ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোন সুরাহা হয়নি

দুই দেশের প্রতিনিধি দল শুধু আলাপ আলোচনাই করছে

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দুই দেশের প্রতিনিধি দল শুধু আলাপ আলোচনাই করছে

ফিরোজ মান্না ॥ মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের কোন সুরাহা হয়নি। দুই দেশের প্রতিনিধিদল কর্মী নিয়োগের বিষয়ে শুধু আলাপ-আলোচনাই করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি মালয়েশিয়া। এ মাসেই আবার বাংলাদেশ থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে। এর আগে মালয়েশিয়ার ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে কর্মী নিয়োগ নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে গেছেন। তাতে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য দেশের সাড়ে ১৪ লাখ তরুণ নিবন্ধন করে বসে থাকলেও বাজারটি কবে খুলবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত। নিবন্ধনকারীদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, মারয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে বলা যাচ্ছে না কবে নাগাদ এই বাজারে কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। বেসরকারী পর্যায়ে তারা কর্মী নিয়োগ করতে আগ্রহী। জনশক্তি রফতানি কারকরাও দেশটিতে নিয়োগ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। সরকারের পক্ষ থেকেও মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাইকমিশনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ এ মাসেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল পাঠানোর আমন্ত্রণ জানিয়েছে। দেশের প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়ায় গিয়ে আলাপ-আলোচনা করার পর বোঝা যাবে বাজারটির আসল অবস্থা। মন্ত্রী এমন এক অনিশ্চিত অবস্থায় জনশক্তি রফতানিকারকদের কাছে টাকা না দেয়ার জন্য কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। গত মাসেই বাংলাদেশে সফরে আসা মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলাপ করে এ কথা জানিয়েছেন। মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বাইরে আর কোন আলোচনা হয়নি। তারা দেশে ফিরে আমাদের জানাবে কী প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ করবে। সূত্র জানিয়েছে, যারা সরকারীভাবে নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকেই মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ হবে। নতুন করে যারা নিবন্ধন করবেন, তারাও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় আরও একটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। তা হলো কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কম মূল্য নির্ধারণ করা হবে। ওই বৈঠকেও কর্মী পাঠানোর খরচ নির্ধারণ হয়নি। মালয়েশিয়ায় আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ কর্মী নিযোগের ঘোষণা দেয়। এ বছর তারা ৫ লাখ কর্মী নিয়োগের কথা জানায়। সেই অনুযায়ী মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করে। কিন্তু সর্বশেষ পরিস্থিতি এমন একপর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে কবে নাগাদ এই বাজার খুলবে তার কোন হিসাব নেই। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ১৭ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদল ঢাকা ছেড়ে গেছেন। আলোচনা হলেও কর্মী নিয়োগের বিষয়ে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কোন ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আরও উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তাছাড়া আগে বিষয়টি নিয়ে চুক্তি হবে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে। এরপর কর্মী নিয়োগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখের বেশি কর্মী নিয়োগ দেবে। এবার তারা বিজনেস টু বিজনেস (বি টু বি) প্রক্রিয়ায় কর্মী নিয়োগ করবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাড়ে ১৪ লাখ কর্মী যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য তাদের থেকেই কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ দক্ষ কর্মী নিয়োগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। কর্মী নিয়োগের বিষয়ে একটি কমন সার্ভারে কর্মীদের সব ধরনের তথ্য থাকবে। মালয়েশিয়ার কোন কোম্পানিতে কত কর্মী নিয়োগ হবে তা ওই কমন সার্ভার থেকেই বাছাই করা হবে। সেই অনুযায়ী বেসরকারী জনশক্তি রফতানিকারকদের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা নেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে গবর্নমেন্ট টু গবর্নমেন্ট (জিটুজি) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। সে অনুযায়ী শুধু সরকারীভাবে মালয়েশিয়ার ‘প্লান্টেশন’ খাতে কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল।
×