ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে কোন ভর্তি পরীক্ষা হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে কোন ভর্তি পরীক্ষা হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার এসএসসি ও এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনার্সে ভর্তি। এজন্য আর কোন ভর্তি পরীক্ষা হবে না। পয়লা অক্টোবর থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রায় এক মাস ধরে নানা বিতর্ক আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ভর্তি পদ্ধতির বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের সেশনজট নিরসনে ক্রাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষার মানন্নোয়নে ২০১৮ সালের মধ্যভাগ হতে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ সেশনজট মুক্ত করা হবে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তি প্রক্রিয়া আগামী এক অক্টোবর থেকে শুরু হবে। ২০১৫-১৬ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি এসএসসি ও এইচএসসিতে ফলের ভিত্তিতে হবে এবং কোন ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে না। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস ১ ডিসেম্বর হতে শুরু হবে। ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য শিক্ষার্থীদের ভর্তি নির্দেশিকা ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যথাসময়ে জানানো হবে। উল্লেখ্য, স্নাতক (সম্মান) ব্যতীত অন্যান্য সকল ভর্তি কার্যক্রম এসএসসি ও এইচএসসির ফলের ভিত্তিতেই হয়ে থাকে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে জানা গেছে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভর্তি পদ্ধতি সম্পর্কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অস্পষ্ট অবস্থানের কারণে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছিল শিক্ষার্থীদের মাঝে। তবু বিষয়টিতে কর্ণপাত করেনি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার কর্তৃপক্ষের অস্পষ্ট অবস্থানে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। রবিবার তাই দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করলেও শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্ত মানবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, এবার একাদশ শ্রেণীতে জিপিএ ভিত্তিতে ভর্তিতে যে বিড়ম্বনা পড়েছিল শিক্ষার্থীরা তাতে সকলের কাছে এ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন আছে। আর এটি যেহেতু উচ্চ শিক্ষার ভর্তি সেখানে অবশ্যই মেধার ভিত্তিকে সঠিক মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা একটি খোলা চিঠিও পাঠিয়েছে উপাচার্যের কাছে। সেখানে তারা বলেছে, যে জিপিএ নিয়ে এখনও বিতর্ক কাটেনি, সে পদ্ধতিতে ভর্তি করানো হলে পুরো প্রক্রিয়াই প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে। কারণ মেধা ও যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই কেবল এসএসসি ও এইচএসসি একাডেমিক সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ভর্তি করার সময় এখনও আসেনি। শিক্ষার্থীরা আরও বলেছে, শুধু জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি করলে মেধার সঠিক মূল্যায়ন কখনই সম্ভব হবে না। কারণ আমরা যারা গ্রামের বা মফস্বলের ছাত্রছাত্রী তারা নানাবিধ সীমাবদ্ধতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে শহরের ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়ি। এর মধ্যে অন্যতম কারণ ভালমানের কলেজ, শিক্ষকের অভাব ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ কলেজগুলোর অধ্যক্ষরাও। মেডিক্যাল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছু হটেছে এ বিষয়টিও তারা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান জিপিএ ভিত্তিতে মেধা মূল্যায়ন নিয়ে বির্তক রয়েছে। সেখানে উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে যদি এই বির্তকিত পদ্ধতিকে মেধা মূল্যায়নের মাপকাঠি ধরা হয় তবে তা বির্তকিত থেকে যাবে। এটি করতে গেলে অস্থিরতা বাড়তে পারে। শিক্ষাবিদরা ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের চিন্তারও সমালোচনা করে বলেছেন, এ পদ্ধতি চালু করার সময় এখনও আসেনি। পাবলিক পরীক্ষায় গণহারে পাস করছে ঠিকই কিন্তু মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ করে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করলে অনেক শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
×