ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারত ‘এ’ দল ৯৬ রানে জয়ী, ইনজুরিতে তাসকিন আউট, ইন রাব্বি

বড় হার দিয়েই শুরু মুমিনুলদের

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বড় হার দিয়েই শুরু মুমিনুলদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারত সফরে গিয়েই বড় হারের সম্মুখীন হয়েছে মুমিনুল হকের বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সিরিজ শুরু হয়েছে বুধবার। তিন ম্যাচের আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৯৬ রানের বড় হার হয়েছে। সঙ্গে দুর্ভাগ্যও যেন ‘এ’ দলকে তাড়া করেছে। পেসার তাসকিন আহমেদ সাইড স্ট্রেইনের ইনজুরিতে পড়ে গেছেন। আজ দেশেও ফিরে আসছেন এ পেসার। তার বদলি হিসেবে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিকে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়বেন ৩৮টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে ৯০ উইকেট ও ২৮টি লিস্ট-এ ম্যাচ খেলে ৪২ উইকেট নেয়া বরিশালের রাব্বি। ভয় ছিল একজনকে নিয়েই। তিনি সুরেশ রায়না। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটসম্যান। কিন্তু রায়না কিছুই করতে পারলেন না। ব্যাট হাতে মাত্র ১৬ রান করলেন। এরপরও ভারত ‘এ’ দল আকাশচুম্বি রানই করল। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২২ রান করল। ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের (৫৬) পর সঞ্জু স্যামসন (৭৩), গুরকিরাত সিং (৬৫) ও ঋষি ধাওয়ানই (৫৬*) বড় স্কোরের দিকে দলকে নিয়ে গেলেন। শফিউল ইসলাম ও নাসির হোসেন ২টি করে উইকেট নিলেন। এ বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে ছন্নছাড়া হয়ে পরল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ব্যাটিং। লিটন কুমার দাস (৭৫) ও নাসির হোসেন (৫২) ছাড়া আর কেউই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারলেন না। ৪২.৩ ওভারে ২২৬ রান করতেই গুটিয়ে গেল মুমিনুল হকের দল। ডানহাতি স্পিনার গুরকিরাত সিং একাই ৫ উইকেট নিয়ে নিলেন। শুরুতে ঝলক দেখিয়েছিলেন বাংলাদেশ বোলাররাই। ৭৬ রানেই ৪ উইকেট তুলে নেয়া যায়। কিন্তু এরপর থেকেই ভারত ‘এ’ দল ঘুরে দাঁড়ায়। জুটি বড় হতেই থাকে। পঞ্চম উইকেটে গিয়ে যেখানে আগারওয়াল-স্যামসন মিলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন, সেখানে ষষ্ঠ উইকেটে স্যামসন-গুরকিরাত ১০২ রানের বড় জুটি গড়ে ফেলেন। সপ্তম উইকেটে গিয়ে স্যামসন-ধাওয়ান মিলেও ৭৮ রানের জুটি গড়েন। এ তিন জুটিতেই বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের আশাও যেন শেষ হয়ে যায়। ৮ বোলার বল করেও কোনভাবেই রোখা যায়নি। এরমধ্যে আবার তাসকিন চলে যান মাঠের বাইরে। শুরুতে ৫ ওভার বল করে তাসকিন অনেক রান দিয়ে দেন। ৪৬ রান দেন। সঙ্গে ১ উইকেটও নেন। কিন্তু বামপাশের সাইড স্ট্রেইনের ব্যথা বেশি হওয়ায় আর ফিল্ডিংয়ে থাকতে পারেননি। পরে ব্যাট হাতে নামেন। কিন্তু কোন রান করার আগেই আউট হয়ে যান। এ ইনজুরির জন্য এর আগে ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোন ম্যাচ খেলতে পারেননি তাসকিন। অনেক চেষ্টা করে ইনজুরি থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আবারও ইনজুরিতে পড়ে গেলেন। আজ দেশে ফেরার পর বিসিবির মেডিক্যাল দল তাসকিনের ইনজুরির অবস্থা দেখবে। তার পরিবর্তে যাচ্ছে রাব্বি। তবে দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল ওয়ানডে শুক্রবার হওয়ায় রাব্বি তাতে অংশ নিতে পারবেন না। তাসকিনের এমন যখন অবস্থা, তখন দলের অবস্থাও খুব ভাল নয়। ষষ্ঠ উইকেট লিটন ও নাসির মিলে দলের হাল না ধরলে আরও করুণ হার হতো! ৮৭ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সৌম্য সরকার (৯), এনামুল হক বিজয় (০), রনি তালুকদার (১৩), মুমিনুল হক (১৯) ও সাব্বির রহমান রুম্মন (২৫) হতাশ করেছেন। দলের প্রথম ৫ ব্যাটসম্যান যদি এমন দুর্দশাগ্রস্ত ব্যাটিং করেন, তাহলে কী জয় সম্ভব হয়? তা হলো না। তবে লিটন ও নাসির মিলে ঠিকই দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন। দুইজন মিলে ১২০ রানের জুটি গড়লেন। নাসির ৫২ রান করার পর আউট হলেন। আর লিটন করলেন ৭৫ রান। নাসির ২০৭ রানে আউটের পর যেই ২১৯ রানে লিটন আউট হলেন তাসের ঘরের মতো মুহূর্তেই বাকি ৩ উইকেটের পতনও ঘটে গেল। সেই সঙ্গে ম্যাচ হারও হলো বড়। অনেক আশা ছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক মুমিনুল হকের। ভারত সফরে যাওয়ার আগে বলেছিলেন, ‘আমরা সবাই চাচ্ছি সব ম্যাচ জিততে। কোচও চাচ্ছে, আমিও চাচ্ছি, সবাই চাচ্ছি। এর আগে আমরা জাতীয় দল চার সিরিজ জিতেছি। এখনও আমাদের সেই প্রত্যাশা আছে। আমরা ওখানেও সিরিজ জিতব ও ভাল ক্রিকেট খেলব। ওরাও (ভারত ‘এ’ দল) জানে আমরা (বাংলাদেশ ‘এ’) ভাল দল। বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন ভাল ক্রিকেট খেলছে। সবাই খুব ভাল পজিশনে আছে। এখানে আমরা দশ টেস্ট খেলোয়াড় আছি। আমরাও ভাল ক্রিকেট খেলব।’ সেই খেলা প্রথম ম্যাচে আর হলো কোথায়। শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামার আগে বড় হার দিয়েই সিরিজ শুরু করতে হলো।
×