ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সব মানুষ নারী নয়, কিন্তু সব নারী-ই মানুষ

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সব মানুষ নারী নয়, কিন্তু সব নারী-ই মানুষ

৮ আগস্ট ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে বাগেরহাট জেলায় উদ্ধার হয় নারী ও শিশুসহ মোট ১৮ জন। একই দিনে রাজধানীর রমনায় গণধর্ষণের শিকার হয় আরও এক নারী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ সেই মা এখনও সেরে ওঠেননি। অথচ এক মাসেরও কম সময় আগে, ১১ জুলাই যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০১৫। এবারের প্রতিপাদ্য ছিলÑ ‘নারী ও শিশু সবার আগে বিপদে দুর্যোগে প্রাধান্য পাবেÑ আসুন যে কোন দুর্যোগে নারী ও শিশুর পাশে দাঁড়াই।’ এখানে অবুঝ শিশু আর নারীর পাশাপাশি অবস্থান যেন সমাজে নারীর নড়বড়ে ভিত, এর প্রতিই ইঙ্গিত করছে। তবে এই প্রতিপাদ্য আর উপরোক্ত কয়েকটি ঘটনা, বাংলাদেশে নারী অধিকার, নারী উন্নয়ন, নারী প্রগতি, নারী স্বাধীনতা এবং সর্বোপরি নারীর প্রান্তিক অবস্থানের সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে না, বরং লেশমাত্র প্রকাশ করে। আলোচনা শুরু করা যাক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রগুলোর পরিপ্রেক্ষিত দিয়ে। ‘দুশ্চরিত্র স্বামী মাতাল অবস্থায় টলতে টলতে ঘরে ঢোকে, সতী সাবিত্রী, সর্বংসহা স্ত্রী সযতেœ তার আরামের ব্যবস্থা করে। স্ত্রীর নিরলস শ্রম আর অসীম ধৈর্য পরীক্ষার ফলে একটা সময় হয়ত স্বামীর সুমতি হয়, বখে যাওয়া মানুষটি নিজকে শুধরে নেয়। মেয়েটির জন্ম সার্থক হয়। পরিবারের কাছে, সমাজের কাছে বাহবা পায়।’ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রগুলোর কাহিনীর আবর্তন ও পরিসমাপ্তি এ রকমই হয়। এমন হয়, কারণ চলচ্চিত্র সমাজের প্রতিচ্ছবি। আর বাংলাদেশের সমাজে নারীর জীবন, নারীর অবস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন যেন এমনই বৃত্তে আবদ্ধ। চলচ্চিত্রগুলোর এমন পরিসমাপ্তি সমাজের জন্য কিছু বার্তা বিমূর্ত রেখে যায়। কিছু ঝরে যাওয়া আর কিছু মৃত্যুর বার্তা। যদিও সমাজের কাছে এমনকি নারীর নিজের কাছেও নিরন্তর সেগুলো বিমূর্তই থেকে যায়Ñ মূর্ত হয়ে ওঠে না কখনই। সবার অলক্ষ্যে, মেয়েটির নিজেরও অজান্তে মৃত্যু হয় একটি সম্ভাবনাময় স্বাধীন সত্তার। মৃত্যু হয় কিছু সমৃদ্ধ ভাবনার, যা মেয়েটি অর্জন করেছিল তার পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর পারিপার্শি¦কতা থেকে। মানবতার বৃহত্তর কল্যাণের ব্রত নিয়ে। মেয়েটির সারাজীবনের অর্জন, স্বপ্ন আর সম্ভাবনাগুলো বিলীন হয়, বিবর্ণ হয় একটি মাত্র বখে যাওয়া, সমাজবিচ্যুত মানুষকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে। ভিনদেশের মাটিতে টিউলিপ, রূপা, রোশনারা যখন ধ্রুব বাস্তবতা, বাংলাদেশের সমাজে বাংলাদেশের নারীদের তখন এমনই অমোঘ নিয়তি। জাতীয় কবির মহানুভবতার বদৌলতে নজরুল সাহিত্যে নারী পৃথিবীর সমস্ত কল্যাণের অর্ধেক কৃতিত্বের দাবিদার হয়েছে। পুরুষের প্রেরণার উৎস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর কবিগুরু তার অসংখ্য রচনায় নিখুঁতভাবে ধরে রেখেছেন নারীর প্রতি পুরুষের লিপ্সা আর স্বেচ্ছাচারিতার চিত্রগুলো। শরৎ সাহিত্যে অনেক প্রগতিশীল নারীর সন্ধান পাওয়া গেলেও তাদের কারও ভাল পরিণতির কথা জানা যায় না। আমরা সেই সাহিত্যগুলো পড়েছি, পড়িয়েছি। সেই সব সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করা প্রজন্মও পেয়েছি। শুধু পাইনি কোন রদবদল, না সমাজে, না দৃষ্টিভঙ্গি আর মূল্যবোধে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে নারীর প্রতি পুরুষের মূল্যবোধ আর দৃষ্টিভঙ্গি আটকা পড়ে আছে বিষাদসিন্ধু, হেলেন অব ট্রয় আর মহাভারতে, যেখানে পৃথিবীর কিছু মহাধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী করা হয়েছে নারীকে। ফলাও করা হয়েছে নারীর হীনবল আর পরনির্ভশীলতাকে। সুচতুরভাবে প্রচ্ছন্ন রাখা হয়েছে নারীর গঠনমূলক ক্ষমতা, অবমূল্যায়িত হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন। যেখানে নারী কেবলই পুরুষের অধিকার, আজ্ঞাবহ, অর্জিত সম্পত্তি আর মনোরঞ্জনের বস্তুমাত্র। অনেকে প্রগতিশীলও নারীর ব্যাপারে সেই মধ্যযুগকেই প্রাধান্য দেন। ক্ষেত্রবিশেষে আদিম বা প্রাগৈতিহাসিক মূল্যবোধ বললেও অত্যুক্তি হবে বলে মনে হয় না। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বৈশাখী উৎসবে রমণীর বস্ত্রহরণ এবং তৎপরবর্তী সময়ে উক্ত ঘটনার নিন্দা-প্রতিবাদ জানাতে আসা জনৈক ছাত্রীর প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণ আমাদের সেই সব সময়েই ফিরিয়ে নিয়ে যায় না-কি? কিংবা তার চেয়েও কোন গহন গহীন অন্ধকারে? আদিম গুহাবাসী মানবরা শিকারকে কব্জা করে দলবদ্ধভাবে যে ভোজ উৎসবে মেতে উঠত, একবিংশ শতাব্দী পাড়ি দেয়া মানবরা সেই আনন্দের বুনো আস্বাদ পায় কোন মানবীকে কুপোকাত করে। সে সময়ে দ্বৈরথ হতো মানবে-পশুতে। এখন দ্বৈরথ হয় মানব-মানবীতে। জীবনের প্রত্যেকটা ধাপে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে নারী যে দায়িত্ববোধ, দৃঢ় মনোবল আর বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় তা সব সময়ই অস্বীকৃত। সেই সঙ্গে বরাবর উপেক্ষিত আর অমীমাংসিত নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্ন। একদিনের কথা মনে পড়ল, জনাকীর্ণ একটি লোকাল বাসে গুটিসুটি মেরে বসে থাকা এক ভদ্রমহিলার গায়ে বার বার অযাচিত এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঝুঁকে পড়ছিল পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ যাত্রীটি। ভদ্রমহিলা বিনীতভাবে সতর্ক করার চেষ্টা করলে লোকটি রাজ্যের বিরক্তি আর রাগের সঙ্গে ভদ্রমহিলাকে উদ্দেশ করে বাজে বকতে লাগল, ‘এমনিতেই এত ঝাঁকুনি, এর মধ্যে এত কথা, আসেন কেন লোকাল বাসে?’ ভদ্রমহিলার দৃঢ় কণ্ঠের দৃপ্ত উত্তর, ‘ভাই, আপনি বসেন আমি দাঁড়াই, একবারও আমি আপনার গায়ে পড়ব না।’ এটাই বাস্তব! শত প্রতিকূলতা, শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নারী এমন কিছু করে না, যা পুরুষের জন্য অস্বস্তিকর কিংবা পুরুষের স্বাধীনতা বা সাবলীলতা নষ্ট করে, পুরুষকে বিব্রত করে। রাস্তাঘাটে, কমর্ক্ষেত্রে এমনকি পরিবারে নারীকে উত্ত্যক্ত না করে, হয়রানি না করে চলতে পারে এমন পুরুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। অথচ নারীর বেলায় পরিসংখ্যান ঠিক উল্টো। জীবিকার প্রয়োজনে অনেক ভাসমান নারী বহু পুরুষের সংস্পর্শে এসে সমাজে পতিত বলে গণ্য হয়। অথচ নিজের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে এসে পতিত পরিগণিত হয় না একজনও পুরুষ। সমাজের চোখে তো নয়-ই, এমনকি তার স্ত্রীর চোখেও নয়। বরং স্ত্রী হিসেবে স্বামীকে আগলে রাখতে না পারার ব্যর্থতাই হয়ে দাঁড়ায় মুখ্য । পুরুষ জাতি নারীকে ব্যঙ্গ করে বলে, না-রি। অর্থাৎ না পারি বা পারি না। কী যুদ্ধ, কী প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কী সহিংসতা-সভ্যতার যে কোন পরিবর্তন, যে কোন নিয়ামক, সর্বাধিক এবং সর্বাগ্রে আক্রান্ত করে নারীকে। ভেলেনতিনা তেরেসকোভা, মাদাম কুরি, সুলতানা রাজিয়া, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গল, মাদার তেরেসা এবং নাম না জানা আরও অনেক নারীকে পেছনে ফেলে অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছে আপন গতিতে সদাধাবমান সভ্যতা। ইতিহাস সাক্ষী হয়ে আছে। সভ্যতার মাড়িয়ে যাওয়া অতীতের নির্যাস নিংড়েই বাড়তে থাকে ইতিহাসের কলেবর। ইতিহাস সভ্যতাকে ঋণী করে রেখেছে সেই নারীর কাছে, যিনি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন বীজ থেকে চারা গজায়। আদিম যাযাবর গুহাবাসী মানবরা শিকার ও ফলমূলের প্রাচুর্য অনুসারে কোন কোন জায়গায় সাময়িক থিতু হতো। তখনও নারীর ভূমিকা ছিল সন্তান লালনপালন এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণমূলক কাজ। তাই এটাই বেশি গ্রহণযোগ্য যে, এসব ভূমিকা পালন করতে করতে কোন এক সচেতন নারীরই দৃষ্টিগোচর হয়েছিল যে, তাদের আহার করা ফলমূলের উচ্ছিষ্ট থেকে গজিয়ে উঠেছে একই ফলের কচি কচি চারা। সেই থেকে আসে চাষাবাদের ধারণা। ক্রমান্বয়ে আসে স্থায়ী বসবাস, মালিকানা, সমাজ, শাসন ব্যবস্থা। সচল হয় সভ্যতা এবং প্রগতির চাকা। এভাবেই সেই চারাগাছের সঙ্গে সঙ্গে নারীর হাতেই অঙ্কুরিত হয় সভ্যতা আর প্রগতির প্রথম বীজ। তথাপি কোন এক বিচিত্র কারণে নারীর জীবন এবং সভ্যতাÑ প্রগতির প্রবাহ সদা বিপরীতমুখী। ধর্মভীরু বলে বাংলাদেশের মানুষের একটা বিশেষ পরিচিতি আছে। ইসলাম, হিন্দু, খ্রীস্টান ও বৌদ্ধ বাংলাদেশের প্রথম সারির ধর্ম। স্বর্গ-মর্ত্য সর্বত্র নারীর কী বলিষ্ঠ পদচারণা! বাস্তবিকই কি নারীদের জীবন এতটা সম্মান আর গৌরবময়? হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য দশভুজা দূর্গা পুরুষরূপী অসুর বধের মাধ্যমে নারী শক্তির প্রমাণ হয়ে ফিবছর আবির্ভূত হন। কিন্তু তার দশ হস্তসংবলিত ব্যতিক্রম মানবী অবয়ব ছাড়া আর কিছু কি দৃষ্টিগোচর হয় পুরুষ সমাজের? আমরা মহাভারতে দ্রৌপদির অসহায়ত্বকেই মনে রাখি। মনে রাখি না যে, দ্রৌপদিই ছিল সর্বস্ব হারানো পঞ্চ পা-বের শেষ সহায়। মুক্তির মহামন্ত্র। কুমারী মেরি যিশু খ্রিস্টকে পৃথিবীতে এনে বিশ্বময় এই বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন যে, চিরন্তন জৈবিক ভূমিকায়ও পুরুষ ছাড়া নারী সফল হতে পারে। তথাপি বাংলাদেশের সমাজচিত্র দেখলে মনে হয় না-কি যে, ধর্মভীরু এই জাতির সকল ধর্মাবলম্বী পুরুষ নারীর বেলায় স্বঘোষিত, স্বরচিত কোন এক অভিন্ন ধর্মের অনুসরণ করে? আমরা এমন এক মজার দেশে বাস করি যেখানে