ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জন্মের পর পরই হাকডাক দিচ্ছে

রাজশাহীতে অদ্ভুত শিশু ॥ দেহের চেয়ে মাথা দ্বিগুণ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২৯ আগস্ট ২০১৫

রাজশাহীতে অদ্ভুত শিশু ॥ দেহের চেয়ে মাথা দ্বিগুণ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ অস্বাভাবিক বড় আকৃতির মাথা নিয়ে জন্ম নেয়ায় শিশু সন্তানকে নিয়ে চরম হতশায় দিন কাটছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর এক দরিদ্র পরিবারের। দেহের তুলনায় অনেক বড় আকৃতির মাথা নিয়ে গত ৩০ জুন সে জন্মগ্রহণ করে। শিশুটির জন্মের পর চিকিৎসকরাও অবাক হয়েছেন। শিশুটির মায়ের দাবি, জন্মের দিনই ওই শিশু ‘মা’ বলে ডেকেছে। এখন দুই মাস বয়সেই ‘আব্বা’ ও ‘দাদা’সহ বেশ কয়েকটি শব্দ স্পষ্ট করে বলতে পারছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শিশুর বড় আকৃতির মাথা ও হাকডাককে অনেকেই ‘আলৌকিক’ ধরে নিয়েছেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ বয়সে ডাকাডাকি ব্যতিক্রম হলেও তার মাথার আকৃতি কোন আলৌকিক বিষয় নয়। চিকিৎসকরা জানান, গর্ভাবস্থায় ভ্রƒণ যখন তৈরি হয় তখন শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর অসম বিন্যাসের ফলে শিশুর বিভিন্ন অঙ্গের আকৃতিগত পরিবর্তন হতে পারে। জন্মগ্রহণের পর শিশুকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসার। তবে ওই শিশুর ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ যোগাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তার দরিদ্র বাবা-মা। টাকার অভাবে বর্তমানে তার চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ। জানা গেছে, উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের দিয়াড় মানিকচক গ্রামের দিনমজুর জহুরুল ইসলাম গত ২৯ জুন তার স্ত্রী চামেলী বেগমকে উপজেলা সদরের বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করান। পরদিন চামেলী বেগমের অস্ত্রপচার করে শিশুর জন্ম হয়। তার নাম রাখা হয় সিয়াম হোসেন। তবে শিশুটির দেহের তুলনায় বিশালাকার মাথা দেখে চিকিৎসকরাও হতভম্ব হয়ে পড়েন। তখন তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার পর চামেলী বেগম তার বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। সম্প্রতি তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ওই শিশুর মাথার আকৃতি দেহের তুলনায় অনেক বড়। হাত দিলে মাথাটি তুলতুল করছে। যেন মাথার খুলিই নেই। গলা থেকে পুরো শরীরের গঠন পাতলা। ডান চোখটিও নষ্ট হয়ে সাদা হয়ে গেছে। বাম চোখের গঠন ঠিক থাকলেও সে চোখেও আলো নেই। কপালের চামড়া মাথার সঙ্গে টান ধরে থাকায় চোখের পলকই পড়ে না। ঘুমালেও বন্ধ হয় না চোখ। চামেলী বেগম জানিয়েছেন, তার বাচ্চা চোখে দেখে না। তবে দু’মাস বয়সেই ‘আব্বা’-‘মা’ বলে ডাক দেয়। মাঝে মাঝে নিজে নিজেই মাথায় আর চোখে হাত দেয়। জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো যায়নি। গরুর দুধ কিনে খাওয়াতে হয়। সারাদিন শান্ত থাকে। তবে রাতে ঘুমায় কম। জন্মের দিন সিয়ামের মাথার আকৃতি অস্বাভাবিক বড় ছিল। দিনে দিনে সেটি আরও বড় হয়ে যাচ্ছে। চামেলী বেগম বলেন, শিশু সিয়ামকে তিনি শহরের ‘বড় ডাক্তারদের’ দেখিয়েছেন। তারা তাকে জানিয়েছেন, সুচিকিৎসা পেলে সিয়াম সুস্থ হয়ে উঠবে। প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে সিরিঞ্জের মাধ্যমে সিয়ামের মাথার ভেতর থেকে পানি বের করতে হবে। এ জন্য প্রতি সপ্তাহে খরচ হবে পাঁচ হাজার টাকা। যা তার পক্ষে অসম্ভব। সিয়ামের চিকিৎসার জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
×