ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পেলেন ইতালিয়ান তারকা

ইউএস ওপেনের নতুন রানী পেনেত্তা

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

ইউএস ওপেনের নতুন রানী পেনেত্তা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইউএস ওপেনের শুরু থেকেই নানা ধরনের চমক আর অঘটন দেখেছিল টেনিস বিশ্ব। কিন্তু বড় চমকটা দেখা যায় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে। মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্টের শেষ চারে ফেবারিট সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো মেজর কোন আসরের ফাইনালে ওঠার রেকর্ড গড়েন রবার্টা ভিঞ্চি। তবে সেরেনা-বধের পর বেশিদূর এগোতে পারলেন না ৩২ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান টেনিস তারকা। ফাইনালেই হেরে গেলেন তিনি। আর তাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউএস ওপেনের শিরোপা জিতলেন তারই স্বদেশী ফ্লাভিয়া পেনেত্তা। শনিবার বছরের শেষ গ্র্যান্ডসøামের ফাইনালে ফ্লাভিয়া পেনেত্তা ৭-৬ এবং ৬-২ গেমে হারান রবার্টা ভিঞ্চিকে। সেই সঙ্গে নতুন এক মাইলফলকও স্পর্শ করেন ৩৩ বছর বয়সী পেনেত্তা। টেনিসের আধুনিক যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম গ্র্যান্ডসøাম জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। পেনেত্তার আগে ইতালির হয়ে গ্র্যান্ডসøাম জিতেছিলেন ফ্রান্সেসকা শিয়াভোনি। ২০১০ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জিতেছিলেন তিনি। এরপর পেনেত্তাই টেনিসের মেজর শিরোপা উপহার দিলেন ইতালিকে। অসাধারণ এই কীর্তির পর রোমাঞ্চিত পেনেত্তা। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যিই খুব খুশি। আসলে আমি কখনই ভাবতে পারিনি যে এতদূর যাব। কখনই ভাবিনি ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হব। এটা আমার ফেবারিট টুর্নামেন্ট। এখানে খেলতে সবসময়ই পছন্দ আমার।’ এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগেও এই ফ্লাশিং মিডোতেই সবচেয়ে ভাল ফল ছিল তার। যে কারণে এটাই পেনেত্তার প্রিয় টুর্নামেন্ট। সবচেয়ে ভালভাবে ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের রেকর্ডও তাঁর এখানে। টেনিসের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট গ্র্যান্ডসøাম। আর ক্যারিয়ারের শেষ মুহূর্তে সর্বোচ্চ এই অর্জনটাই নিজের করে নিতে সক্ষম হলেন তিনি। এ যেন স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হলো তাঁর। তাও আবার বান্ধবীর বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয়। ম্যাচ শেষে অভিভূত এই ইতালিয়ান তারকা বলেন, ‘একটা স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হওয়ার মতোই। তাছাড়া নিজের বান্ধবীর বিপক্ষে জেতাটাও অন্যরকম আনন্দের। আর আমার বয়স যখন ৯ তখন থেকেই একে অন্যকে চিনি আমরা। আমরা একত্রে অনেক সময় কাটিয়েছি।’ এদিকে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন রবার্টা ভিঞ্চি। র‌্যাঙ্কিংয়ের ৪৩ নম্বরে থাকা এই তারকা সেরেনাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন। কিন্তু সেমির পারফর্মেন্স আর ফাইনালের মঞ্চে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। তবে পেনেত্তার বিপক্ষে ম্যাচটা খুবই কঠিন ছিল বলে জানিয়েছেন ভিঞ্চি। তাঁর মতে, ‘এটা খুবই কঠিন ছিল। ম্যাচের আগের ২৪ ঘণ্টা আমার মনের মধ্যে অনেক কিছুই কাজ করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হলো না। তবে এই টুর্নামেন্টকে অলৌকিক বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি। এ বিষয়ে ভিঞ্চির অভিমত, ‘অলৌকিক ব্যাপারগুলো কখনও কখনও ঘটে। কেননা অলৌকিকভাবেই সেরেনাকে হারিয়েছি আমি। তারপর দুজন ইতালিয়ান খেলোয়াড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল এটাও একটা অলৌকিক ব্যাপার। আর একজন ইতালিয়ান গ্র্যান্ডসøাম জিতল তাও আরেকটি অলৌকিক ব্যাপারের মধ্যে পড়ে।’ গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পেনেত্তা-ভিঞ্চিরা টেনিস কোর্টে লড়াই করে যাচ্ছেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই পাদপ্রদীপের বাইরে অবস্থান করেছেন তাঁরা। বার বারই ব্যর্থ হয়েছেন নিজেদের মেলে ধরতে। অবশেষে ক্যারিয়ারের গোধূলিবেলায় আলো ছড়ালেন টেনিসের এই দুই তারকা। তবে ইতালির হয়ে শুধু যে তারাই প্রতিনিধিত্ব করছেন তা নয়। বর্তমান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা চল্লিশের মধ্যে ছয়জনই রয়েছেন ইতালিয়ান। যা খুবই গৌরবের বিষয়। এ বিষয়ে ফাইনাল জয়ের আগেই পেনেত্তা বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি দেশের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়। গত দশ বছরে ইতালিকে আমরা অনেক ভাল সাফল্য উপহার দিয়েছি। এমন ভাল ভাল খেলোয়াড় থাকাটা ইতালিয়ান টেনিসের জন্য ভাল।’ রবার্টা ভিঞ্চিও একই সুর মিলিয়েছেন, ‘ইতালিতে এখন অনেক ভাল ভাল খেলোয়াড় রয়েছে। আমি গর্বিত। সত্যিই অনেক আনন্দিত। প্রকৃতপক্ষে আপনি যখন কঠোর পরিশ্রম করবেন তার ফল কোন না কোন সময় পাবেনই।’
×