ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আনন্দ আয়োজনে বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আনন্দ আয়োজনে বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা অপরিহার্য স্লোগানে পথচলা শুরু করে বেণুকা ললিতকলা কেন্দ্র। সময়ের বহমানতায় ১৯৮০ সালে যাত্রা করা সাংস্কৃতিক সংগঠনটি পাড়ি দিল প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর। সোমবার আনন্দ আয়োজনে পালন করা হলো সেই সাফল্যগাথা। প্রাণের উচ্ছ্বাসে উদ্্যাপিত হলো ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও প্রখ্যাত নজরুলসঙ্গীত শিল্পী শাহীন সামাদকে এ বছরের বেণুকা পদকে সম্মানিত করা হয়। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মনোমুগ্ধকর নাচ-গানের সঙ্গে বিশিষ্টজনদের আলোচনায় সাজানো হয় দুই পর্বের অনুষ্ঠান। প্রথম পর্বের আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সংস্কৃতি সচিব বেগম আক্্তারী মমতাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেণুকার সঙ্গীত বিভাগের প্রধান বিশিষ্ট নজরুলসঙ্গীত শিল্পী ড. লীনা তাপসী খান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। আলোচনা শেষে শুরু হয় মনমাতানো সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। প্রথমেই পরিবেশিত হয় নৃত্য-গীতের সমন্বিত পরিবেশনা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রার্থনামূলক গানের সুরে নাচ করে একঝাঁক শিল্পী। এই পরিবেশনাটির পরিকল্পনায় ছিলেন গোলাম মোস্তফা খান। নাচ-গানের যুগলবন্দী পরিবেশনা শেষে মিলনায়তনজুড়ে বয়ে যায় সুরের ধারা। লীনা তাপসী খানের পরিচালনায় পরিবেশিত বিভিন্ন আঙ্গিকের গান। বৈচিত্র্যময় সুরের আবাহনে গাওয়া হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত, লোকসঙ্গীত, কীর্তন, তারানাসহ নানা ধাঁচের গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ফাঁকে ছিল গানের পরিবেশনা। কত্থক নৃত্যের পাশাপাশি পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গান ও নজরুলের প্রেমের গানের সুরাশ্রিত নাচ। উপস্থাপিত হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নৃত্যালেখ্য ‘চেতনায় বাংলাদেশ।’ সব শেষে ছিল জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আবেদনসমৃদ্ধ খ- নৃত্যনাট্য পরিবেশ। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সম্মেলক কণ্ঠে গীত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘জয়তব বিচিত্র আনন্দ’। খেয়াল ও তারানার মেলবন্ধনে পরিবেশিত হয় রাগ মালকোষ। নতুন ধানের চিড়াÑএই লোকসঙ্গীতের সুরে উপস্থাপিত হয় শিশুদের নৃত্য। গাওয়া নজরুলের রাগাশ্রয়ী বর্ষার মেঘের ডমরু...। রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গানগুলোও উচাটন করে উপস্থিত শ্রোতাদের হৃদয়। সংগঠনের শিল্পীদের কণ্ঠে গীত হয় মোর ভাবনারে কি হাওয়ায় ও রিমঝিম ঘন ঘনরে বরষে...। সংগঠনের শিশু শিল্পীরা গেয়ে শোনায় ‘সাতটি রঙের মাঝে আমি মিল খুঁজে না পাই।’ অনবদ্য কণ্ঠে নজরুলের কীর্তন পরিবেশন করেন লীনা তাপসী খান। গঙ্গা-যমুনা উৎসবের চতুর্থ দিনের আয়োজন ॥ ৫৩টি সংগঠনের অংশগ্রহণে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার দুই মঞ্চসহ উন্মুক্ত মঞ্চে চলছে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব। সোমবার ছিল উৎসবের চতুর্থ দিন। প্রতিদিনের মতো এদিনও দুইটি নাটকের প্রদর্শনী হয়। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে লোক নাট্যদল (সিদ্ধেশ^রী) পরিবেশন করে তাদের জনপ্রিয় প্রযোজনা ‘কঞ্জুস’। একই সময় এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে দেশ নাটক পরিবেশন করে ‘দর্পণে শরৎশশী’। নাট্যপ্রদর্শনীর আগে নাট্যশালার বহিরাঙ্গনে অস্থায়ী উৎসব মঞ্চে ছিল পথনাটক, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নাচ। দিনের শুরুতেই মুন্সীগঞ্জের সঞ্চালক নাট্যদল পরিবেশন করে পথনাটক ‘পাইছিরে পাইছি’। আবৃত্তি পরিবেশন করে ঢাকা স্বরকল্পন। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। নৃত্য পরিবেশন করে নবচেতনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ফরাসী নাট্যকার মলিয়েরের ‘দ্য মাইজার’ অবলম্বনে কঞ্জুস নাটকটি বাংলায় রূপান্তর করেছেন তারিক আনাম খান। নির্দেশনা দিয়েছেন লিয়াকত আলী লাকী। একজন কৃপণ ব্যক্তির সংসারের নানা গল্প নিয়ে আবর্তিত হয়েছে নাটকটি। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেবুন্নেসা সোবহান, স্বদেশ দাসগুপ্ত, জিয়াউদ্দিন শিপন, রুবেল শংকর, আজিজুর রহমান সুজন, সহৃচিতা শবনম, আবু বকর বকশী, মাসুদ সুমন, জুলফিকার আলী বাবু, পলি কুজুর, ইশিতা চাকী, খাদিজা মোস্তারী মাহীন, শাহরিয়ার কামাল, প্রিয়াংকা বিশ^াস, মাহবুব রাব্বী তনয়, মহৃসা রুবেল, তাজুল ইসলাম প্রমুখ। মনোজ মিত্র রচিত ও আলী যাকের নিদের্শিত দর্পণে শরৎশশী নাটকে অভিনয় করেছেন বন্যা মির্জা, ইশরাত নিশাত, কামাল আহমেদ, মামুন চৌধুরী রিপন, রকিবুল হাসান, অসীম কুমার নট্ট, ফিরোজ আলম, এ কে খান সজল, নাসির উদ্দিন শেখ তৗহিদ মিটুল, শোয়েব ইসলাম, আনিসুর রহমান বিপ্লব, ফাহিম মালিক ইভান, কুদ্দুস মাখন, অয়ন চৌধুরী, হোসাইন নীরব, রোশেন শরিফ, অনুপম রায়, মাহবুব আলম, এহসানুল আজিজ বাবু, কাজী মিজান কোয়েল প্রমুখ। আজ মঙ্গলবার উৎসবের পঞ্চম দিন। এদিন সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ভারতের নাট্যদল ঋত্ত্বিক পরিবেশন করবে নাটক ‘আদিরাজা’ ও এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘ভঙ্গবঙ্গ’। এর আগে বিকেল ৫টায় নাট্যশালার বহিরাঙ্গনে উন্মুক্ত মঞ্চে সাত্ত্বিক নাট্য সম্প্রদায় পরিবেশন করবে পথনাটক ‘দু’য়ানির বাজার’। আবৃত্তি পরিবেশন করবে মুক্তধারা। সঙ্গীত পরিবেশন করবে উদীচী। নৃত্য পরিবেশন করবে জিনিয়া নৃত্যকলা একাডেমি।
×