ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক শ্রেণীর বাংলাদেশী চ্যারিটির নামে এ কাজ করছে

বাংলাদেশের জঙ্গীদের জন্য ব্রিটেন থেকে সংগ্রহ হচ্ছে অর্থ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশের জঙ্গীদের জন্য ব্রিটেন থেকে সংগ্রহ হচ্ছে অর্থ

শংকর কুমার দে ॥ ব্রিটেনের পূর্ব লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের একটি অংশ চ্যারিটি এবং এনজিওর নামে অর্থ সংগ্রহ করে তা বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতায় ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের জঙ্গী তৎপরতায় অর্থ সংগ্রহের জন্য কাজ করছে যুদ্ধাপরাধের মামলায় দ-প্রাপ্ত এবং ব্রিটেনে আশ্রয়প্রাপ্ত চৌধুরী মইনুদ্দিন। ব্রিটেনে আশ্রয় নেয়া যুদ্ধাপরাধীর দ-প্রাপ্ত চৌধুরী মইনুদ্দিনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ব্রিটেনে জঙ্গীবাদ দমনে ব্রিটিশ সরকারকে আরও বেশি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটেনের গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা বলেছেন, পূর্ব লন্ডনে জামায়াতের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। তারা টাকা সংগ্রহ করছে, তারা টাকা পাঠাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ানে বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদীদের তৎপরতার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গোয়েন্দা সূত্র বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতা ও উগ্র মৌলবাদের উত্থানের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের জঙ্গীরা। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত অন্তত ৩০ জন ব্রিটিশ নাগরিক জঙ্গী সংগঠন আইএসে যোগ দিয়েছে। ব্রিটেনের বাঙালি কমিউনিটিগুলো থেকে উগ্রবাদে অর্থায়নকারী ও লোক সংগ্রহকারীরা স্থানীয়দের আন্তর্জাতিক জিহাদে অংশ নিতে উৎসাহ যোগাচ্ছে এবং সালাফি গোষ্ঠীগুলোতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগের মাধ্যমে ব্রিটেনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জঙ্গীদের তৎপরতা বন্ধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানান, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গীদের ব্রিটেনে নেয়ার জন্য মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশে যাতায়াত করছে বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জঙ্গীরা। ২০০৬ সালের পর থেকে ব্রিটেনের গোয়েন্দারা বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জিহাদিকে এখান থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও আছে। বাংলাদেশের জঙ্গী ও উগ্র মৌলবাদী তৎপরতা বিস্তারে প্রভাব বিস্তার করতে সহায়তা করছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের জঙ্গীরা। আইএসে যোগ দিতে তারা গিয়েছে সিরিয়ায়। ব্রিটেনে এ ধরনের জঙ্গী তৎপরতায় মদত দিচ্ছে বাংলাদেশের জামায়াত। সর্বশেষ গত মাসে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ড্রোন হামলায় নিহত আইএস সদস্য রুহুল আমিন ও রেয়াদ খান বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের জঙ্গী বলে জানা গেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানান, জামায়াতের আরেক নেতা যুদ্ধাপরাধীর দ-প্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন সাঈদীও আটক হওয়ার আগে ব্রিটেনে গিয়ে ওয়াজ মাহফিলের নামে বিপুল পরিমাণ পাউন্ড তুলে নিয়ে আসতেন বাংলাদেশে। শুধু তাই নয়, ব্রিটেনে গিয়ে ওয়াজ মাহফিলের নামে উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধতার প্রচারের মাধ্যমে জঙ্গী তৎপরতায় উস্কানি দিতেন। এখন আবার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের জঙ্গীদের তৎপরতা ও অর্থ সহায়তার জন্য কাজ করেছেন ব্রিটেনে আশ্রয়গ্রহণকারী আরেক যুদ্ধপরাধীর দন্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মইনুদ্দিন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের জঙ্গীদের মাধ্যমে চৌধুরী মইনুদ্দিন বাংলাদেশে জঙ্গী তৎপরতার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
×