মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ কোরবানির হাটে হাটে পশু আমদানি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে প্রতারকচক্র, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির অপতৎপরতা। গরু ব্যবসায়ী ও কোরবানির পশু কিনতে আসা লোকজনকে টার্গেট করে অজ্ঞান পার্টি চক্র এরই মধ্যে হাটে হাটে নেমেছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় মানুষের অর্থ লুটের পাশাপাশি মানুষের প্রাণহানি ঘটানোর চেষ্টায় লিপ্ত।
সর্বশেষ গত রবিবার রাজশাহীর বৃহৎ পশুহাট হিসেবে খ্যাত সিটি বাইপাশ হাটে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৩০ ব্যবসায়ী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম জজ মিয়া। তার বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেরার খলিশাবাড়ি গ্রামে। সোমবার ভোরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অন্যদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত হলেও তারা এখনও চিকিৎসাধীন। অভিনব ও নতুন কৌশল রপ্ত করে তাদের টিস্যু পেপারের মাধ্যমে কেমিক্যাল মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা-পয়সা লুটের পরিকল্পনা থাকলে একসঙ্গে ৩০ জন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তারাও সটকে পড়ে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, যে কোন উৎসব এলে বেড়ে যায় অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যদের তৎপরতা। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো ও কেনাকাটা করা মানুষকে নিঃস্ব করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে তারা। এবারও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজশাহীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এসব প্রতারক পার্টির কয়েকটি চক্র।
পুলিশের তথ্যানুযায়ী অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সাধারণত চার থেকে পাঁচজন মিলে একটি টিম হয়ে কাজ করে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ আর হাটে আসা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা অজ্ঞান পার্টির প্রধান টার্গেট। বিশেষ করে পশুহাটে গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা এখন এসব চক্রের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে।
এদিকে ঈদ মৌসুমকে সামনে রেখে রেলপথের যাত্রীরা পকেটমার, মুঠোফোন চোর, মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির শিকার হন। ইতোমধ্যে সক্রিয় হচ্ছে অজ্ঞান পার্টি এবং মলম পার্টি। যাত্রীদের অচেতন করার উপকরণ হিসেবে তারা চা, পান, সিগারেট, চানাচুর, রুমাল বা কাপড় ও টিস্যু ব্যবহার করে।
চিকিৎসকরা জানায়, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাবারের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন’ ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ যাত্রীদের কৌশলে সেবন করিয়ে অচেতন করেন। এসব ওষুধ ডায়াবেটিস ও লিভারে সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে।