ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সীতাকুণ্ড ট্রেন-লরি সংঘর্ষে নিহত ১

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৬ আগস্ট ২০১৫

সীতাকুণ্ড ট্রেন-লরি সংঘর্ষে নিহত ১

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, ২৫ আগস্ট ॥ সীতাকুণ্ডে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে গুড়, দুধবাহী লরি‘র সংঘর্ষে মোঃ আজগর (৩৫) নামে এক মাছের পোনা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় মাঈন উদ্দিন (৩৫), মুজিবুর রহমান (৩৭)ও লরির চালকসহ ১০ জন আহত হয়। গত মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৫টার সময় উপজেলার বাড়বকু- বাজারসংলগ্ন এলপি গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এদিকে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার মফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানা যায়, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী বিজয় এক্সপ্রেস মঙ্গলবার ভোরে বাড়বকু- স্টেশনসংলগ্ন এলপি গেট এলাকায় অতিক্রম করছিল। এ সময় যান্ত্রিক ক্রটির কারণে রেললাইনের মাঝখানে বিকল হওয়া এক হাজার বস্তার ২৫ টন ওজনের এম এইচ গ্রুপের টু ডে গুড় দুধবাহী লরির সঙ্গে ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মালবাহী লরি ধুমড়ে-মুচড়ে ঘটনাস্থল থেকে ৭০ ফুট দূরে ছিটকে পড়ে এবং ট্রেনের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঘটনাস্থলে ট্রেনে থাকা মাছের পোনা ব্যবসায়ী নিহত হয় এবং লরির চালক, মাছের পোনা ব্যবসায়ীসহ ১০ জন আহত হয়। দুর্ঘটনা পরবর্তীতে স্থানীয় এলাকাবাসী, সীতাকু- থানা ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সীতাকু- মডেল থানার এএসপি সাইফুল ইসলাম বলেন, “রেললাইন পার হওয়ার সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে লাইনের মাঝে বিকল হওয়া লরি ও নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে।” তদন্ত কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রাম রেলওয়ের বিভাগীয় ম্যানেজার মফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “প্রতিষ্ঠানটি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই সরু এ গ্রামীণ সড়কে প্রতিনিয়ত নির্দিষ্টসীমার অতিরিক্ত পণ্যবাহী ভারি যানবাহন পারাপার করত। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আমরা লরির মালিক ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।” চট্টগ্রামের পথে ট্রেন চলাচল শুরু ॥ বিডিনিউজ জানায়, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে ট্রেনের সঙ্গে কনটেনারবাহী ট্রেইলারের সংঘর্ষের কারণে ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রামের পথে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, উদ্ধারকর্মীরা ট্রেইলার সরিয়ে এক পাশের লাইন খালি করার পর বেলা ১১টার দিকে আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও মহানগর প্রভাতী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়বকুণ্ড এলাকায় একটি লেভেল ক্রসিংয়ে আটকা পড়া কনটেনারবাহী একটি ট্রেইলারের সঙ্গে আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হলে অন্তত একজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন ও চারটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে বিভিন্ন গন্তব্যের চারটি ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশনে আটকা পড়ে। এছাড়া অন্যান্য স্থান থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী পাঁচটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে। স্টেশন ম্যানেজার আজাদ বলেন, “দুর্ঘটনার পর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এক পাশের লাইন দিয়ে ট্রেন ছেড়ে গেলেও অন্য লাইনে বিপরীত দিক থেকে চলাচল শুরু হয়নি।”
×