প্রাধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানজনক পদগুলো নারীরা অধিকার করে রেখেছেন। অথচ নারীরাই এখানে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত এবং নির্যাতিত। বাংলা ভাষার অভিধানে ডাইনি, ডাকিনী, যোগিনীর মতো নারীর প্রতি অবজ্ঞাসূচক কিছু শব্দের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যেগুলোর কোন পুরুষবাচক শব্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের মাঝে নারীরা দরিদ্রতম। অসহায়ের মাঝে তারা অতিশয় অসহায়। তাই তাদের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। জনসংখ্যা দিবসে নারীরা হয় ওঠে মূল প্রতিপাদ্যের অংশ। তবু নারীর সামাজিক মর্যাদা, অবস্থানের উন্নয়নের আশা দুরাশাই রয়ে যায়, আলোর মুখ দেখে না। দেখে না, তার অন্যতম কারণ নারীর চিরন্তন নারীসুলভ মানসকিতা, চিন্তাভাবনা আর মনেপ্রাণে নারী হয়ে ওঠার আজন্ম লালিত বাসনা। নারী নিজেই সকল সীমাবদ্ধতার উর্ধে উঠে নিজেকে শুধু মানুষ ভাবতে পারে না। পুরুষশাসিত সমাজ কী করে নারীকে সেই স্বীকৃতি দেবে? যা কিছু অন্যায়, তা সব সময়, সব অবস্থায় সবার প্রতিই অন্যায়। পয়লা বৈশাখের মতো সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উৎসবে এসে লাঞ্ছিত হওয়া এবং তার প্রতিবাদ করতে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নাজেহাল হওয়া নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোন নাগরিকের প্রতিই সংবিধান লঙ্ঘন, যে কোন মানুষেরই মৌলিক ও মানবিক অধিকারের পরিপন্থী। এহেন অন্যায়ের প্রতিকারের জন্য নারী অধকিার বা নারীর প্রতি সহিংসতার কথা নয়, মানবাধিকারের কথা বলে সর্বজনীন ভাষায় প্রতিবাদ জানানো যায়। বরং সেক্ষেত্রে দাবিটি সর্বস্তরের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন পায়। পুরুষসমাজও নারীর প্রতি পুষে রাখা চিরাচরিত ও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির খোলস থেকে বেরিয়ে এসে নারীকে স্বজাতীয় ভাবার প্রয়াস পায়। নিজেকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে সহযাত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে নারীর প্রতি পুরুষের আচরণও সংশোধিত হবে। মোদ্দা কথা, নারী ও পুরুষ উভয়ের মনোভাব, মূল্যবোধ আর দৃষ্টিভঙ্গির কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনই সমাজের এই বিরাট অসঙ্গতি নিরসনে মহৌষধ হিসেবে কাজ করতে পারে। আর তার উদ্যোগ নিতে হবে নারীকেই। সেটি হলো সমাজে নিজেকে নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। অন্যথায় নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর উন্নয়ন বা নারীর স্বাধীনতার লক্ষ্যে গৃহীত ব্যক্তিগত, সামাজিক এবং জাতীয় পর্যায়ের সব রকম প্রচেষ্টা আর পদক্ষেপ ভেস্তে যাবে। নারী যে তিমিরে আছে, সেই তিমিরেই রয়ে যাবে। নদীর মতো, ঔষধি গাছের মতো। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সভ্যতা যেমন এক সময় নদীতে বিলীন হয়ে যায়, ঔষধির ফলই যেমন গাছের মৃত্যুর কারণ হয়, তেমন নারীর হাত ধরে বেড়ে ওঠা সভ্যতা, নারীর অভ্যন্তরে জন্ম নেয়া পুরুষই হবে নারীর হন্তারক। লেখক : গবেষক, লোকপ্রশাসন বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
×