ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গীরা রবিবার ইউনেস্কোর তালিকাভুক্ত সিরিয়ার পালমিরা শহরের প্রাচীন মন্দির বালশামিন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। জিহাদী গোষ্ঠীর একের পর এক সাংস্কৃতিক নিদর্শন ধ্বংসের এটি সর্বশেষ ঘটনা। খবর এএফপির।
ভালোভাবে সংরক্ষিত গ্রীক রোমান ধ্বংসাবশেষের জন্য বিখ্যাত পালমিরাকে গত মে মাসে সরকারী বাহিনীর কাছ থেকে দখল করে নেয়া হলে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, আইএস চরমপন্থীরা সিরিয়া ও ইরাকের অন্যান্য অংশের মতো এর অমূল্য ঐতিহ্যগুলো ধ্বংস করে দেবে।
রবিবার পর্যন্ত পালমিরার অধিকাংশ সুবিহিত স্থান অক্ষত ছিল, যদিও খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, আইএস সেগুলোর নিচে মাইন পুঁতে রেখেছে এবং জিহাদী গোষ্ঠী শহরের জাদুঘরের বাইরে সিংহের একটি সুপ্রসিদ্ধ মূর্তি ধ্বংস করে দিয়েছে। সিরিয়ার পুরাকীর্তি বিভাগের প্রধান মামুন আবদুল করিম এই বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, দায়েশ আজ (রবিবার) বালশামিন মন্দিরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক রাখার পর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মন্দিরের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। তিনি বলেন, মন্দিরের ভিতরের অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং চারপাশের স্তম্ভগুলো ধসে পড়েছে। দেশটির গৃহযুদ্ধের ওপর নজর রাখা ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি যার হিউম্যান রাইটস মন্দিরের ধ্বংসসাধনের খবর নিশ্চিত করেছে। সিরিয়া এবং প্রতিবেশী ইরাকের বিস্তীর্ণ ভূখ- নিয়ন্ত্রণকারী আইএস ২১ মে পালমিরা দখল করে নিলে ইউনেস্কোর বর্ণনা মতে অসামান্য সর্বজনীন মূল্যের ঐতিহ্যগুলোর ভাগ্যের ব্যাপারে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। বালশামিন মন্দির নির্মাণ করা হয় ১৭ খ্রিস্টাব্দে এবং ১৩০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট হাদ্রিয়ানের রাজত্বকালে এটি সম্প্রসারিত হয়।
‘মরুভূমির মুক্তা’ বলে পরিচিত পালমিরা যার অর্থ তালগাছের শহর একটি সুরক্ষিত মরুদ্যান। দামেস্কের ২১০ কিমি উত্তর-পূর্বে এর অবস্থান রেশম পথ এবং পারস্য উপসাগর ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী পথে চলাচলকারী মরুযাত্রী দলের জন্য এটি ছিল একটি বিরামস্থল। খ্রিস্টপূর্ব ১৯ শতকের একটি ফলকে প্রথম এর নাম পাওয়া যায়। তবে খ্রিস্টপূর্ব গ্রাম শতাব্দী থেকে শুরু হয়ে আরও ৪শ’ বছর স্থায়ী রোমান সাম্রাজ্যের সময় পালমিরা সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছায়। দ্বিতীয় শতকে খ্রিস্টানদের আগমনের আগে পালমিরার ব্যবিলনীয় দেবতা বাল এবং সেই সঙ্গে ইয়ারহিবল (সূর্য) এবং আগলিবল (চাঁদ) এই ত্রয়ী দেবতার উপসনা করা হতো।