ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আজ মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আজ মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ শুক্রবার। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দেশের সব পাবলিক এবং প্রাইভেট মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার এই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে সারা দেশের ২২টি কেন্দ্রে। পরীক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেই মেডিক্যাল কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কুচক্রী মহলের মিথ্যা প্রলোভনের বিষয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে অনেক আগেই বিশেষ বার্তা দিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রথমে মেধা তালিকার ভিত্তিতে সরকারী কলেজসমূহের নির্ধারিত আসন পূরণ করা হবে। যারা সরকারী কলেজে সুযোগ পাবেন না, তারা মেধা তালিকার ভিত্তিতে পরবর্তীতে বেসরকারী কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবেন। সরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ ভর্তির জন্য প্রতি আসনের বিপরীতে ২৩ জন শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবার রেকর্ডসংখ্যক মোট ৮৪ হাজার ৭৮৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। ভর্তি পরীক্ষার ন্যূনতম পাস নম্বর ৪০ বহাল রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে নতুন অনুমোদনপ্রাপ্ত মুগদা মেডিক্যাল কলেজের ৫০টি আসনসহ মোট ২৪টি সরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪৪টি। আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে সরকারী ও বেসরকারী উভয় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নবিদ্যায় ২৫, জীববিদ্যা ৩০, ইংরেজীতে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, প্রায় ৯৫ হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করলেও শেষ পর্যন্ত সবাই টাকা জমা দেননি। তবে স্বাধীনতার পর কোন বছর মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় এত বিপুলসংখ্যক আবেদনপত্র জমা পড়েনি বলে জানায় অধিদফতরের কর্মকর্তারা। মোট ৮৪ হাজার ৭৮৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭টি সরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেকেটিতে ৬ হাজার করে আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো হলো- ঢাকা, স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী মেডিক্যাল ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজ মিরপুর। এছাড়া অন্যান্য সরকারী মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে সিলেটে ৫ হাজার ২০৭, বরিশালে ৩ হাজার ৫৪, রংপুরে ৫ হাজার ৬৬৮, কুমিল্লায় ৫ হাজার, খুলনায় ৩ হাজার ৬৩২, বগুড়ায় ৪ হাজার ১৫৯, ফরিদপুরে ১ হাজার ৫৪৩, দিনাজপুরে ১ হাজার ৫০৫, পাবনায় ১ হাজার ৯৭৪, নোয়াখালীতে ২ হাজার ৭৮৩, কক্সবাজারে ১ হাজার ৭৩০, যশোরে ১ হাজার ৯৪৫, সাতক্ষীরায় ২৮১, কিশোরগঞ্জে ২ হাজার ৬৯৯, কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ২৪৭ ও গোপালগঞ্জে ৩৫৫টি আবেদন জমা পড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আবদুল হান্নান জানান, চলতি বছরের সরকারী-বেসরকারী মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। দেশে বর্তমানে ৬৪টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে ৫৩২৫টি আসন এবং ২৪টি বেসরকারী ডেন্টাল কলেজে ১২৮০টি আসন রয়েছে। এবার অনেক আগেই মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরীক্ষায় নির্বাচিত করার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়ে সতর্কবার্তায় বলা হয়, জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করে অতি মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করে অবৈধ রমরমা ভর্তি বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে কিছু প্রতারক চক্র। অথচ টাকা প্রদানকারী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা নিজ যোগ্যতায় নির্বাচিত হবেন। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা এমন তথ্যই দিয়েছে। কারণ, মেডিক্যাল পরীক্ষায় টাকা দিয়ে নির্বাচিত এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার বিন্দুমাত্র কোন সুযোগ নেই। আর মেধাতালিকা প্রকাশের পরও জালিয়াতি করার সুযোগ থাকে না। নির্বাচিতদের মেধা তালিকা অন লাইনে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। যোগ্যপ্রার্থীর মেধা ডিঙিয়ে কম মেধার প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এমন চেষ্টা করা হলে মেধা তালিকার সিরিয়াল দেখলেই তা ধরা পড়বে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমন আশঙ্কার মধ্যে গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীতে কোটি টাকার চেকসহ মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসচক্রের সন্দেহভাজন চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।
×