ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নাসার উপগ্রহ চিত্রের বিবরণ

অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলেছে সাগরের উচ্চতা

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০১৫

অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলেছে সাগরের উচ্চতা

বিশ্বজুড়ে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। উপগ্রহ থেকে পাওয়া সর্বশেষ ছবিতে দেখা গেছে, আগামী এক শ’ থেকে দু’শ’ বছরের মধ্যে সাগরপৃষ্ঠ তিন ফুট (এক মিটার) বা তার চেয়ে বেশি উঁচু হয়ে যেতে পারে। উচ্চতা বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া অপ্রতিরোধ্য বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা বুধবার এ কথা জানিয়েছেন। খবর এএফপির। গ্রীনল্যান্ড ও দক্ষিণ মেরুর বরফ আচ্ছাদন আগে যেমন ধারণা করা হতো তার চেয়েও দ্রুত গতিতে গলছে। গত কয়েক বছরে মহাসাগরগুলোও অনেক উষ্ণ ও প্রসারিত হয়েছে, যেটি এর আগে বিগত অনেক বছরে দেখা যায়নি। নাসার আর্থ সায়েন্স ডিভিশনের পরিচালক মাইকেল ফ্রেইলিচ বলছেন, বিশ্বের বাদবাকি অঞ্চলের ওপর সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাব হবে ‘অত্যন্ত ব্যাপক’। সাগরপৃষ্ঠের বর্তমান স্তরের চেয়ে এক মিটারের মধ্যে বাস করে ১৫ কোটি মানুষ, এদের বেশির ভাগেরই বসবাস এশিয়া মহাদেশে। সাগরের পানির উচ্চতা বাড়লে এরা বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে। অন্যদিকে সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে সিঙ্গাপুর ও টোকিওসহ অনেক বড় বড় শহর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মতো নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফ্রেইলিচ বলছেন, ‘সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার অনেকগুলো দেশ পুরোপুরি সাগরগর্ভে হারিয়ে যেতে পারে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, আগামী কয়েক বছরে বিশ্বের সৈকত এলাকাগুলোর বর্তমান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য বদলে যেতে পারে। কলোরাডো ইউনিভার্সিটির গবেষক এবং নাসার সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বিষয়ক টিমের প্রধান স্টিভ নেরেম বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের হাতে যেসব উপাত্ত রয়েছে তার ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হলে আগামীতে সেই উচ্চতা আরও দ্রুত গতিতে বাড়তে পারে। ভবিষ্যতে অবস্থার অবনতি ঘটার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।’ মেরু অঞ্চলের বরফের আচ্ছাদন কি হারে গলে তার ওপরই সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার গতি নির্ভর করে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। সর্বশেষ উপগ্রহ চিত্র যে তথ্য তুলে ধরছে তা থেকে এটি স্পষ্ট যে, সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার হার আগে যেমন ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে কম নয় বরং বেশি। নাসা এবং ফরাসী মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সিএনইএস ১৯৯২ সাল থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। ফ্রেইলিচ বলছেন, সাগরপৃষ্ঠের গবেষণায় যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো খুব সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ নিরূপণ করতে পারে। তিনি বলেন, ওই যন্ত্র যদি একটি বাণিজ্যিক পরিবহন বিমানে বসানো হয় এবং তা যদি ৪০ হাজার ফুট ওপর দিয়েও উড়ে যায় তবু সেটি মাটির ওপর পড়ে থাকা ছোট একটি মুদ্রা দেখতে পাবে।
×