ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার সহযোগিতা চাই

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

রাশিয়ার সহযোগিতা চাই

সিরীয় সঙ্কটের সমাধানের জন্য জার্মানি ও অন্যান্য পশ্চিম ইউরোপীয় দেশের রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল শনিবার এ কথা বলেন। এদিকে, সিরিয়ায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই আরও ১০ লাখ সিরীয় তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে যাবে। জাতিসংঘের এক উর্ধতন কর্মকর্তা এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। খবর গার্ডিয়ান ও ইয়াহু নিউজের। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্র্যাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমেইয়ার শনিবার সন্ধ্যায় তার রুশ, ফরাসূ ও ইউক্রেনীয় প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। তিনি পরে বলেন যে, সিরীয় সংঘর্ষের সমাধানের জন্য এক আন্তর্জাতিক কন্ট্রাক্ট গ্রুপ গঠনের পক্ষে ক্রমবর্ধমান সমর্থন রয়েছে বলে তিনি দেখতে পান। ওই বৈঠকের ফাঁকে স্টেইনমেইয়ার ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সিরিয়া প্রশ্নে দীর্ঘক্ষণ মতবিনিময় করেন। তারা দু’জনেই সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘ দূত স্তেফান দ্য মিসতুরার এক সিরীয় কন্ট্রাক্ট গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা সমর্থন করতে একমত হন। মিসতুরা রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক এবং সামরিক ও নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর নিরসন করতে জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কিং গ্রুপে অংশ নিতে বিবদমান পক্ষগুলোকে আমন্ত্রণ জানান। রাশিয়া শুক্রবার সিরীয় উপকূলের অদূরে নৌমহড়া অনুষ্ঠানের সময় ‘অনভিপ্রেত ঘটনাগুলো’ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানায়। আর মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, মস্কো এর দীর্ঘকালীন মিত্র প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে রক্ষা করতে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে শনিবার বলা হয়, ৮০ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুটি রুশ বিমান সিরিয়া পৌঁছেছে। রাশিয়া শুক্রবার জানায় যে, সে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরীয় সরকারকে সহায়তা করতে সামরিক সাজসরঞ্জাম পাঠাচ্ছে। জার্মানির আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোর সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে স্টেইনমেইয়ার সিরিয়ায় একতরফা পদক্ষেপ নেয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সতর্ক করে দেন। নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা অতিথির কলামে স্টেইনমেইয়ার বলেন, ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে পরমাণু চুক্তি সইয়ের ফলে সিরিয়ার সঙ্কট নিরসনের এক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু এক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জনের সুযোগ ক্ষীণ হয়ে পড়ছে বলে তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, কোন সামরিক সমাধান সম্ভব বলে মনে করে যাওয়া বোকামির পরিচায়ক হবে। এখন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আলোচনায় বসানোর উপায় খুঁজে বের করার সময়। এতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তিকে সৌদি আরব, তুরস্ক ও ইরানের মত নিয়ে প্রস্তুতিমূলক আলোচনাও অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শুক্রবার বলেন যে, রাশিয়া সিরিয়াতে সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করায় মনে হয় আসাদ উদ্বিগ্ন এবং রুশ উপদেষ্টাদের সহায়তা নিচ্ছে। আসাদের প্রতি রাশিয়ার সামরিক সমর্থন গৃহযুদ্ধের কোন রাজনৈতিক সমাধানের কথা বিবেচনার করার আগ্রহ নষ্ট করে দিতে পারে বলে ইইউ কূটনীতিকরা উদ্বিগ্ন। সিরিয়ায় ত্রাণ তৎপরতা বিষয়ক সমন্বয়ক ইয়াকুব আল হিল্লো বলেন, ওই সংঘাত নিরসনের জন্য জরুরী পদক্ষেপ না নেয়া হলে শরণার্থীরা ওই অঞ্চল থেকে ছড়িয়ে পড়তে থাকবে। তিনি জানান যে, ২০১৫ সালেই এর মধ্যে দশ লাখেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সিরীয়রা যাতে তাদের নিজ দেশে এ শীতকাল টিকে থাকতে পারে, সে জন্য তিনি তাদের আরও আন্তর্জাতিক সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যদি রাজনৈতিক উপায়ে এ সংঘর্ষের মীমাংসা করতে বড় ধরনের পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তা হলে সিরিয়া ও এর প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে শরণার্থী বহির্গমন আরও কয়েক মাস ধরে চলবে। তিনি বলেন, অধিকাংশ শরণার্থীর আশ্রয়স্থল প্রতিবেশী দেশগুলো এখন সঙ্কটে। সে জন্য ইউরোপকে এমন শরণার্থী পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে, যার কারণে ১৯৫০ সালে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা গঠন করতে হয়েছিল।
×