ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাতামুহুরীতে নাব্য সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মাতামুহুরীতে নাব্য সঙ্কট

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ চকরিয়ায় চলতি বছর পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট কয়েকদফা বন্যার কারণে পলি জমে একাধিক ডুবোচর জেগে মাতামুহুরী নদী বর্তমানে চরম নাব্যতা সঙ্কটে পড়েছে। নদীর উজানে পার্বত্য বান্দরবানের লামা ও আলীকদমে পাহাড়ে ব্যাপক বৃক্ষ নিধন ও বারুদের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর আহরণের কারণে মূলত নদীতে পলি জমে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই বর্ষাকালে নদীতে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদীর দুই তীরে নতুন নতুন এলাকায় ব্যাপক ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দাবি করছেন, নদী ভাঙন ঠেকাতে হলে চিরিঙ্গা ব্রিজ পয়েন্ট থেকে শুরু করে উজানে মানিকপুর ও নিচে পালাকাটা রাবার ড্যাম পর্যন্ত এলাকায় নতুন করে ড্রেজিং করা। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে নাব্যতা সঙ্কটে পড়ে প্রমত্তা মাতামুহুরী হারিয়ে ফেলবে চির যৌবন। ইতোমধ্যে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে সংশ্লিষ্ট জমি মালিকরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে জেগে ওঠা চরে জমে থাকা বালু অপসারণ করে এসব জায়গা ফের আবাদি জমিতে ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে ব্যক্তি উদ্যোগে জেগে ওঠা চর থেকে বালু অপসারণ করতে গিয়ে মালিক পক্ষের লোকজন উল্টো হয়রানির শিকারও হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা মিঠাপানি আটকিয়ে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার হাজার হাজার কৃষক প্রতিবছর সেচ সুবিধা নিয়ে ইরি-বোরো ও রবি শস্যের চাষাবাদ করে আসছেন। ইউপি চেয়ারম্যানরা আরও বলেন, এক সময় মাতামুহুরী নদী জনসাধারণের জন্য আশীর্বাদ হলেও প্রতিবছর বর্ষাকালে পাহাড়ী ঢলের তোড়ে নদীর দুই তীরে ভয়াবহ ভাঙনের সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ভাঙনের কবলে পড়ে শত শত পরিবার হারাচ্ছে বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি ও আবাদি জমি-জমা। তারা বলেন, মাতামুহুরীর উৎপত্তিস্থল বিশেষ করে লামা-আলীকদমে কয়েক যুগ ধরে পাহাড়ে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও বারুদের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর আহরণের কারণে মূলত প্রতিবছর বর্ষাকালে পাহাড়ী ঢলে নদীতে পলি জমে একাধিক স্থানে ছোট বড় অসংখ্য ডুবোচর জেগে ওঠে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই বর্ষাকালে নদীতে পানি সংকুলান না হওয়ায় তীরবর্তী এলাকা বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। আবার পানি নামার শুরুতে সৃষ্টি হচ্ছে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা।
×