ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চলতি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

চলতি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী তিন দিনের মধ্যে দেশে বৃষ্টিপাত হ্রাস পেতে পারে। বুধবারও রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হয়েছে। ঢাকায় রেকর্ড হয় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্য মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। চলতি মাসে স্বাভাবিকের বেশি বৃষ্টিপাত হবে। আজ বৃহস্পতিবারও দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। দেশের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলে জেলাসমূহের কতিপয় স্থানের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বুধবার সন্ধ্যায় দেশের ১৯টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হওয়ার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তীতে নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, সাব-হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাংশ হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে অসম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর এক শ’টির বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রামও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ এবং দেশের অন্যত্র মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানায়, বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টাঙ্গাইলে ৬৪ মিলিমিটার, ফরিদপুরে ১৩ মিমি, মাদারীপুরে ৩৭ মিমি, চট্টগ্রামে ৮১ মিমি, সন্দ্বীপে ৯৭ মিমি, সীতাকু-ে ৩৪ মিমি, রাঙ্গামাটিতে ২১ মিমি, কুমিল্লায় ২৬ মিমি, চাঁদপুরে ৩২ মিমি, মাইজদীকোর্টে ৩০ মিমি, ফেনীতে ২৯ মিমি, হাতিয়ায় ১১৬ মিমি, কক্সবাজারে ১৭০ মিমি, কুতুবদিয়ায় ১১৯ মিমি, টেশনাফে ১৫৮ মিমি, সিলেটে ১৩৪ মিমি, রাজশাহীতে ৩১ মিমি, ঈশ্বরদীতে ২২ মিমি, বগুড়ায় ৪ মিমি, রংপুরে ১০৭ মিমি, দিনাজপুরে ৭৮ মিমি, সাতক্ষীরায় ৫২ মিমি, চুয়াডাঙ্গায় ১২ মিমি, বরিশালে ২২ মিমি, পটুয়াখালীতে ৩১ মিমি ও ভোলায় ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড বুধবার সন্ধ্যায় জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে এবং পদ্মা নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। ঢাকা শহর সংলগ্ন নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কমতে শুরু করতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলে জেলাসমূহের কতিপয় স্থানের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হতে পারে। বুধবার পর্যবেক্ষণাধীন ৮৫টি পানি সেন্টারের মধ্যে ৫৩টির পানি বৃদ্ধি এবং ২৮টির পানি হ্রাস পায়।
×