নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ২৮ আগস্ট ॥ লক্ষ্মীপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোঃ সবুজ নামে এক যুবদল কর্মীকে গলা কেটে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের চিলাদি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে এক শিবিরকর্মী ও একজন মহিলাসহ ৬ জনকে পুলিশ আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্য থেকে বেলাল হোসেন নামের এক যুবক হত্যার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন বলে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে। বর্তমানে তাদের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশের ভাষ্যমতে বেলাল শিবিরের একজন ক্যাডার। তার সঙ্গে জঙ্গী কানেকশন রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে নিহতের পরিবার এ হত্যাকা-ের জন্য দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। মোঃ সবুজ চিলাদি গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও খামারী ব্যবসায়ী। তিনি স্থানীয় ১নং ওয়ার্ড যুবদল সাধারণ সম্পাদক বলে জেলা যুবদল সভাপতি রেজাউল করিম লিটন দাবি করেন।
চার বছরের শিশুসন্তান লাবনী সুলতানা স্মৃতি আক্তারকে কোলে নিয়ে ৭ মাসের অন্তঃস্বত্তা সবুজের স্ত্রী খুকি আক্তার এখন দিশেহারা। একই সঙ্গে চলছে পরিবার ও স্বজনদের আহাজারি।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, হত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখতে পান সবুজের গলাকাটা লাশ পড়ে আছে ধানক্ষেতে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে আটক করা হয়। বেলাল নামের একজনকে মারধর করলে সে খুনের কথা স্বীকার করে নিজেকে শিবিরকর্মী পরিচয় দেয় বলে এলাকাবাসী জানান ।
নিহতের স্ত্রী খুকি আক্তার জানায়, রাতে মোবাইল ফোনে কল আসার পর সবুজ ঘর থেকে বের হয়ে খামারের দিকে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু সংবাদ পান। ৪ বছরের শিশু ও ৭ মাসের গর্ভের সন্তান নিয়ে কোথায়-কার কাছে দাঁড়াবে এমন প্রশ্ন রেখে স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন তিনি।
নিহতের বাবা আবু তাহের জানান, বেলাল, জাহের, মহিনরা আমার নিরপরাধ ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি সরকারের কাছে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার চাই। নিহতের মা জাখেরা বেগম জানান, কারও সঙ্গে আমার ছেলের কোন বিরোধ নেই, সে সন্ত্রাসীও নয়; তারপরও তাকে মেরে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, জায়গাজমির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেলালের বাবার সঙ্গে অন্যদের উপস্থিতিতে সবুজের কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে সবুজ নামের এক লোককে তার খামারের পাশে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকা- পরিকল্পিত উল্লেখ করে তিনি জানান, এতে স্থানীয় শিবির ক্যাডার বেলালসহ তার সাঙ্গপাঙ্গোরা জড়িত জানতে পেরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৬ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত বেলাল সবুজকে হত্যার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তিনি জানান, বেলালের বড় ভাইয়ের শ্যালক ওসমান নামে একজনকে ছুরি হাতে পালিয়ে যেতে দেখেছে বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন। এ ছাড়াও ওসমান নামে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও এক ব্যক্তি পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে বেলালকে প্রধান করে ১০জনের নাম উল্লেখসহ ৮/১০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হত্যার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে বেলাল, তার পিতা আবু জাহের, জাহেরের স্ত্রীসহ ৬জন।