ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জ্যামাইকান গতিদানবের দাবি-আমিই বিশ্বের এক নম্বর

বোল্ট-বিদ্যুতে চমকালো ফের বেজিং

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৮ আগস্ট ২০১৫

বোল্ট-বিদ্যুতে চমকালো ফের বেজিং

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১০০ মিটারেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাকে ছোঁয়া সম্ভব নয়। জাস্টিন গ্যাটলিন যতই গতির ঝড় তুলুক তাকে পেছনেই থাকতে হবে, তিনি বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। আরেকবার সেটা মার্কিন এ স্প্রিন্টারকে মনে করিয়ে দিলেন বিশ্বের দ্রুততম মানব জ্যামাইকার উসাইন বোল্ট। এবার ২০০ মিটারেও জিতলেন তিনি। সময় নিলেন ১৯.৫৫ সেকেন্ড। এ নিয়ে টানা চারবার বিশ্ব এ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপসের ২০০ মিটারে স্বর্ণপদক গলায় ঝুলালেন। ২০০৮ সালে বেজিং অলিম্পিকে বার্ডস নেস্ট স্টেডিয়াম ২২ বছর বয়সী তরুণ এ জ্যামাইকানের ডাবল জয় দেখেছিল। এত বছর পর শুধু সময়টাই গড়িয়ে বেড়েছে কিন্তু বোল্টের আছে সেই আগের নৈপুণ্যই। বার্ডস নেস্ট আবারও দেখল সর্বকালের সবচেয়ে গতিধর এ মানবের ডাবল জয়ের উচ্ছ্বাস। বোল্ট-গ্যাটলিন যুদ্ধ আগের সব বারের মতোই একই হার-জিত দেখল। যদিও বরাবরের মতো এবার চিরাচরিত রীতিটা পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনাটাকে অনেক বড় করে দেখেছিলেন সবাই। কারণ বোল্টের ট্র্যাক এ্যান্ড ফিল্ডে দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি, ইনজুরি। অপরদিকে, গ্যাটলিনের গতির ঝড় এবং টানা ৮ রেস জয়ের রেকর্ড। কিন্তু বোল্টের কাছে এসেই থামলেন তিনি। পরাস্ত হলেন সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের কাছেই। তিনদিন আগে ১০০ মিটার স্প্রিন্টের দিকে সবাই হুমড়ি খেয়ে মনোযোগ দিয়েছিলেন। আবারও শ্রেষ্ঠত্ব সেখানে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেকে সবার চেয়ে সেরা প্রমাণ করেছেন বোল্ট। ৯.৭৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে জিতে মৌসুমে নিজের সেরা টাইমিংটা করেছেন। অথচ পুরো মৌসুমে যে কয়েকটি রেসে অংশ নিয়েছিলেন ১০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং করতে গিয়েই হা-পিত্যেশ করতে হয়েছিল। বিশ্ব আসর দিয়েই আবার ফর্মে ফিরলেন তিনি। সে কারণে ২০০ মিটারে গ্যাটলিনের চেয়ে বোল্টই ছিলেন ফেবারিট। ডাবল জয়ের ক্ষেত্রেও বোল্টকে নিয়ে ছিল সংশয়। কারণ বার্ডস নেস্ট স্টেডিয়ামে পৌঁছার আগ পর্যন্ত এ মৌসুমে তিনি কখনই ২০ সেকেন্ডের নিচে টাইমিং গড়তে পারেননি। তবে সেমিফাইনালে সেটা পেরেছিলেন। সেমিতে গ্যাটলিন ১৯.৮৭ সেকেন্ড আর বোল্ট ১৯.৯৫ সেকেন্ড টাইমিং গড়ে সেরা দু’জন হিসেবে ফাইনালে ওঠেন। বোল্টের সঙ্গে লড়াইয়ে নামলেই বাড়তি এক স্নায়ুুচাপে পড়ে যান যেন গ্যাটলিন। টাইমিংটা আর আগের মতো থাকে না। আর ফাইনাল মানেই যে বোল্টের আসল গতি দেখা। এবারও তাই হলো। মৌসুমে আগের সব টাইমিংকে যোজন দূরে ঠেলে দিলেন। জিতলেন মাত্র ১৯.৫৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে। এটি ছিল চলতি মৌসুমে ২০০ মিটারের সেরা টাইমিং। সেমির চেয়ে এদিন অনেক ভাল টাইমিং করেছেন গ্যাটলিন। কিন্তু উল্কা বেগের বোল্টকে ধরতে পারেননি। তিনি ১৯.৭৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য জিতেই সন্তুষ্ট থাকেন। আর ১৯.৮৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার আনাসো জোবোদোয়ানা ব্রোঞ্জ জয় করেন। এটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় রেকর্ড। অলিম্পিক এবং বিশ্ব আসর মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত ইভেন্টে ১২ লড়াইয়ে নামলেন বোল্ট। এর মধ্যে ১১ বারই জিতেছেন। শুধু মাত্র দেগুতে ২০১১ বিশ্ব আসরে ১০০ মিটারের স্বর্ণটা জিততে ব্যর্থ হয়েছেন ফলস স্টার্টের কারণে ছিটকে পড়ে। এছাড়া সব আসরেই আছে ডাবল। জয়ের পর বোল্ট বলেন, ‘কখনই সন্দেহ ছিল না যে আমি জিতব না। আমিই বিশ্বের এক নম্বর।’ এখন পর্যন্ত বিশ্ব আসের ১০ স্বর্ণপদক জেতা হয়ে গেল বোল্টের। এখন বাকি আছে দলগত ৪ী১০০ মিটার রিলের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখাটা। শনিবার ফাইনালে আরেকবার সেখানে গ্যাটলিন-বোল্ট লড়াই দেখা যাবে। এ বিষয়ে বোল্ট বলেন, ‘আমার সর্বোচ্চ পর্যায়ের আত্মবিশ্বাস আছে। যতদিন পর্যন্ত আমার কোচ আত্মবিশ্বাসী ততদিন আমি আরও আত্মবিশ্বাস এবং আমি আরও দ্রুত বেগে দৌড়াব।’
×