ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইএস সমর্থক চরমন্থীদের তৎপরতা

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের ই-মেইল হ্যাকড

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ব্রিটিশ মন্ত্রীদের ই-মেইল হ্যাকড

সিরিয়ার জিহাদপন্থীরা একটি উন্নততর গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রীদের ই-মেইল এ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছে। সরকারী যোগাযোগ সংক্রান্ত সদর দফতর (জিসিএইচকিউ) এটি উদ্ঘাটনও করেছে বলে টেলিগ্রাফ জানায়। ওই গোয়েন্দা সংস্থার এক তদন্তে বের হয়ে পড়ে যে, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংযুক্ত চরমপন্থীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মেসহ ডেভিড ক্যামেরনের সবচেয়ে সিনিয়র কয়েক মন্ত্রীর কাছে থাকা তথ্যকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। জানা গেছে, ওই চক্রান্তের হোতাদের একজন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে এই অভিযানের কথা প্রকাশ করেন। খবর টেলিগ্রাফের। সিনিয়র মন্ত্রীদের ব্যক্তিগত দফতরসমূহের ই-মেইল এ্যাকাউন্ট হ্যাক করে চরমপন্থীরা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানাদির কথা জানতে পেরেছে, সরকারী কর্মকর্তা এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের যাতে যোগদান করার কথা ছিল। টেলিগ্রাফ কয়েক মাস আগেই অভিযানের বিষয় জানতে পেরেছিল, তবে তদন্ত চলাকালে তা প্রকাশ না করার ব্যাপারে সম্মত হয়। সোমবার প্রকাশ হয়ে পড়ে যে, রানীকে হত্যার নির্দেশনা দেয়ার পর সিরিয়ায় যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর হাতে একজন ব্রিটিশ জিহাদপন্থী নিহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাবস্থায় না থাকার সময় এই প্রথম ব্রিটিশ বাহিনী নিজ দেশের একজন ব্রিটিশ নাগরিকের ওপর হামলার নির্দেশ দিল। লিংকনশায়ার থেকে পরিচালিত একটি ড্রোনের দ্বারা কার্ডিফের আইএস জঙ্গী রিয়াজ খান (২১) নিহত হয়। এর তিন দিন পরে মার্কিন বাহিনীর হাতে দ্বিতীয় ব্রিটিশ নাগরিক বার্মিংহামের কম্পিউটার হ্যাকার জুনাইদ হোসেন নিহত হয়। জুনাইদ ২০১৩-তে তার ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত স্ত্রী স্যালি জোন্সের (৪৬) সঙ্গে আইএসে যোগ দেয়। স্যালি সাইবার হামলায় জড়িত বলে ধারণা করা হয়। ওই ব্যক্তি চরমপন্থী গোষ্ঠীর হ্যাকিং তৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছিল বলে জানা যায় এবং সে স্বঘোষিত সাইবার খিলাফত নামে জিহাদীদের একটি কম্পিউটার গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিল বলে ধারণা করা হয়, যারা গত জানুয়ারিতে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পেন্টাগনের মালিকানাধীন টুইটার এ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের ইলেক্ট্রনিক ডায়েরি হ্যাক করে তথ্য সংগ্রহের দায়ে ২০১২-তে তাকে ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছিল। এটি পরিষ্কার নয় যে, চরমপন্থীরা কি তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন তথ্য ফাঁস হয়ে যায়নি বলে জানা যায়। অবশ্য কর্মকর্তাদের পাসওয়ার্ড পরিবর্তনসহ নিরাপত্তা পদ্ধতি কড়াকড়ি করতে বলা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) টুইটার ও ইউটিউব এ্যাকাউন্টগুলো ‘সাইবার খিলাফত’ নামধারী এক গ্রুপের হাতে হ্যাকড হয়। জিহাদীরা ফরাসী টেলিভিশন নেটওয়ার্কেও অনুপ্রবেশ করে এবং টিভির পর্দা এক কালো স্ক্রিন দিয়ে ঢেকে দেয়। আর গ্রুপটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর হামলা চালাতে পারে বলে এফবিআই উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে। কোন কোন গ্রুপ গোয়েন্দা বিভাগের কম্পিউটার হ্যাক করার দিকে দৃষ্টি দিচ্ছে বলে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন। চীনের সঙ্গে সংযুক্ত হ্যাকাররা মার্কিন গোয়েন্দা ও সামরিক কর্মকর্তাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে নেয় বলে মনে হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (আইআইএসএস) বিশেষজ্ঞ নাইজেল ইঙ্কস্টার সতর্ক করে দেন যে, আইএসের মতো জিহাদী গ্রুপগুলো সাইবার হামলা চালানোর সামর্থ্য অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এখন অবধি যুক্তরাজ্য জিহাদীদের সাইবার হামলা থেকে বহুলাংশে দূরেই রয়েছে। কিন্তু গত মাসে আইএস এক হাজারেরও বেশি লোকের বিস্তারিত তথ্য অনলাইনে প্রচার করে। এসব তথ্যের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কোন কোন পরিষদের কর্মীদের নাম, ই-মেইল ঠিকানা ও পাসওয়ার্ডও ছিল।
×