ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একশ’ ৪১ কোচ ঘাটতি

পশ্চিম জোনের ২০ ট্রেনে ॥ কোচ সঙ্কট তীব্র

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

পশ্চিম জোনের ২০ ট্রেনে ॥ কোচ সঙ্কট তীব্র

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ একশ’ ৪১টি কোচ ঘাটতি নিয়েই চালানো হচ্ছে পশ্চিম রেলের ২০টি আন্তঃনগর ট্রেন। ট্রেনের সময়সূচী অনুযায়ী ২০টি ট্রেনের সর্বোচ্চ লোড হিসেবে তিনশ’ ২০টি কোচ টানার কথা থাকলেও ট্রেনগুলো চলছে মাত্র একশ’ ৭৯টি কোচ নিয়ে। স্বল্প সংখ্যক কোচ দিয়ে ট্রেন পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যাপক সংখ্যক যাত্রী পরিবহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রেলওয়ে। নির্ধারিত ট্রেন পরিচালনা করেও কাক্সিক্ষত রাজস্ব আয় করা সম্ভব হচ্ছে না রেলওয়ের। কোচের অভাবে ট্রেনগুলোতে আসন সংখ্যা কম হওয়ায় টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রী সাধারণ। টিকিটের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন এ অঞ্চলের যাত্রীরা। এছাড়া অধিকাংশ ট্রেনে নেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে লোকাল ট্রেনগুলোর অবস্থা আরও করুণ। রেলওয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশ্চিম রেলের তুলনায় পূর্ব রেলের ট্রেনগুলো অনেক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ। পূর্ব রেলের প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেন চলে পূর্ণ সংখ্যক কোচ দিয়ে। প্রতিটি ট্রেনেই রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। চেয়ার কোচের আসনগুলো আরামদায়ক। বিদেশ থেকে আমদানি করা নতুন কোচ ও ইঞ্জিনগুলো ওই অঞ্চলে অগ্রাধিকার পেতে দেখা যায়। অথচ পশ্চিম রেলের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কোচ নেই। অধিকাংশ কোচের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। লোকাল ট্রেনগুলোর অবস্থা আরও নাজুক। রেলওয়ে সূত্র মতে, পশ্চিম রেলের উত্তরাঞ্চল থেকে ২০টি ট্রেন ঢাকা, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। পার্বতীপুর থেকে ঢাকা রুটে নীলসাগর, দ্রুতযান ও একতা, খুলনা রুটে রূপসা ও সীমান্ত, রাজশাহী রুটে বরেন্দ্র ও তিতুমীর, রংপুর-ঢাকা রুটে রংপুর এক্সপ্রেস এবং লালমনিরহাট থেকে লালমনি এক্সপ্রেস চলাচল করে। অন্যদিকে খুলনা-ঢাকা ও রাজশাহী রুটে সুন্দরবন, চিত্রা, সাগরদাঁড়ি, কপোতাক্ষ এবং রাজশাহী-ঢাকা রুটে পদ্মা, ধূমকেতু, সিল্কসিটি, দিনাজপুর-সান্তাহার রুটে দোলনচাঁপা, সান্তাহার-বুড়িমারী রুটে করতোয়া, গোয়ালন্দ-রাজশাহী রুটে মধুমতি ও ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস চলাচল করছে। পশ্চিম রেলের গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হিসেবে পরিচিত নীলসাগর ট্রেনটি রেলের হিসাব অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৮টি কোচ টানার ক্ষমতা থাকলেও চলছে মাত্র ৭টি কোচ নিয়ে। দ্রুতযান, একতা, লালমনি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রতিটিতে ২০টি করে কোচ থাকার কথা থাকলেও চলছে ১০ থেকে ১২টি করে কোচ নিয়ে। তিতুমীর ট্রেন ১৫টির স্থলে ১০টি, বরেন্দ্র ১৩টির স্থলে ১০টি, রূপসা ১৩টির স্থলে ৯টি, সীমান্ত ১৩টির স্থলে ৯টি ও দোলনচাঁপা ১৩টির স্থলে ৬টি কোচ নিয়ে চলাচল করছে। অন্যদিকে রাজশাহী ও খুলনা থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রেনের অবস্থা একই। অথচ ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট পথের মহানগর, প্রভাতি, তূর্ণা নিশীথা, সুবর্ণা, পারাবত, জয়ন্তিকাসহ প্রতিটি ট্রেন চলছে ২২ থেকে ২৫টি কোচ নিয়ে। পার্বতীপুর ডিজেল শেড ইনচার্জ আবদুল মতিন জানান, প্রয়োজনীয় কোচ না থাকায় অর্ধেক কোচ দিয়ে ট্রেনগুলো চালানো হচ্ছে। কোচ সংখ্যা বাড়ানো গেলে যাত্রী পরিবহনও বেশি হতো। এতে পশ্চিম রেলওয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আয় করতে পারত। এ ব্যাপারে পশ্চিম রেলের জেনারেল ম্যানেজার খায়রুল আলম বলেন, সৈয়দপুর কারখানায় কিছু কোচ মেরামত করে চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে একশ’ ৭০টি কোচ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ভারত থেকে আনা হবে মিটার গেজ পথের একশ’ ২০টি ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্রডগেজ পথের জন্য ৫০টি কোচ। কোচগুলো এলে সঙ্কট অনেকটা কেটে যাবে।
×