ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সেনা-বিজিবি কম্বিং অপারেশনের পর থানচি সীমান্ত শান্ত

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ৩০ আগস্ট ২০১৫

সেনা-বিজিবি কম্বিং  অপারেশনের পর থানচি সীমান্ত শান্ত

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বাংলাদেশ-মিয়ানমারের বান্দরবানের থানচি সীমান্তে অশান্ত পরিন্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবির চলমান কম্বিং অপারেশনে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বিচ্ছিন্ন অবস্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সদস্যরা বিজিবির নৌকা টহল ও বিওপি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটানোর পর বিজিবির পক্ষে তাৎক্ষণিক সমুচিত জবাব দেয়া হয়। ওইদিন বিকেলে স্বল্প সময় ও পরদিন থেকে সেনা ও বিজিবির কম্বিং অপারেশন শুরু হয়ে যায়। এতে করে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মিসহ অন্যান্য গ্রুপের সদস্যরা বিচ্ছিন্ন অবস্থানে চলে যাওয়ার পথ বেছে নেয়। ফলে সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরের নোম্যান্স ল্যান্ডে এখন আর কোন অবস্থান নেই। বিজিবি সূত্রের ধারণা, এরা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নোম্যান্স ল্যান্ডের গহীন অরণ্যে ঘাপটি মেরেছে। ওদিকে, বাংলাদেশের আহ্বানে মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সতর্ক অবস্থাকে পৌঁছেছে। নোম্যান্স ল্যান্ডজুড়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে, বান্দরবান সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অরক্ষিত (আনগাডেড) সীমান্তে বিজিবির বিওপি প্রতিষ্ঠায় প্রশাসনিক আদেশ দ্রুত পাওয়া যাবে বলে আভাস মিলেছে। প্রধানমন্ত্রী এ সংক্রান্ত ফাইলে আগেই অনুমোদন দিয়েছেন। বান্দরবানের এ ঘটনার পর প্রশাসনিক আদেশ জারির প্রক্রিয়াটি গতি পেয়েছে। উল্লেখ্য, দেশের সীমান্তের অভ্যন্তরে কোথাও বিরোধী কোন গ্রুপ নেই। রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের পাহাড়ী অঞ্চলে জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফের চাঁদাবাজি ও নিজেদের আধিপত্যের দ্বন্দ্বের তৎপরতা রয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার বিরোধী সে দেশের প্রায় এক ডজন বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপের সশস্ত্র তৎপরতা রয়েছে বান্দরবানের সীমান্তের শুরু থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত এবং তা সে দেশের সীমান্ত অভ্যন্তরজুড়ে। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের শক্তিশালী গ্রুপটি হচ্ছে আরাকান আর্মি। সীমান্তের অরক্ষিত এলাকাটি অর্থাৎ বান্দরবান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাটিতে এরা তৎপরতায় ছিল। বিজিবি সূত্র জানায়, বুধবারের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তাৎক্ষণিক সবুজ সঙ্কেত দেয়ায় বিজিবিকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনীও যোগ দেয়। আর এতেই যৌথ কঠোর পদক্ষেপ আঁচ করতে পেরে আরাকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা বিচ্ছিন্ন অবস্থানে চলে যায়। বান্দরবান সীমান্তর নোম্যান্স ল্যান্ডের বিস্তীর্ণ জঙ্গলাকীর্ণ এলাকা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ব্যবাহর করে আসছিল পুরো অঞ্চলটি গহীন অরণ্যে ঘেরা থাকার কারণে। ওই ঘটনার পর বিজিবির নৌ ও স্থল টহল আরও বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর কোন ছাড় দেয়া হবে নাÑ বিজিবি প্রধানের এমন ঘোষণার পর সীমান্ত রক্ষীবাহিনী উজ্জীবিত। গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে যে অভিযান শুরু হয়েছে তাতে সামরিক সরঞ্জামসহ সকল শক্তি সংহত করা হয়েছে। আর এটিই মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য অশনি সঙ্কেত ডেকে আনে। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সম্পূর্ণভাবে বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
×