমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করা হয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ফখরুলের আইনজীবী এ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন। উল্লেখ্য, গত ১৩ জুলাই সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ ছয় সপ্তাহের জামিন দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। পরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান ফখরুল। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। রিজভীর জামিন ॥ মতিঝিল থানার দুই নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের বেঞ্চ রবিবার রুলসহ এই আদেশ দেয়। আদালতে রিজভীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, সঙ্গে ছিলেন সগীর হোসেন লিওন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল হাই। আদেশের পরে লিওন বলেন, ১৯টি মামলায় রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। এ দুটিসহ সব মামলাতেই হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছে। তবে এর মধ্যে দুটি মামলায় আপীল বিভাগে জামিন স্থগিত আছে। ফলে তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না।
×