ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’ ॥ টরন্টো উৎসবে আমন্ত্রিত

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩০ আগস্ট ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’ ॥ টরন্টো উৎসবে আমন্ত্রিত

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ সরকারের অনুদান সহায়তা এবং বেঙ্গল এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’। চলচ্চিত্রটি আগামী ৪০তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছে। জাহিদুর রহিম অঞ্জনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, অপর্ণা সিং, মোশাররফ করিম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আমিনুর রহমান মুকুল, জারা, অদিতি, ইভান, শাহীন প্রমুখ। চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ করেছেন মুম্বাইয়ের সুধীর পালসানে, সঙ্গীত পরিচালনায় অভিজিৎ বসু ও সম্পাদনা করেছেন সমির আহমেদ। এছাড়া চলচ্চিত্রের শব্দ পরিকল্পনা রতন পাল, শিল্প নির্দেশনা তৌফিকুর রহমান, জুনায়েদ হালিম, শব্দ মিশ্রণ মুম্বাইয়ের অলোক দে। চলচ্চিত্রের নির্বাহী প্রযোজক এন, রাশেদ চৌধুরী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে আগামী ১০-২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ উৎসব টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসব। উৎসবে ‘মেঘমল্লার’ চলচ্চিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে। উৎসবে যোগ দেয়ার জন্য ‘মেঘমল্লার’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক ও পরিচালককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ‘ডিসকভারি’-দি ফিউচার অব ওয়ার্ল্ড সিনেমা-বিভাগে আগামী ১৫, ১৭ ও ২০ সেপ্টেম্বর ৩টি পাবলিক প্রদর্শনীর পাশাপাশি ১২ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ‘মেঘমল্লার’ চলচ্চিত্রটির প্রেস ও ইন্ডাস্ট্রি প্রদর্শনী হবে। দীর্ঘ বিরতির পর টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের কোন চলচ্চিত্র নির্বাচিত হলো। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্ষার টানা তিন দিনের কাহিনী নিয়ে মেঘমল্লার চলচ্চিত্রেরর বিয়োগান্তক আখ্যান গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের একটি মফস্বল শহরের সরকারী কলেজের কেমিস্ট্রির শিক্ষক নূরুল হুদা গল্পের মূল চরিত্র। স্ত্রী আসমা ও ৫ বছরের মেয়ে সুধা’কে নিয়ে তার সুখ-দুঃখের মধ্যবিত্ত সংসার। আর তাদের সঙ্গে থাকে আসমার ছোট ভাই মিন্টু। কাউকে কিছু না বলে মিন্টু একদিন মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়। কিন্তু নূরুল হুদাকে ফেলে যায় জীবন-মৃত্যুর সঙ্কটের মধ্যে। তারপরও নূরুল হুদা নিয়মিত কলেজে যায়, পাকিস্তানপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। মধ্যবিত্তের শঙ্কা, ভয়, পিছুটান তাকে অসহায় করে তোলে। ঘোর বর্ষণের এক রাতে মুক্তিযোদ্ধারা কলেজে এবং পাশের আর্মি ক্যাম্পে আক্রমণ করে। কোন কারণ ছাড়াই পাকিস্তানী আর্মি নূরুল হুদা এবং তার বন্ধু আব্দুস সাত্তার কে ধরে নিয়ে যায়। বৃষ্টির মধ্যে যাওয়ার সময় আসমা তাকে মিন্টুর একটা ফেলে যাওয়া রেইনকোট পরিয়ে দেয়। পাকিস্তানী আর্মির সামনে নূরুল হুদা প্রথমে ভয় পেয়ে যায়। প্রমাণ করার চেষ্টা করে সে একজন শিক্ষক মাত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তার কোন সংশ্রব নাই। কিন্তু নির্যাতনের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে। আঘাতে নূরুল হুদার নাকমুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। রক্তের দিকে তাকিয়ে হঠাৎই তার মিন্টুর কথা মনে হয়; সে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাবতে শুরু করে। যার জন্যে, মৃত্যু বা আত্মদান কোন ব্যাপারই না। সে বলে আমি সব কিছুজানি, কিন্তু কিছুই বলব না। মেজরের একটা গুলিতে নূরুল হুদা নিথর হয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু যুদ্ধ অনেক মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, আর ক্ষত রেখে যায় কাছের মানুষের হৃদয়ে। আসমা আর সূধা’র জীবনে যেমন। এভাবেই এগিয়ে যায় চলচ্চিত্রের কাহিনী।
×