ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি রুটে আজ থেকে খনন শুরু করবে সিনো হাইড্রো

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৯ আগস্ট ২০১৫

শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি রুটে আজ থেকে খনন শুরু করবে সিনো হাইড্রো

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ আজ শনিবার হতে নাব্য সঙ্কট দূর করতে পদ্মার লৌহজং টার্নিংয়ে খনন কাজ শুরু করবে পদ্মা সেতুর নদী শাসনের ঠিকাদারি চাইনিজ প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। শুক্রবার পদ্মা সেতুর দোগাছি সার্ভিস সেন্টারে এক বিশেষজ্ঞ যৌথ ও চুড়ান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন পদ্মা সেতুর তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) সারফুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান সিএমসি, বিাইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আতাহার আলী সর্দার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মোঃ সাইদুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলৗ (ড্রেজিং) মোঃ সুলতান আহমেদ খান, উপপরিচালক (সার্ভে) মোঃ আব্দুল রউফ, এডিএম কামাল হোসেন, সিনো হাইড্রো প্রতিনিধি জিয়ামিন জি, জন লিং (ডিপিএম) প্রমুখ। সভা শেষে বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) সুলতান আহমেদ খান বলেন, পদ্মা সেতুর দোগাছি সার্ভিস সেন্টারের অফিসে শুক্রবার বিআইডব্লিউটিএ, সিনো হাইড্রো, বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটি ও জরিপকারকদের নিয়ে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর পূর্বে গত তিন দিন ধরে পদ্মায় ইকোবিম সাউন্ট সিস্টেমসহ হাইড্রোগ্রাফি জরিপ চালানো হয়। জরিপ কাজ পর্যালোচনা করে সভার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মতে শনিবার হতে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পদ্মার লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের ডুবো চরটি কেটে অপসারণ করবে পদ্মা সেতুর নদী শাসনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো কর্পোরেশনের দুটি বড় ড্রেজার। লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের ওই এলাকায় প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ ঘন ফুট পলি মাটি অপসারণ করতে হবে। সিনো হাইড্রোর প্রতিটি ড্রেজার প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার মাটি খনন করতে সক্ষম। সে হিসেবে দুটি ড্রেজার প্রতিদিন কম করে হলেও ৫০ হাজার ঘনফুট মাটি অপসারণ করবে। এ ক্ষেত্রে ৫-৬ লাখ মাটি খনন করতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে। তবে চ্যানেলের মাঝে বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব ও ভাড়া করা মোট ৪টি ড্রেজার কাজ করছে। এগুলো স্রোতের গতি কমলে চ্যানেলের গভীরতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাবে। কিন্তু অপাতত লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের ওই ডুবো চরটি কেটে দিবে সিনো হাইড্রোর ড্রেজার। তবে তিনি বলেন, লৌহজং টার্নিংয়ের ওই পয়েন্টে পদ্মায় এখন পানি রয়েছে ৯ ফুট। বড় বড় রো রো ফেরি চালাতে পানির প্রয়োজন হয় সর্ব নিম্ন সাড়ে ৭ ফুট। তাই এই মুহূর্তে চ্যানেলে কোন নাব্য সঙ্কট নেই। এ পরিমাণ পানি দিয়ে সব ধরনের ফেরি চলাচল সম্ভব। আসলে নাব্য সঙ্কট নয়। পদ্মায় এখন প্রচ- স্রোত। ৭ থেকে ৯ নটিক্যাল মাইল ব্যাগে পদ্মা নদীতে এখন স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। স্রোতের প্রতিকূলে মান্ধাতা আমলের ফেরির ইঞ্জিনগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। শুধু কুসুমকলি ও ক্যামেলিয়া নামে দুটি নতুন ফেরি প্রতিদিন চলাচল করছে। ওই দুটি ফেরির ইঞ্জিন শক্তিশালী বলেই ফেরি দুটি প্রচ- এই স্রোতের প্রতিকূলেও চলাচল করছে। শিমুলিয়াস্থ বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আশিকুজ্জামান জানান, নদীতে এ মুহূর্তে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পানিতে ফেরি চলাচল সম্ভব হলেও ৭ নটিক্যাল মাইল গ্রোতের প্রতিকূলে ফেরিগুলো ইঞ্জিনের গতি কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাই শুধু নতুন ফেরি শক্তিশালী ইঞ্জিন বিশিষ্ট কুসুমকলি ও ক্যামিলিয়া ফেরি দিয়ে কোন মতে পারাপার অব্যাহত রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, নাব্য সঙ্কটের কারণে গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর পর গত আট দিন ধরে সকল প্রকার ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ। দুটি ফেরি এখন ভরসা। ফেরি পারাপারে অচলবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে প্রতিদিন সরকার ২০ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত সরকার এ খাত থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
×