ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নির্মিত হচ্ছে অটিস্টিকদের ওপর চলচ্চিত্র ‘পুত্র’

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

নির্মিত হচ্ছে অটিস্টিকদের ওপর চলচ্চিত্র ‘পুত্র’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অটিস্টিকদের নিয়ে ‘পুত্র’ নামের চলচ্চিত্র নির্মাণের সূচনা হলো বুধবার। সরকারী অনুদানের এ চলচ্চিত্রটির কাহিনী ও সংলাপ লিখেছেন হারুন রশীদ এবং চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করছেন সাইফুল ইসলাম মান্নু। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের প্রযোজনায় চলচ্চিত্রটির সার্বিক তত্ত্ব¡াবধানে রয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড। চ্যানেল আইয়ের ছাদ বারান্দায় বিকেলে এটির মহরত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের পরিচালক (ফিল্ম) শিবপদ ম-ল। অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রটির পরিচালক বলেন, অটিস্টিক শিশুকে সমাজে বোঝা মনে করা হয়। কিন্তু সঠিকভাবে যতœ নিলে এবং একটি সুস্থ মানসিকতা নিয়ে তাদের সঙ্গে মিশলে তারাও স্বাভাবিকের মতো হতে পারেÑএমনই একটি গল্পে চলচ্চিত্রটিতে একজন অটিস্টিক শিশুকে মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভাল করে তোলার মতো একটি মহতি প্রচেষ্টাকে দেখানো হয়েছে। অটিজমের সঠিক ধারণা, অটিস্টিকদের সৃজনশীলতা এবং সামাজিক মূল্যবোধের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘পুত্র’ নামের নতুন চলচ্চিত্রটি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ চলচ্চিত্রে অটিস্টিক একটি ছেলের মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন একজন নবাগত শিশুশিল্পী লাজিম। এছাড়া চলচ্চিত্রটিতে জয়া আহসান ও সাবেরী আলমের অভিনয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। চলচ্চিত্রটির শূটিং হবে ঢাকা, সাভার ও রাজবাড়ির বিভিন্ন লোকেশনে। গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসবের ষষ্ঠ সন্ধ্যায় দুই বাংলার নাটক মঞ্চস্থ ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ‘গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’। বুধবার ছিল নয় দিনব্যাপী এ উৎসবের ষষ্ঠ দিন। এদিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় দুই বাংলার দুটি নাটক। জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ভারতের অনীক নাট্যদল প্রযোজিত নাটক ‘অশোকানন্দ’ ও একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় বাংলাদেশের পদাতিক নাট্য সংসদ প্রযোজিত নাটক ‘পোড়ামাটি’। ড. মুকিদ চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে অমলেশ চক্রবর্তীর নাট্যরূপে ‘অশোকানন্দ’ নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন অরূপরায়। নাটকটি ভারতীয় ইতিহাসের এক অলিখিত অধ্যায়, এর নাট্যরূপ ইতিহাস আশ্রিত হলেও এটি ঐতিহাসিক নাটক নয়। অশোকানন্দ শুধুমাত্র এক পিতৃশোকে বিহ্বল বিপদগ্রস্থ তরুণের প্রতিশোধ স্পৃহাতাড়িত ট্র্যাজেডি নয়। বস্তুত নায়কের ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি পরিণামে হয়ে ওঠে সমাজ ও জীবনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হওয়া বিবিধ নৈতিক প্রশ্ন ও সংঘাতের এক সংক্ষুব্ধ উৎসস্থল। এক নিকৃষ্ট প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বলি। আপন ভাই সূর্যগুপ্তর হাতে অশোকানন্দের পিতা সদানন্দর হত্যা ও সূর্যগুপ্তর সঙ্গে অশোকানন্দর মাতা কস্তুরীর অতি দ্রুত বিবাহ অশোকানন্দর অস্তিত্বের উৎসকেই করে তোলে ষড়যন্ত্রে ভরা অশুভের পঙ্কিলতায় বিষাক্ত। ষড়যন্ত্রের এই বিষাক্ত পরিবেশ পরিণামে তাকে নিমজ্জিত করে এমন এক অস্তিত্বের সঙ্কটে যাতে সে তার জীবন-মৃত্যু নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়। ফলত দিশাহীন সময়ে সমগ্র জাতি তার কাছে হয়ে ওঠে ষড়যন্ত্রে ভরা এক ভ-ামি ও হিংসার কারাগার। পরিণামে অপরাজিতার সঙ্গে তার প্রেমও বলিপ্রাপ্ত হয়। এই সঙ্কটের মোকাবেলা করতেই আর সময় ও সমাজের প্রতি তার নিজস্ব দায়বদ্ধতা পালনের জন্যই অশোকানন্দ কখনও পাগলামির মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখে, কখনওবা স্বনির্দেশিত নাটকের মধ্যে খোঁজে অপরাধী বিবেকের প্রতিমূর্তিকে। আবার কখনওবা হয়ে ওঠে পিতার প্রেতাত্মার আহ্বানে সাড়া দিতে প্রস্তুত উদগ্রীব এক নৃশংস প্রতিশোধকামী ঘাতক। জীবনের এই যাত্রায় অশোকানন্দ হয়ে ওঠে সমসাময়িক যাবতীয় সংঘাত ও দ্বন্দ্বের প্রতিভূ এবং তার যন্ত্রণাতাড়িত একক উচ্চারণগুলো হয়ে ওঠে স্থান, কাল,নির্বিশেষে সংবেদনশীল ও যন্ত্রণাতাড়িত বিবেকবান সত্তার এক প্রতিনিধিত্বমূলক স্বর। এই যাবতীয় দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও দোদুল্যমানতাকে অতিক্রম করে অশোকানন্দ পরিশেষে জীবন -মৃত্যুর সংঘাতে জীবনকেই বেছে নেয়। এভাবেই এগিয়ে যায় ‘অশোকানন্দ’এর কাহিনী। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- অরূপ রায়, অংশুমান দাশগুপ্ত, সন্তেষ রায়, দিলীপ মজুমদার, কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী, গৌতম সেনগুপ্ত, প্রজেশ সেনগুপ্ত, কানু মজুমদার, অঙ্কুর প-িত, অমিতাভ গাঙ্গুলী, সদানন্দ দাস, সুচিত্রিতা ঘোষ, শুভ্রা বোস, সন্ধ্যা দোয়ারী, চৈতালী পাল, পায়েল রায় ও তপতী ভট্টাচার্য। অন্যদিকে একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় বাবুল বিশ্বাস রচিত ও আইরিন পারভীন লোপা নির্দেশিত পদাতিক নাট্যসংসদ প্রযোজিত নাটক ‘পোড়ামাটি’। মুক্তিযুদ্ধের নাটক বলতে সাধারণত যে বীর রস অথবা করুণ রসের অবতারণা করা হয় তার বাইরে যেতে চেয়েছেন ‘পোড়ামাটি’র নাট্যকার বাবুল বিশ্বাস। তিনি যে কথাগুলো বলতে চেয়েছেন, কিংবা বলা যায়, যে জিজ্ঞাসা মেলে ধরা ছিল তার অভিপ্রায় সেজন্য প্রতীকের আশ্রয় নিতে হয়েছে তাকে। চারপাশের হিংস্র হুঙ্কারের মধ্যে যুদ্ধের দাবানলে দগ্ধ কতক পাত্র-পাত্রী আটক হয়েছে বন্দীশালায়, অত্যাচারে-পীড়নে কিংবা হন্তারকের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে একে একে মৃত্যু ঘটছে বন্দীদের। সেই ভয়াবহতার চাইতেও বড় বাস্তবতা বন্দীদেরই কোন একজন হাত মিলিয়েছে হন্তারকদের সঙ্গে, আত্মরক্ষার জন্য আত্মবিক্রিত সেই সত্তাটি কে, সেটা জানতে না পারার বেদনা মৃত্যুরও অধিক বেদনায় কাতর করে জীবিতদের। এমন দ্বন্দ্ব আবর্তিত হয় বন্দীশালার অন্ধকূপে। মুক্তির আনন্দের সঙ্গে মিশে থাকে শঙ্কা ও বিষাদ, নিগৃহীত ও প্রতিবাদীদের মধ্যে যখন রয়ে যায় বিশ্বাস হন্তারক, দেশদ্রোহী ও দেশপ্রেমিকের মধ্যে ফারাক তখন আর দৃষ্টিগোচর থাকে না। এমন অবস্থায় কী করার থাকে? সরল জবাব নেই নাটকে, আছে জিজ্ঞাসা। নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- অমিয় মিজান, কামরুজ্জামান পাভেল, আল-আমিন ইকবাল, মাহমুদা আক্তার লিটা, কামাল হোসেন প্রমুখ। শিল্পকলায় চালু হলো মিডিয়া সেন্টার ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে চালু করা হলো মিডিয়া সেন্টার। গণমাধ্যমের সংস্কৃতি কর্মীদের সুবিধার্থে এই প্রথমবারের মতো চালু হলো মিডিয়া সেন্টার। বুধবার বিকেলে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার নিচতলায় স্থাপিত এ মিডিয়া সেন্টারের উদ্বোধন করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ সময় নাট্য ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক সারা আরা মাহমুদসহ গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, দেশের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে সংস্কৃতিকর্মীরা। আর তাদের চিন্তার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সাংস্কৃতিক সংবাদ কর্মীরা। সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক ও সংস্কৃতিকর্মীদের সুন্দর সমন্বয় অটুট রাখার ক্ষেত্রে মিডিয়া সেন্টারটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। এ সময় উপস্থিত সাংস্কৃতিক সংবাদ কর্মীরা প্রয়াত সাংবাদিক কিশোর কুমারের নামে ‘কিশোর কুমার মিডিয়া সেন্টার’ নামকরণের প্রস্তাব জানান।
×