ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কওমীর পাঠ্যবই

মাদ্রাসা ব্যবহার করে বেফাক নেতাদের রাজনীতি করার প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মাদ্রাসা ব্যবহার করে বেফাক নেতাদের রাজনীতি করার প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কওমী মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকের শীর্ষ নেতাদের অনিয়ম দুর্নীতি আর মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে রাজনীতি করার প্রেক্ষাপটে এবার তীব্র প্রতিবাদ উঠেছে দেশের আলেম সমাজের পক্ষ থেকেই। শাস্তির দাবি উঠেছে কওমীর পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির। মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে বেফাক নেতাদের রাজনীতি করার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বেফাক সংস্কারে ছয় দফা দাবি তুলেছেন দেশের কওমী আলেম সমাজ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দফাগুলো উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষক ফেডারেশন। এর আগে গেল রবিবার জনকণ্ঠ পত্রিকায় ‘মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাসে ভরা কওমীর পাঠ্যবই’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় পুরো কওমী মাদ্রাসাজুড়ে। কওমী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রক সেই অসাধু নেতারা প্রশ্নে মুখে পড়েন। এ অবস্থায় কওমী আলেমরা বেফাকের নানা অনিয়ম নিয়ে শক্ত প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। এরই অংশ হিসেবে রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে ফেফাক সংস্থাদের দাবি তোলেন তারা। আলেম সমাজের পক্ষ থেকে তোলা ছয় দফা দাবি হচ্ছে- প্রশ্নপত্র ফাঁসের জালিয়াতিতে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই বহিষ্কার করতে হবে। প্রকাশনা বিভাগে দুর্নীতি ও বই নকলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বহিষ্কার করতে হবে। দলীয় পদবি ধারণকারী ব্যক্তিদের অবিলম্বে বেফাকের সমস্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। বেফাক কমিটিতে মাদ্রাসার মুহতামিম ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ বাতিল করতে হবে। বেফাকের সিলেবাস সংস্কার করা খুবই জরুরী, সে বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কওমী মাদ্রাসার সনদের সরকারী স্বীকৃতি আদাল করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ইসলামী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র পবিত্র কোরান ও হাদিস চর্চার নির্ভেজাল দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কওমী মাদ্রাসাগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেফাক বোর্ড তার গৌরবের ইতিহাস ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বেফাকের প্রকাশনা বিভাগে টাকা আত্মসাত ও দুর্নীতির প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে, দুর্নীতির দায়ে একজন কর্মচারী ইতোমধ্যে বরখাস্তও হয়েছে। এছাড়া আরও অনেক অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে যে বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর। মাওলানা আতহারী দাবি করেন, স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় যে, বেফাকের বিরুদ্ধে ভিতরে-বাহিরে গভীর ষড়যন্ত্রের চাল চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সিদ্ধহস্ত। তাদের চক্রান্ত সুদূর প্রসারিত, ওরা কওমী ওলামা ও তালিবে ইলমদের স্বপ্নের প্রতীক বেফাককে সুকৌশলে ধ্বংস করতে চায়। মøান করে দিতে চায় বেফাকের গৌরব গাঁথা ইতিহাস-ঐতিহ্যের সোনালী অধ্যায়। তিনি বলেন, অবিলম্বে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ও চিহ্নিত অপরাধীচক্রকে বহিষ্কার করতে হবে। একই সঙ্গে এসব অপকর্মে সম্পৃক্ত মাদ্রাসাগুলোকেও বেফাক থেকে বহিষ্কার করা হোক। সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশনা বিভাগের অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে স্বচ্চ ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের লক্ষ্যে শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবি জানানো হয়। এ সময় সংগঠনের মহাসচিব মুফতি কামরুল ইসলাম ভূইয়াসহ অর্ধশতাধিক আলেম-ওলামা উপস্থিত ছিলেন।
×