ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৬৪ গাছ গোপনে নিলামে বিক্রি ॥ নেয়া হয়নি বন বিভাগের অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

১৬৪ গাছ গোপনে নিলামে বিক্রি ॥ নেয়া হয়নি বন বিভাগের অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ রাস্তার দুইধারে গাছ রোপণ করে কোলের সন্তানের মতো আমরা ৯ বছর ধরে লালনপালন করে বড় করলাম। আর ইউপি চেয়ারম্যান ইচ্ছামতো একদিনে সব গাছ কেটে সাফ করে দিলেন। বিভিন্ন প্রজাতির ১৬৪টি গাছ (১০ লাখ টাকা) গোপনে নিলামে সোয়া লাখ টাকায় বিক্রি দেখিয়ে সেই টাকাও আত্মসাত করলেন ইউপি চেয়ারম্যান। আমরা ৭৪ উপকারভোগী এক টাকাও পেলাম না। তিনি চেয়ারম্যান না দুর্নীতিবাজ। কথাগুলো নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কেয়ার ক্যাপাসিটি বিল্ড প্রকল্পের উপকারভোগী সদস্যদের। বুধবার উপকারভোগীদের পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ ও সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, প্রকল্পের আর ওয়ান-৪৯ নম্বরের ছাদুরার বাজার থেকে সাতপাই সড়কের ৯১টি গাছ এবং আর ওয়ান-৩১ নম্বরের শ্মশানের বাজার থেকে চ-ির বাজার পর্যন্ত ৩৮টি গাছ ও হাজিরহাট ছাদুরার বাজার পর্যন্ত ৭২টিসহ ১৬৪ টি মেহগনি, কড়ই, শিশু, ইউক্লিপটাস ও আকাশমণি গাছ গত সোমবার প্রহসনমূলক নিলাম ডাক দেয় ইউপি চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে রাস্তার দুই ধারের গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। প্রকল্পের সভাপতি রউফুল ইসলাম বলেন, ২০০৭ সালে ৩টি রাস্তার দশ কিমি জুড়ে ৭৪ সুবিধাভোগী সদস্যকে নিয়ে ১০ বছর মেয়াদী পুটিমারী ইউনিয়নের কেয়ার ক্যাপাসিটি বিল্ড প্রকল্পের উপকারভোগী সদস্যরা গাছগুলো রোপন করেছিল। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ পূরণের আগেই পুটিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন প্রহসনের নিলাম ডাকের মাধ্যমে ১০লাখ টাকার গাছ পানির দামে ১ লাখ ২৫হাজার ৫শ’ ৩১ টাকায় বিক্রি করে। ফলে উপকারভোগী গরিব সদস্যরা একটি শিশুর দুধ কেনার টাকাও পায়নি। কিশোরীগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মুকুল হোসেন বলেন, প্রকল্পের গাছ হলেও গাছ কর্তনে নিয়ম অনুযায়ী বনবিভাগের অনুমতি প্রয়োজন হয়। সেই অনুমতিও নেয়নি ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি আরও বলেন, গাছগুলো ১০ বছর পর কেটে উপকারভোগীর মাঝে টাকা ভাগ করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ পূরণের এক বছর আগেই ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন গাছ কেটে সাফার করলেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন তার বিরুদ্ধে আনিত এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে এতে কোন কারচুপি হয়নি। উপকারভোগীর প্রাপ্ততা বিষয়ে তিনি বলেন, গাছ বিক্রির ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা সময়মতো বিতরণ করা হবে।
×