ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকবে কমনওয়েলথ ॥ কমলেশ শর্মা

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকবে কমনওয়েলথ ॥ কমলেশ শর্মা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নে পাশে থাকবে কমনওয়েলথ। বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয় থাকায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে এক বৈঠকে সফররত কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মা এই প্রশংসা করেন। এদিকে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে আগামীতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সম্মেলনে বাংলাদেশের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি বছর কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে এখন ঢাকায় তিনদিনের সফর করছেন মহাসচিব কমলেশ শর্মা। তিনি কমনওয়েলথ ও সংস্থার বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশ কার্যকর ভূমিকা রাখায় সংস্থাটির মহাসচিব পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশে চলমান কমনওয়েলথের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। কমনওয়েলথ মহাসচিবের বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মতো সফরকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সামনের কমনওয়েলথ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নারী অধিকার, দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। শনিবার রাতে কমনওয়েলথ মহাসচিবের সম্মানে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ॥ বাংলাদেশের পোশাক শিল্প, কৃষি, পানি, পাট, মৎস্যখাতে আরও সহযোগিতা দিতে সম্মত হয়েছে নেদারল্যান্ডস। অপরদিকে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেদেশে স্কলারশিপ বাড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে প্রথমবারের মতো পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের (ফরেন অফিস কনসালটেশন-এফওসি) বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নেদারল্যান্ডের রাজধানী দ্য হেগে’ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক। ডাচ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল রেনে জোনস বস। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠকে সার্বিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনাসহ সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে দুদেশই বন্ধুত্ব সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশের পানি উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। এছাড়া সমুদ্রখাত, পোশাক শিল্প, তথ্য প্রযুক্তি খাতের সহযোগিতা দেবে দেশটি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে সহযোগিতা করবে তারা। রওশন এরশাদের সঙ্গে ক’ওয়েলথ মহাসচিবের সাক্ষাত ॥ বিরোধীদল হিসেবে সংসদে এবং সংসদের বাইরে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার দাবি করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। শনিবার সংসদ ভবনের বিরোধী দলের নেতার কার্যালয়ে কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মার সাক্ষাতে এ দাবি করেন রওশন। সাক্ষাতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বিশ্ব থেকে সন্ত্রাস দূর করতে হলে প্রথমেই আমাদের দারিদ্র্য দূর করতে হবে। দারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে চায়। আর এ বিষয়ে কমনওয়েলথের সহযোগিতা একান্তই কাম্য বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, বিরোধীদল হিসেবে আমরা সংসদে এবং সংসদের বাইরে গঠণমূলক ভূমিকা রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের সুশাসন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সর্বোপরি এদেশে টেকসই উন্নয়নে বিরোধীদল অঙ্গীকারাবদ্ধ। কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেন, সংসদ হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণকেন্দ্র আর সংসদে আপনাদের সঠিক ভূমিকা গণতন্ত্রের ভিত আরও বেশি মজবুত করবে। সংসদীয় গণতন্ত্রকে মজবুত করার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথ সহযোগিতা করে যাবে। এক প্রশ্নের উত্তরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হওয়ার পরেই বাংলাদেশ ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) এ গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছে। যার ফলে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাতে পেরেছে। কমনওয়েলথের মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ দরিদ্র দূরীকরণ, শিশুও মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস, শিক্ষা স্বাস্থ্যসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছে। এসকল ক্ষেত্রে কমনওয়েলথ বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ।
×