ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের লাগাতার হরতাল-অবরোধ, জ্বালাও-পোড়াও এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের কারণে দেশে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণেই এবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে। পাশাপাশি নতুন অন্তর্ভুক্ত সৃজনশীল পদ্ধতি বিষয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো বোঝাতে না পারায় ফল খারাপ হওয়ার আরেকটি কারণ। সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অতিরিক্ত পাসের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রশ্নোত্তর ফাঁস নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে প্রশ্ন উঠেছিল আমরা বেশি নম্বর দিয়ে পাসের সংখ্যা বাড়াচ্ছি। এ অভিযোগ মোটেও সত্য নয়। যেসব স্কুলে পাসের সংখ্যা কম ছিল কিংবা একজনও পাস করেনি, সেসব স্কুলে সরকারী খরচে অতিরিক্ত ক্লাস করানোর কারণে পাসের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা জোর করে কাউকে পাস বা ফেল করাই না। প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি আমাদের এখন জীবন-মরণ যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব তোলা হয়। মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে সরকারের গৃহীত নানা কঠোর পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন প্রশ্নপত্র ফাঁস করা মোটেই সহজ নয়। বিজি প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপা হচ্ছে। বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রশ্ন দেখার কোন সুযোগ পান না। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। সারাদেশে নতুন স্কুল-কলেজ ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে অপর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী সকল সংসদ সদস্যের কাছ থেকে ১০টি করে স্কুল-কলেজ ভবনের নাম চেয়ে বলেন, এ বছর ১০ হাজার ৭৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণ করা হবে। সংসদ সদস্যরা প্রত্যেকে ১০টি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম দিন। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে আমরা পর্যায়ক্রমে এসব নতুন ভবন নির্মাণ করে দেব। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এমএ হান্নানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে না পারায় এবং সাময়িক অনুমতি পত্রের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া পাঁচটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি উচ্চ আদালতের রায় নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৮৩টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে না পারায় ৫টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৬ সালে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। অবৈধ ঘোষিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছেÑ কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি, পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, কুইন্স ইউনিভার্সিটি এবং সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি। মন্ত্রী জানান, এদের মধ্যে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি উচ্চ আদালতে মামলা করে নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ার পর সরকার কর্তৃক এসআরও প্রত্যাহার করায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি এবং কুইন্স ইউনিভার্সিটি নিজেদের পক্ষে রায় পেলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি পায়নি। আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে স্টে-অর্ডার নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে বন্ধকৃত কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তির যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে অনুমোদনপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়-গুলোতে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
×