ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শরতসন্ধ্যায় সুর ও ছন্দে ছায়ানটের নজরুল স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৯ আগস্ট ২০১৫

শরতসন্ধ্যায় সুর ও ছন্দে ছায়ানটের নজরুল স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আয়োজনটি ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিবেদিত। বয়ে গেল দ্রোহ, প্রেম, সাম্য ও মানবতার কবির প্রতি অনুরাগীদের ভালবাসার প্রাণময় স্ফুরণ। তাঁরই রচিত গান, কবিতা ও রচনায় জানানো হলো বিনম্র শ্রদ্ধা। সুরের বৈভবে ও দোলায়িত ছন্দের শিল্পিত উচ্চারণের স্নিগ্ধ আনুষ্ঠানিকতায় ছিল শুধুই সৃষ্টি সুখের উল্লাসে দীপ্যমান বিদ্রোহী কবির বন্দনা। কবির প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার শরতের সন্ধ্যায় এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে ছায়ানট। একক ও সম্মেলক সঙ্গীতের সঙ্গে আবৃত্তি ও পাঠের সমন্বয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। শব্দ-সুরের সুধা ছড়ানো এমন মোহময় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় শ্রোতার আগমনে মিলনায়তন ছিল পরিপূর্ণ। কবির কাছে শংকাহীন ও প্রেরণাময় জীবনের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানে সূচনা হয়। ছায়ানটের শিল্পীদের অনেকগুলো কণ্ঠ এক সুরে গেয়ে শোনায়Ñ দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য, হে উদার নাথ, দাও প্রাণ/দাও অমৃত মৃত জনে, দাও ভীত-চিত জনে, শক্তি অপরিমাণ...। সম্মেলক গানের পর একক সঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে আসেন নাসিমা শাহীন ফ্যান্সী। সমষ্টির কথা বলা নজরুলের কাছে সুরের আশ্রয়ে শিল্পী জানতে চায়Ñ কবি, সবার কথা কইলে, এবার নিজের কথা কহ...। প্রেয়সীহীন নির্ঘুম রাতের কথা উচ্চারিত হয় সুমন মজুমদারের কণ্ঠে। বিরহী কণ্ঠে পরিবেশন করেনÑ নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে/হে প্রিয়, কোথা তুমি দূর পরবাসে...। শ্রাবন্তী ধর গেয়ে শোনান পরদেশী বঁধুয়া...। প্রিজয়ন ফিরে পাওয়ার আকুল আকাক্সক্ষায় বিজন চন্দ্র মিস্ত্রির কণ্ঠে গীত হয় শূন্য এ বুকে পাখি মোর আয়/ফিরে আয় ফিরে আয়/তোরে না হেরিয়া সকালের ফুল/অকালের ঝরিয়া যায়...। হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে গানটি পরিবেশন করেন নাহিয়ান দূরদানা শুচি। এছাড়াও কণ্ঠের মাধুর্য ছড়িয়ে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন রেজাউল করিম, সৈয়দা সনজিদা বীথিকা, শুক্লা পাল সেতু, দিদারুল করিম, অভিজিত কু-ু, কানিজ হুসনা, মোহিত খান, সুস্মিতা দেবনাথ শুচি ও যোসেশ কমল রড্রিক্স। তাঁদের গাওয়ার গানগুলোর শিরোনাম ছিলÑ কেমনে রাখি আঁখি-বারি চাপিয়া, ভেসে আসে সুদূর স্মৃতির সুরভী, সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায়, বধূ তোমার এই যে বিরহ, মনে পড়ে আজ সে কোন্্ জনমে, আজ বাদল ঝরে, আমার আপনার চেয়ে, নয়নে নিদ নাহি ও কাঁদব না আর। সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত অন্য তিনটি গানের শিরোনাম ছিলÑ এসেছি তব দ্বারে ভক্তি-শূন্য প্রাণে, হে পার্থ সারথি! বাজাও বাজাও ও বেদনার সিন্ধু মন্থন শেষ। শিল্পিত উচ্চারণে নজরুলের দারিদ্র্য কবিতাটি আবৃত্তি করেন কাজী মদিনা। এছাড়াও পাঠে অংশ নেন বাচিকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসিÑস্বদেশের প্রতি এই মমতা আর ভালবাসার সম্মিলিত উচ্চারণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় কবিবন্দনার অনন্য আয়োজনটি। বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত চারুকণ্ঠের আবৃত্তিসন্ধ্যা ॥ বাচিক শিল্পীদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে চারুকণ্ঠ আবৃত্তি সংসদের ধারাবাহিক আয়োজন ‘বিনম্র রোদের ছায়া’। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো ঊনবিংশ পর্ব। আর এ পর্বের আয়োজনটি ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের ভিআইপি সেমিনার অনুষ্ঠিত হলো ‘বঙ্গবন্ধু : নিবেদিত পঙক্তিমালা’ শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যা। নান্দীমুখ রঙ্গমেলায় মঞ্চস্থ উর্ণাজাল ॥ পথচলার ২৫ বছর পূর্ণ করেছে নাট্য সংগঠন নান্দীমুখ। এ উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে শুরু হলো ‘নান্দীমুখ রঙ্গমেলা’। শুক্রবার সূচনা হলো দুই দিনব্যাপী তৃতীয় পর্বের আয়োজনটি। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো নাটক উর্ণাজাল। প্রযোজনাটি রচনা করেছেন বাকার বকুল। নিদের্শনা দিয়েছেন ফয়েজ জহির। মুজিব মানে মুক্তির শততম মঞ্চায়ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মভিত্তিক নাট্যালেখ্য মুজিব মানে মুক্তি। লিয়াকত আলী লাকী গ্রন্থিত ও নির্দেশিত লোক নাট্যদলের নন্দিত প্রযোজনাটির শততম মঞ্চায়ন হলো শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে। প্রদর্শনীর আগে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান।
×