ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাট-আসিফের মুক্তি ফিক্সিং কলঙ্ক

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাট-আসিফের মুক্তি ফিক্সিং কলঙ্ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিক্সিং-কলঙ্কের দায়ে অভিযুক্ত সালমান বাট ও মোহাম্মদ আসিফের পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। আগামীকাল বুধবার থেকে মুক্তি মিলছে বহুল আলোচিত দুই পাকিস্তানী ক্রিকেটারের। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন দলটির তৎকালীন অধিনায়ক বাট এবং সতীর্থ পেসার আসিফ ও মোহাম্মদ আমির। বয়স কম হওয়ায় কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে কাটিয়ে আমির আগেই দায়মুক্তি পেয়েছেন, এরই মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলারও অনুমতি মিলেছে তার। এবার নিষেধাজ্ঞা উঠল অপর দুজনের। ২০ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তির মধ্য দিয়ে বাট ও আসিফের শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। ‘২ সেপ্টেম্বর ২০১৫Ñ বাট ও আসিফের দুজনেরই নিষেধাজ্ঞা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ওইদিন থেকে আমিরের সঙ্গে তারা দুজনও ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট খেলতে পারবেন।’ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে আইসিসি। সংস্থাটির দুর্নীতি দমন বিধিতে সংশোধনী আনার পর চলতি বছর জানুয়ারিতে মোহাম্মদ আমিরের পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়। ফলে ছয় মাস আগেই তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অনুমতি পান। বয়স কম হওয়ায় আমিরের প্রতি সহানুভূতি থাকলেও বাট-আসিফের জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে পাকিস্তানজুড়ে বিতর্কের তৈরি হয়েছে। সাবেক গ্রেট জাভেদ মিয়াদাদ, এমন কি বর্তমান টি২০ অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিও এ বিষয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসবি) সতর্ক করে দিয়েছেন। কলঙ্কের হোতাদের দলে ফেরালে চরিত্রবান-তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন তারা। তবে দুজনই ফিরতে মরিয়া। বাটের বর্তমান বয়স ৩০। তিনজনকেই নিজ নিজ সময়ে পাকিস্তানের অন্যতম প্রতিভাবান ক্রিকেটার বলে মনে করা হতো। ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করা বাটের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল দেশটি। ‘মাঠে গিয়ে ব্যাটিং করতে আমার আর তর সইছে না। ভুলের জন্য দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছি, তবে ক্রিকেট মাঠে ফেরাটাই হবে সত্যিকারের মুক্তি। নিজেকে আবারও প্রমাণ করতে চাই।’ স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন আবেগাপ্লুত বাট। অন্যদিকে এ বছরই ৩৩Ñএ পা দেবেন আসিফ, যিনি এক সময় বল হাতে বিশ্ব কাঁপিয়েছেন। দুরন্ত সুইংয়ে নাকাল করেছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। সেই আসিফ বলেন, ‘এটা আমার জন্য ছিল কঠিন এক অপেক্ষা। নেটে বোলিং শুরু করেছি। মূল ধারার ক্রিকেটে ফিরতে এখন সামনের দিকে তাকিয়ে আছি।’ সহানুভূতি পাওয়া ২৩ বছর বয়সী আমির অবশ্য অস্থির নন। ঘরোয়া ক্রিকেটের মাধ্যমে ফর্ম ও ফিটনেসের প্রমাণ দিয়ে তবেই জাতীয় দলে ফিরতে চান প্রতিভাবান এই বাঁহাতি পেসার। ২০১০Ñএর আগস্টে লর্ডস টেস্টে বাজির হোতা মাজহার মাজেদের সঙ্গে ফিক্সিংয়ের সূত্র ধরে ইচ্ছাকৃত ‘নো বল’ করে বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন আসিফ ও আমির। নেপথ্যে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন অধিনায়ক বাট। খবরটি ফাঁস করেছিল ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২ সেপ্টেম্বর ’১০ আইসিসি প্রাথমিকভাবে বাটকে ১০, আসিফকে ৭ ও আমিরকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে। আপীলের পর তিনজনের শাস্তি কমিয়ে ৫ বছর করা হয়। ক্ষমা চাইলেন সেই বন্দুকধারী স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তানী গ্রেট ওয়াসিম আকরামের ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন সেই অস্ত্রধারী। গত ৫ আগস্ট করাচী স্টেডিয়ামের কাছে ওই গুলির ঘটনা ঘটে। ক্ষমা চেয়ে আকরামের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বন্ধুকধারী আমিরুল রেহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর। চিঠিতে ঘটনার উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘প্রথমেই রাস্তায় সামান্য বাগ্বিত-া থেকে ওই ঘটনা ঘটায় আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনা এতদূর গড়ানোয় এমনকি ঘরের লোকজনও আমাকে দরুণভাবে লজ্জা দিচ্ছে। আপনি আমাদের জাতির গর্ব। আপনার সঙ্গে ঝগড়ার কথা কল্পনাও করতে পারি না। এটা আসলে ভুল বোঝাবুঝির ফল।’ সেদিনের ঘটনার পর আকরাম জানিয়েছিলেন, প্রথমে বন্দুকধারী তার দিকে নিশানা করে, পরে গাড়িতে গুলি করে। প্রত্যক্ষদর্শী একজনও বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি আকরামের গাড়ির টায়ারে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার ২৫ দিন পর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন আমিরুল। পাশাপাশি তিনি ও তার স্ত্রী আকরামের বড় ভক্ত বলেও উল্লেখ করেছেন ওই সাবেক সেনাকর্তা। পাকিস্তানে এমনিতে সন্ত্রাসী কর্মকা- বড় কোন ঘটনা নয়। নিত্যদিনই এমন ঘটনায় অনেক মানুষ প্রাণ হারায়। কিন্তু আকরামের মতো তুমুল জনপ্রিয় ক্রিকেটারের ওপর গুলিবর্ষের সেই ঘটনা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। তবে ক্ষমা চেয়ে চিঠি লেখার পর তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
×