ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাষণ্ড স্বামীর কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ২৮ আগস্ট ২০১৫

পাষণ্ড স্বামীর কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৭ আগস্ট ॥ নিজের সন্তানকে দুধ পান করাতে পারছেন না এক মা। কারণ শিশুটির বাবা তার মায়ের শরীরের ৭০ ভাগ পুড়িয়ে দিয়েছে। ওই মায়ের শরীরজুড়ে এখন ফোসকা আর ফোসকা। বিচারের পাশাপাশি ওই মায়ের এখন সবচেয়ে বড় আকুতি তার সন্তানকে বাঁচিয়ে বড় করে তোলা। সন্তানকে কোলে নেয়ার জন্য চিৎকার করছেন। কিন্তু কোলেও নিতে পারছেন না শারমিন আক্তার নামে এই গৃহবধূ। কারণ তার পাষ- স্বামী আলমগীর হোসেন তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে শারমিনের শরীরের ৭০ ভাগই অগ্নিদগ্ধ হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুখানপুকুরী এলাকার তৈওয়ারিগাঁও গ্রামে। সে এখন ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। জানা যায়, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল এলাকার দরিদ্র সাহেবুল ইসলাম গত দু’বছর আগে তার মেয়ে শারমিনকে বিয়ে দেয় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শুখানপুকুরী এলাকার তৈওয়ারিগাঁও গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। কিন্তু স্বামীর চাহিদা অনুযায়ী যৌতুক না দেয়ায় বিয়ের পর থেকেই সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। স্বামীসহ শারমিনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর প্রতিনিয়ত তার ওপর অমানুষিক অত্যাচার চালাত। গত রবিবার সকালে পাষ- স্বামী আলমগীর হোসেন আরও একটি বিয়ে করার জন্য স্ত্রী শারমিনের কাছে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর চাইলে শারমিন স্বাক্ষর না দিতে চাইলে শুরু হয় বাগ্বিত-া। একপর্যায়ে আলমগীর ঘর থেকে কেরোসিন এনে শারমিনের শরীরের আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়। শারমিনের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে আগুন নেভায়। তার আগেই শরীরের ৭০ ভাগ পুড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিক ভাবে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার শারমিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকার বার্ন ইউনিটিতে রেফার্ড করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার উন্নত চিকিৎসার খরচ যোগাতে না পেরে শারমিনের বাবা ঠাকুরগাঁও মহিলাবিষয়ক অধিদফতরে সাহায্যের আবেদন জানায়। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাঃ জুয়েল জানান, শারমিনের শরীরের ৭০ ভাগই পুড়ে গেছে। কয়েকদিন প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বৃহস্পতিবার তার অবস্থার অবনতি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার বার্ন ইউনিট হাসপাতালে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।
×